ভারতীয় হিন্দি ফিল্ম আমদানির পাঁয়তারাঃ এই ফন্দি রুখতে হবে
প্রথমে ডিম, পরে আলু, সর্বশেষ হিন্দি ফিল্ম। বাংলাদেশে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানি এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে প্রদর্শনের জন্য একটি মহল উঠে-পড়ে লেগেছে। গতকাল আমার দেশ-এর শেষ পাতায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেট্রোপলিটন এক্সিবিটর্স অ্যাসোসিয়েশন (ঢাকার সিনেমা হল মালিকদের সংগঠন) ভারতীয় হিন্দি ছবি এনে পরীক্ষামূলকভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সেগুলো প্রদর্শনের অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে।
ওই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সফর আলী ভূঁইয়া বলেছেন, কোরবানির ঈদের আগেই এমন একটি আবেদন তারা জমা দিয়েছেন। সিনেমা হলগুলো টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সমিতিগতভাবে এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর হলো, এ আবেদনের ব্যাপারে যাতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, সে জন্য জোর তদবির চালানো হচ্ছে। খবরটা জানাজানি হওয়ায় চলচ্চিত্র অঙ্গনে দেখা দিয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা, চাষী নজরুল ইসলাম ও আমজাদ হোসেনের মতো চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব এই তত্পরতার তীব্র নিন্দা করেছেন। তারা আমার দেশকে দেয়া পৃথক পৃথক প্রতিক্রিয়ায় অভিন্ন কণ্ঠে বলেছেন, এটা ঢাকার চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংসের হীন চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। ভারতীয় হিন্দি ফিল্ম এসে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো ভরে ফেললে বহু শিল্পী, কলাকুশলী এবং এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও বিপুলসংখ্যক মানুষ একেবারে পথে বসবে। পক্ষান্তরে মেট্রোপলিটন এক্সিবিটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও অভিসার সিনেমা হলের অন্যতম স্বত্বাধিকারী সফর আলী ভূঁইয়ার বক্তব্য হচ্ছে, সমিতির সভাপতি হিসেবে তিনিই পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানি ও প্রদর্শনের অনুমতি চেয়ে সমিতির প্যাডে আবেদন করেছেন। তার মতে, বাংলাদেশের সিনেমা এখন ভালো হচ্ছে না। দর্শকরা সিনেমা হলমুখী হচ্ছেন না। যে কারণে সিনেমা হলগুলো টিকিয়ে রাখার জন্য এ আবেদন করা হয়েছে।
এ দেশে এক সময় ভারতীয় ছবি আসত এবং প্রদর্শিত হতো। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় থেকে ভারতীয় ছবির আমদানি ও প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তা আর চালু হয়নি। আজ এত দিন পর ঢাকার সিনেমা হল মালিকদের সংগঠন হঠাত্ করে ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানি এবং প্রদর্শনের জন্য এমন উতলা হয়ে উঠল কেন, আমরা বুঝতে পারছি না। নানা চড়াই-উত্রাই পার হয়ে ঢাকার চলচ্চিত্র শিল্প আজ একটা অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রচণ্ড ধাক্কায় সেই অবস্থানের ভিত নাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টাকে আমরা অপচেষ্টা বলতে বাধ্য। নানা কারণে বিপুলসংখ্যক দর্শক এখন আর সিনেমা হলে যান না, এ কথা সত্য। খোদ রাজধানী ঢাকায় যে কয়েকটা সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে এ কথাও সত্য। কিন্তু তার জন্য কি ঢাকার নির্মিত ‘খারাপ’ ছবিই দায়ী? কলকাতার মেট্রো, ম্যাজিস্টিক, নিউ অ্যাম্পেয়ার, জ্যোতি ইত্যাদি বনেদি সিনেমা হলও বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে কিন্তু কেউ বলছে না বাকি সিনেমা হলগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিদেশ থেকে ‘ভালো’ সিনেমা আমদানি করতে হবে।
আসলে কোনো সিনেমা হল মালিক যখন মনে করেন, হলটি বন্ধ করে দিয়ে অন্য কাজে লাগালে তার মুনাফা বেশি হবে, তখন তিনি হলটি বন্ধ করে দেন। এর সঙ্গে ভালো সিনেমা, মন্দ সিনেমার কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ভারত থেকে হিন্দি সিনেমা আমদানির যুক্তি ধোপে টেকে না। আমরা দেখছি, বিভিন্ন ভারতীয় টিভি চ্যানেল নানাভাবে এ দেশের মানুষকে প্রভাবিত করে চলেছে। অপর দিকে বাংলাদেশী কালচারের প্রভাব যাতে ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলোর ওপর না পড়ে, সে জন্য সেখানে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলের প্রবেশ নিষেধ। না, ভারত সরকার এ ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। সে দেশের ক্যাবল অপারেটররাই একাট্টা হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঢাকার সিনেমা হল মালিকরা কি এর থেকে শিক্ষা নেয়ার মতো কোনো কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না?
এ দেশে এক সময় ভারতীয় ছবি আসত এবং প্রদর্শিত হতো। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় থেকে ভারতীয় ছবির আমদানি ও প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তা আর চালু হয়নি। আজ এত দিন পর ঢাকার সিনেমা হল মালিকদের সংগঠন হঠাত্ করে ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানি এবং প্রদর্শনের জন্য এমন উতলা হয়ে উঠল কেন, আমরা বুঝতে পারছি না। নানা চড়াই-উত্রাই পার হয়ে ঢাকার চলচ্চিত্র শিল্প আজ একটা অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রচণ্ড ধাক্কায় সেই অবস্থানের ভিত নাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টাকে আমরা অপচেষ্টা বলতে বাধ্য। নানা কারণে বিপুলসংখ্যক দর্শক এখন আর সিনেমা হলে যান না, এ কথা সত্য। খোদ রাজধানী ঢাকায় যে কয়েকটা সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে এ কথাও সত্য। কিন্তু তার জন্য কি ঢাকার নির্মিত ‘খারাপ’ ছবিই দায়ী? কলকাতার মেট্রো, ম্যাজিস্টিক, নিউ অ্যাম্পেয়ার, জ্যোতি ইত্যাদি বনেদি সিনেমা হলও বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে কিন্তু কেউ বলছে না বাকি সিনেমা হলগুলোকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিদেশ থেকে ‘ভালো’ সিনেমা আমদানি করতে হবে।
আসলে কোনো সিনেমা হল মালিক যখন মনে করেন, হলটি বন্ধ করে দিয়ে অন্য কাজে লাগালে তার মুনাফা বেশি হবে, তখন তিনি হলটি বন্ধ করে দেন। এর সঙ্গে ভালো সিনেমা, মন্দ সিনেমার কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ভারত থেকে হিন্দি সিনেমা আমদানির যুক্তি ধোপে টেকে না। আমরা দেখছি, বিভিন্ন ভারতীয় টিভি চ্যানেল নানাভাবে এ দেশের মানুষকে প্রভাবিত করে চলেছে। অপর দিকে বাংলাদেশী কালচারের প্রভাব যাতে ভারতের সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যগুলোর ওপর না পড়ে, সে জন্য সেখানে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলের প্রবেশ নিষেধ। না, ভারত সরকার এ ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। সে দেশের ক্যাবল অপারেটররাই একাট্টা হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঢাকার সিনেমা হল মালিকরা কি এর থেকে শিক্ষা নেয়ার মতো কোনো কিছুই খুঁজে পাচ্ছেন না?
No comments