মুক্ত অর্থনীতির হুমকি সন্ত্রাসবাদ
সন্ত্রাসবাদকে মুক্ত অর্থনীতি ও সমৃদ্ধির জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন বিশ্বনেতারা। ফিলিপিন্সের রাজধানী ম্যানিলায় ২১ দেশের অ্যাপেক সম্মেলনের শেষদিনে বিশ্বনেতারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে লড়াইয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। দুই দিনব্যাপী সম্মেলন বৃহস্পতিবার শেষ হয়। এবারের সম্মেলনে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অর্থনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও সবার আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত সমুদ্রসীমার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্ব অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। ২৩তম অ্যাপেক সম্মেলনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ম্যানিলায় সরকারি ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় ১৮ হাজার পুলিশ মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ। বাতিল করা হয় এক হাজারেরও বেশি ফ্লাইট, বন্ধ রাখা হয় বেশ কয়েকটি রাস্তা। এই সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে ফিলিপিন্স সরকার ২১ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম। দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম দিন বুধবার অ্যাপেক নেতারা বাণিজ্যিক পরামর্শক পরিষদের প্লেনারি সেশনে যোগ দিয়ে আঞ্চলিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি এবং টেকসই উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ২০২৫ সালের মধ্যে জোটভুক্ত ২১টি রাষ্ট্রের মধ্যে অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে সে বিষয়ে নেতারা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। ম্যানিলায় অ্যাপেকবিরোধী বিক্ষোভ : অ্যাপেক সম্মেলন দারিদ্র্যপীড়িত রাষ্ট্রগুলোর জন্য উপহাসমূলক উল্লেখ করে এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ফিলিপিন্সের ম্যানিলায় বিক্ষোভ করেছেন দেশটির বামপন্থী দল ব্যাগং আলিয়ানসাং মাকাবায়ানের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হন।
অ্যাপেক সম্মেলনের ফলে উন্নয়নশীল ও অপেক্ষাকৃত দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোর কোনো উন্নয়ন তো হয়ই না উল্টো তাদের অর্থে ধনী রাষ্ট্রগুলো তাদের ব্যবসার প্রসার ঘটায় বলে মন্তব্য বিক্ষোভকারীদের। ফিলিপিন্স-ভিয়েতনাম নিরাপত্তা চুক্তি : নিজেদের মধ্যে নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদারে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি সই করেছে ফিলিপিন্স ও ভিয়েতনাম। বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা অবস্থানের মোকাবেলা করতেই চুক্তিটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উভয় পক্ষ। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট তোরং তান সাং দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা দাবি নিয়ে সৃষ্ট আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জাহাজ পরিবহনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় নৌপথগুলোর মধ্যে অন্যতম এ দক্ষিণ চীন সাগর, যাকে ভিয়েতনাম ইস্ট সি নামে ডেকে থাকে। চুক্তিটি সইয়ের মধ্য দিয়ে জাপানের পর ফিলিপিন্সের দ্বিতীয় কৌশলগত অংশীদার হল ভিয়েতনাম। যুক্তরাষ্ট্র-মালয়েশিয়া চুক্তি : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। প্যারিসে রক্তস্নাত হামলার পর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি বৃহস্পতিবার এ চুক্তি স্বাক্ষরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
No comments