বেহাল গ্রামীণ সড়ক-পরিকল্পনা নেই বরাদ্দও নেই
গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা সরকার, জনপ্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা সবাই জানেন। বারবার প্রতিশ্রুতিও মেলে এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণের। কিন্তু গ্রামীণ রাস্তার সংস্কার অবহেলিত গ্রামীণ জনপদের ন্যায় অবহেলার শিকার হয়ে থেকে যায়।
এতে গ্রামের মানুষের চলাচলের অসুবিধাসহ পণ্য হাটবাজার ও শহর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পথে বিড়ম্বনা দেখা দেয়। শনিবার সমকালে 'সংস্কার হয় না গ্রামীণ সড়ক' শিরোনামে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, গ্রামের ৫০ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তিন বছর ধরে সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কে কিছুটা সংস্কার চোখে পড়লেও গ্রামের রাস্তাগুলো সংস্কার দূরে থাক, ভেঙে যাওয়া রাস্তা মেরামত. এখানে-সেখানে খাদ ভর্তি করা ইত্যাদি অতিপ্রয়োজনীয় কাজও হয় না অনেক দিন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের জবাব একটাই, অর্থ বরাদ্দ নেই। তবে নতুন রাস্তার জন্য কিছুটা বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণের দোহাই দিয়ে এসব নতুন রাস্তা তৈরি ও কাঁচা রাস্তা পাকা করার কিছুটা ব্যবস্থা করতে পারেন। কিন্তু যেসব রাস্তা ইতিমধ্যেই আধাপাকা বা পাকা করা হয়েছে সেসব রাস্তায় হাত লাগানোরও প্রয়োজন বোধ করেন না কেউই। সংসদ সদস্যদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের ছিটেফোঁটাও এসব রাস্তার ভাগ্যে জোটে না বলে রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে। অর্থমন্ত্রী গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে চিঠি পাঠালেও বিষয়টি যেহেতু সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি তাই এ ব্যাপারে কারও মাথাব্যথা লক্ষ্য করা যায়নি। অবশ্য দেশের প্রধান সড়কগুলোরই যখন বেহাল দশা তখন গ্রামীণ সড়কের কথা চিন্তা করার ফুসরত কোথায়! তবে সরকারের উচিত গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা ঘোচানোর জন্য অনতিবিলম্বে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সংস্কারের কাজ বছরের পর বছর ফেলে রাখলে রাস্তাগুলো পণ্য এবং যাত্রীবাহী যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। এতে ক্ষতি হবে দেশেরই। ক্ষমতাসীন দল ও জোটের নেতাকর্মীরাও এ ব্যাপারে নির্বাচনের সময় জনগণের জিজ্ঞাসার জবাব দিতে গিয়ে হয়রান হবেন। আমরা গ্রামের পুরনো রাস্তাগুলো সংস্কারে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ এবং এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট অঙ্কের ব্যয় বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
No comments