সোনিয়া–রাহুলেই আস্থা কংগ্রেসের
নয়াদিল্লিতে গতকাল কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও সহসভাপতি ছেলে রাহুল গান্ধী৷ নির্বাচনে ভরাডুবির পর দলের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে ওই বৈঠক হয়। |
কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও সহসভাপতি রাহুল গান্ধী নির্বাচনী বিপর্যয়ের দায় মাথায় নিয়ে গতকাল সোমবার ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন এবং ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা সমস্বরে তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁদের নেতৃত্বের প্রতিই আস্থা রাখলেন। দলের ১২৯ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফল করার পর বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে ডাকা কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের নির্যাস মূলত এটাই। বৈঠকে কংগ্রেসের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার সোনিয়া গান্ধীর ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে দলের নেতা অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অস্কার ফার্নান্দেজ বলেন, ‘পিছু হটার কোনো প্রশ্ন নেই। আমারা ঘুরে দাঁড়াব। আমরা লড়াই করে ফিরে আসব।’ পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা অমরিন্দর সিং বলেন, সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী দল থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব করেছেন৷ তবে সেই প্রস্তাব কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি প্রত্যাখান করেছে৷ তিনি বলেন, ‘তাঁরাই আমাদের শ্রেষ্ঠ নেতৃত্ব৷’ আলোচনা ছিল, বিপর্যয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও সহসভাপতি রাহুল গান্ধী ইস্তফা দিতে পারেন৷ অতীতেও সংকটে এমন ঘটেছে এবং সমস্বরে তা নাকচ হয়েছে। বিপর্যয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি হয়েছে।
যেমন গঠিত হয়েছিল এ কে অ্যান্টনি কমিটি। বিকেল চারটায় বৈঠক বসার সময় এই তিন সম্ভাবনার কোনটি হতে পারে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা ছিল। এর কারণও ছিল। প্রবীণ কংগ্রেসনেতা কমলনাথ বৈঠকের আগে ওয়ার্কিং কমিটির মনোনীত সদস্যদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। মনোনয়নের মাধ্যমে দাক্ষিণ্য বিতরণে লাভ হবে না। কিন্তু বাস্তবে বৈঠকে আদৌ তাপ-উত্তাপ ছড়াল না। দলের সদর দপ্তরে বৈঠকের শুরুতেই সোনিয়া গান্ধী ভোট বিপর্যয়ের দায় নিয়ে বলেন, এ জন্য তিনি ইস্তফা দিতে প্রস্তুত। সোনিয়ার পাশে বসা রাহুলও ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বলেন, বিপর্যয়ের দায় কারও একার নয়। সরকারের প্রধান হিসেবে তিনিও দায়ী। এর দায় সবারই। ছত্তিশগড়ের অজিত যোগী, সাবেক অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম, গোলাম নবী আজাদ, অস্কার ফার্নান্দেজ, বেণীপ্রসাদ ভার্মা—প্রায় সবাই একযোগে ইস্তফার বিরোধিতা করেন। ঠিক হয়, রাজ্যের নেতৃত্বকে গুরুত্ব দিয়ে তুলে আনা হবে, যাতে রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস তার পুরোনো গরিমা ফিরে পায়। হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে নির্বাচনের বেশি দেরি নেই। কী করে সম্মানজনক লড়াই করা যায়, তা নিয়ে কথা হয়। লোকসভায় বিরোধী নেতার মর্যাদা পাওয়ার বিষয়টি স্পিকারের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। শোনা যাচ্ছে, সোনিয়া বিরোধী নেতা হতে রাজি নন। তিনি চান প্রবীণ নেতা কমলনাথকে দায়িত্ব দিতে।
No comments