পাখি- সবুজ হাঁড়িচাঁচা by আ ন ম আমিনুর রহমান
কাপ্তাইয়ের ব্যাঙছড়ি এলাকায় সেগুনগাছে বসে আছে সবুজ হাঁড়িচাঁচা। ছবিটি ২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি তোলা l লেখক |
দুর্লভ
দুটি সবুজ পাখির সন্ধানে ছিলাম বহুদিন। দুটি পাখির একটি, নীল দাড়ি
সুইচোরা (Blue-bearded Bee-eater), যাকে নিয়ে এর আগে লিখেছি। কাজেই আজকে
দ্বিতীয়টির পালা, যে কিনা আরও আকর্ষণীয়। ‘জু এনিমেল মেডিসিন’ বিষয়ে
বহিঃপরীক্ষক হিসেবে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস
বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম জানুয়ারি ২০১৪-এ। চার দিনের ব্যবহারিক পরীক্ষা
শেষে ২৪ জানুয়ারি ভোরে কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের উদ্দেশে রওনা হলাম ছাত্র
ইয়াছিনকে নিয়ে। সে যাত্রায় প্রকৃতিবিষয়ক আলোকচিত্রী মিজানুর রহমানও ঢাকা
থেকে গিয়ে শামিল হলেন। মোট পাঁচজনের টিম নিয়ে প্রথম দিন রাস্তার পাশে ও
ছড়ায় তিন-তিনবার নীল দাড়ি সুইচোরার দেখা পেলাম।
দ্বিতীয় দিন দুপুরের খাবার ছেড়ে ব্যাঙছড়ি বিটে ঢোকার কিছুক্ষণ পরই বাচ্চাসহ চার-চারটি কাও ধনেশের দেখা পেলাম। ওদের পেছন ছুটতে ছুটতে একসময় মারমা পাড়ায় চলে এলাম। ঘড়িতে যখন ৪টা বেজে ৫০ মিনিট, ঠিক তখন একটি সিংহরাজকে (Greater Racket-tailed Drongo) নিশানসহ লম্বা লেজ নিয়ে উড়ে যেতে দেখলাম। কাজেই ওর ছবি তোলার জন্য পিছু নিলাম। ওর পেছনে সাত-আট মিনিট ছোটার পর হঠাৎ সবুজ কিছু একটাকে ডান পাশের ঘন বন থেকে বাঁ পাশের সেগুনবাগানের একটি গাছে গিয়ে বসতে দেখলাম। ক্যামেরায় চোখ রাখতেই মন আনন্দে নেচে উঠল। কিন্তু ছবি তোলার জন্য মাত্র এক মিনিট সময় পেলাম। ৪টা ৫৯ মিনিটে এক টিপে মোট পাঁচটি ক্লিক করলাম। এরপর পাখি উড়াল দিল।
এতক্ষণ আকর্ষণীয় যে পাখিটির কথা বললাম, তা এ দেশে দুর্লভ পাখি সবুজ হাঁড়িচাঁচা (Common Green Magpie)। সোনা থালা নামেও এটি পরিচিত। করভিডি অর্থাৎ কাক-হাঁড়িচাঁচা পরিবারভুক্ত পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Cissa chinensis।
সবুজ হাঁড়িচাঁচা আকারে হাঁড়িচাঁচার চেয়ে ছোট। লেজ লম্বা। দেহের দৈর্ঘ্য ৩৭-৩৯ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১২০-১৩৩ গ্রাম। মাথা ও পিঠ পাতা-সবুজ, কখনো কখনো নীলচে-সবুজও হতে পারে। লেজের ওপরটা নীলচে-সবুজ। বুক-পেট-লেজ টিয়ে-সবুজ। চোখ থেকে ঘাড় পর্যন্ত কাজল রেখাটি বেশ চওড়া। এ কারণেই মাথার সবুজ ঝুঁটিটি স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে। ডানার প্রান্ত ও মধ্য পালক তামাটে-খয়েরি এবং ডানার গোড়া ও লেজের আগার পালক সাদা। চোখ টকটকে লাল। পা, পায়ের পাতা ও আঙুল প্রবাল-লাল। মজবুত ও শক্ত ঠোঁটটিও প্রবাল-লাল। পুরুষ ও স্ত্রী দেখতে একই রকম। মাথার ঝুঁটি কালচে-বাদামি ও লেজের নিচটা সাদা।
সবুজ হাঁড়িচাঁচা বড় পাতাওয়ালা ঘন বনের বাসিন্দা। তবে সহজে চোখে পড়ে না। মূলত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মিশ্র চিরসবুজ বনের বাসিন্দা এরা। জামালপুর ও শেরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাতাঝরা বনে কদাচ দেখা মেলে। পাহাড়ি ছড়ার পাশে, গিরিখাতে একাকী বা জোড়ায় বিচরণ করে। গাছের ডালে ও পাতার আড়ালে লুকিয়ে খাবার খোঁজে। টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ, কীটপতঙ্গ, সাপ, পাখির ডিম-বাচ্চা খায়। মরা প্রাণীর মাংসও খেতে পারে। বেশ সাহসী ও জেদি পাখি। অন্যের খাবার ছিনিয়ে নিতেও বেশ পটু। সচরাচর উচ্চস্বরে ডাকাডাকি ও চেঁচামেচি করে। তবে মিষ্টি স্বরেও ডাকতে পারে। ‘পিপ-পিপ, ক্লি-হুয়ি-ও’ স্বরে ডাকে।
এপ্রিল-মে প্রজননকাল। গাছের শিকড়, পাতা, কাঠিকুঠি ও শেওলা দিয়ে ঘন বনের গাছে পাতার আড়ালে বাটির মতো বাসা বানায়। বাসায় চার থেকে ছয়টি ডিম পাড়ে।
দ্বিতীয় দিন দুপুরের খাবার ছেড়ে ব্যাঙছড়ি বিটে ঢোকার কিছুক্ষণ পরই বাচ্চাসহ চার-চারটি কাও ধনেশের দেখা পেলাম। ওদের পেছন ছুটতে ছুটতে একসময় মারমা পাড়ায় চলে এলাম। ঘড়িতে যখন ৪টা বেজে ৫০ মিনিট, ঠিক তখন একটি সিংহরাজকে (Greater Racket-tailed Drongo) নিশানসহ লম্বা লেজ নিয়ে উড়ে যেতে দেখলাম। কাজেই ওর ছবি তোলার জন্য পিছু নিলাম। ওর পেছনে সাত-আট মিনিট ছোটার পর হঠাৎ সবুজ কিছু একটাকে ডান পাশের ঘন বন থেকে বাঁ পাশের সেগুনবাগানের একটি গাছে গিয়ে বসতে দেখলাম। ক্যামেরায় চোখ রাখতেই মন আনন্দে নেচে উঠল। কিন্তু ছবি তোলার জন্য মাত্র এক মিনিট সময় পেলাম। ৪টা ৫৯ মিনিটে এক টিপে মোট পাঁচটি ক্লিক করলাম। এরপর পাখি উড়াল দিল।
এতক্ষণ আকর্ষণীয় যে পাখিটির কথা বললাম, তা এ দেশে দুর্লভ পাখি সবুজ হাঁড়িচাঁচা (Common Green Magpie)। সোনা থালা নামেও এটি পরিচিত। করভিডি অর্থাৎ কাক-হাঁড়িচাঁচা পরিবারভুক্ত পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Cissa chinensis।
সবুজ হাঁড়িচাঁচা আকারে হাঁড়িচাঁচার চেয়ে ছোট। লেজ লম্বা। দেহের দৈর্ঘ্য ৩৭-৩৯ সেন্টিমিটার এবং ওজন ১২০-১৩৩ গ্রাম। মাথা ও পিঠ পাতা-সবুজ, কখনো কখনো নীলচে-সবুজও হতে পারে। লেজের ওপরটা নীলচে-সবুজ। বুক-পেট-লেজ টিয়ে-সবুজ। চোখ থেকে ঘাড় পর্যন্ত কাজল রেখাটি বেশ চওড়া। এ কারণেই মাথার সবুজ ঝুঁটিটি স্পষ্টভাবে চোখে পড়ে। ডানার প্রান্ত ও মধ্য পালক তামাটে-খয়েরি এবং ডানার গোড়া ও লেজের আগার পালক সাদা। চোখ টকটকে লাল। পা, পায়ের পাতা ও আঙুল প্রবাল-লাল। মজবুত ও শক্ত ঠোঁটটিও প্রবাল-লাল। পুরুষ ও স্ত্রী দেখতে একই রকম। মাথার ঝুঁটি কালচে-বাদামি ও লেজের নিচটা সাদা।
সবুজ হাঁড়িচাঁচা বড় পাতাওয়ালা ঘন বনের বাসিন্দা। তবে সহজে চোখে পড়ে না। মূলত চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মিশ্র চিরসবুজ বনের বাসিন্দা এরা। জামালপুর ও শেরপুরের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাতাঝরা বনে কদাচ দেখা মেলে। পাহাড়ি ছড়ার পাশে, গিরিখাতে একাকী বা জোড়ায় বিচরণ করে। গাছের ডালে ও পাতার আড়ালে লুকিয়ে খাবার খোঁজে। টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ, কীটপতঙ্গ, সাপ, পাখির ডিম-বাচ্চা খায়। মরা প্রাণীর মাংসও খেতে পারে। বেশ সাহসী ও জেদি পাখি। অন্যের খাবার ছিনিয়ে নিতেও বেশ পটু। সচরাচর উচ্চস্বরে ডাকাডাকি ও চেঁচামেচি করে। তবে মিষ্টি স্বরেও ডাকতে পারে। ‘পিপ-পিপ, ক্লি-হুয়ি-ও’ স্বরে ডাকে।
এপ্রিল-মে প্রজননকাল। গাছের শিকড়, পাতা, কাঠিকুঠি ও শেওলা দিয়ে ঘন বনের গাছে পাতার আড়ালে বাটির মতো বাসা বানায়। বাসায় চার থেকে ছয়টি ডিম পাড়ে।
No comments