নিষিদ্ধ হচ্ছে আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণের উৎপাদন? by আবুল হাসনাত @প্রথম আলো
আয়োডিন নেই—এমন লবণকে ভোজ্যলবণ হিসেবে বাজারজাত নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এমনকি এমন লবণ উৎপাদন, মজুত এবং বিক্রিও নিষিদ্ধ হতে পারে। আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন-বিপণনে জড়িতদের তিন বছরের কারাদণ্ড কিংবা অপরাধভেদে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডের শাস্তিও পেতে হতে পারে। এমন বিধান রেখে আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন-১৯৮৯-এর সংশোধনীর একটি খসড়া তৈরি করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। সংস্থাটি বলছে, ২৪ বছরের পুরনো আইনটিকে সময়োপযোগী এবং কার্যকর করতে একটি সংশোধিত খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সব পক্ষের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হবে। আইনটি হয়ে গেলে লবণমিলমালিকদের কারচুপি অনেক কমবে।
জানতে চাইলে বিসিকের পরিচালক আবু তাহের খান বলেন, 'আমরা আইনে লবণের পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে খসড়াটি করেছি। আগের আইনটি শুধু খাবার লবণকেন্দ্রীক ছিল। বেকারি পণ্য ও পোলট্রি খাদ্যে আয়োডিনবিহীন লবণ ব্যবহার হয়। সেসব পণ্য আমরা খাই। এখন ওইসব ক্ষেত্রেও আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই শিল্পে ব্যবহারের লবণ ভোজ্যলবণ হিসেবে বিক্রি হয়। সে জন্য আমরা দুই লবণের আলাদা আলাদা মোড়কের কথা বলেছি।' আইনের খসড়ায় প্রতি কেজি আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণে ৩০ থেকে ৫০ মিলিগ্রাম আয়োডিন মেশানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি আয়োডিনযুক্ত লবণে ন্যুনতম ৯৬ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইট, অদ্রবণীয় পদার্থ সর্বোচ্চ দশমিক ৩ শতাংশ, সোডিয়াম ক্লোরাইট ছাড়া অন্যান্য দ্রবণীয় পদার্থ সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ থাকতে হবে এবং জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৪ শতাংশের বেশি থাকতে পারবে না।
বিসিক বলছে, দেশে উৎপাদিত লবণের ৫৮ শতাংশে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হচ্ছে। আর ৮১ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ ব্যবহার করছে। কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান বিক্রির জন্য পরিশোধিত ভোজ্যলবণ আমাদানি করতে চাইলে তাকে শুধুই আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ আমদানি করতে হবে। আয়োডিনমুক্ত কোনো ভোজ্যলবণ আমদানি করা যাবে না। এ ব্যাপারে খসড়ায় বলা হয়েছে, আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ আমদানির ক্ষেত্রে তা বন্দর থেকে খালাসের আগেই পরীক্ষা করে মান যাচাই করতে হবে এবং যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। আইনের খসড়া অনুযায়ী, কোনোভাবেই ভোজ্যলবণের দাম মোড়কে উল্লেখিত মূল্যের চেয়ে বেশি রাখা যাবে না।
ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাতারী হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানায় শিল্পে ব্যবহার হওয়া লবণ উৎপাদন করতে পারবেন না। তাদের শুধুই ভোজ্যলবণ উৎপাদন করতে হবে। নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভোজ্যলবণ নিজের কারখানা ছাড়া অন্য কারখানা ভাড়া নিয়ে উৎপাদন করতে পারবে না। একইভাবে নিজের কারখানা অন্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ভোজ্যলবণ উৎপাদনের জন্য ভাড়াও দিতে পারবে না। ভোজ্যলবণ উৎপাদনকারী কারখানার পরিদর্শন সম্পর্কে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, বিসিক কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক যেকোনো কারখানার ভোজ্যলবণ সংগ্রহ করে তাতে আয়োডিনের মাত্রা পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারবে। এই আইন বাস্তবায়নে ভোজ্যলবণ উৎপাদন, পরিশোধন, আমদানি ও বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তিকে আইন অনুযায়ী আদেশ দিতে পারবে।
বর্তমান আইনের বিধান লঙ্ঘনকারির জন্য তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে খসড়া আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাতের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য তৈরি কিংবা প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার না করলে সেটাও অপারাধ বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে রাখা হয়েছে তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা কিংবা উভয় দন্ড। তবে খসড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তার জন্য সরাসরি আদালতে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি। খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকার কিংবা সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোনো আদালত এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ বিচারের জন্য আমলে নিতে পারবেন না। আবার এই আইনের অধীন অপরাধগুলো অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য এবং আপোসযোগ্য করার বিধান রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআই) এবং গেইনের সহায়তায় ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিকের সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ (সিআইডিডি) প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ এখন চলছে। বিসিক বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২০১৬ সালের মধ্যে দেশে উৎপাদিত ভোজ্যলবণের ৯০ শতাংশে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হবে এবং শতভাগ পরিবারকে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণের ব্যবহারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
# আয়োডিনমুক্ত কোনো ভোজ্যলবণ আমদানি করা যাবে না। খালাসের আগেই বন্দরে পরীক্ষা করতে হবে
# ভোজ্যলবণ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শিল্পে ব্যবহারের লবণ উৎপাদন করতে পারবে না
# আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাত করলে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান
# ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তার জন্য সরাসরি আদালতে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি
৫৮ শতাংশ লবণে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হচ্ছে
৮১ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ ব্যবহার করছে
জানতে চাইলে বিসিকের পরিচালক আবু তাহের খান বলেন, 'আমরা আইনে লবণের পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে খসড়াটি করেছি। আগের আইনটি শুধু খাবার লবণকেন্দ্রীক ছিল। বেকারি পণ্য ও পোলট্রি খাদ্যে আয়োডিনবিহীন লবণ ব্যবহার হয়। সেসব পণ্য আমরা খাই। এখন ওইসব ক্ষেত্রেও আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই শিল্পে ব্যবহারের লবণ ভোজ্যলবণ হিসেবে বিক্রি হয়। সে জন্য আমরা দুই লবণের আলাদা আলাদা মোড়কের কথা বলেছি।' আইনের খসড়ায় প্রতি কেজি আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণে ৩০ থেকে ৫০ মিলিগ্রাম আয়োডিন মেশানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি আয়োডিনযুক্ত লবণে ন্যুনতম ৯৬ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইট, অদ্রবণীয় পদার্থ সর্বোচ্চ দশমিক ৩ শতাংশ, সোডিয়াম ক্লোরাইট ছাড়া অন্যান্য দ্রবণীয় পদার্থ সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ থাকতে হবে এবং জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৪ শতাংশের বেশি থাকতে পারবে না।
বিসিক বলছে, দেশে উৎপাদিত লবণের ৫৮ শতাংশে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হচ্ছে। আর ৮১ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ ব্যবহার করছে। কোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান বিক্রির জন্য পরিশোধিত ভোজ্যলবণ আমাদানি করতে চাইলে তাকে শুধুই আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ আমদানি করতে হবে। আয়োডিনমুক্ত কোনো ভোজ্যলবণ আমদানি করা যাবে না। এ ব্যাপারে খসড়ায় বলা হয়েছে, আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ আমদানির ক্ষেত্রে তা বন্দর থেকে খালাসের আগেই পরীক্ষা করে মান যাচাই করতে হবে এবং যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে। আইনের খসড়া অনুযায়ী, কোনোভাবেই ভোজ্যলবণের দাম মোড়কে উল্লেখিত মূল্যের চেয়ে বেশি রাখা যাবে না।
ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাতারী হিসেবে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানায় শিল্পে ব্যবহার হওয়া লবণ উৎপাদন করতে পারবেন না। তাদের শুধুই ভোজ্যলবণ উৎপাদন করতে হবে। নিবন্ধিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ভোজ্যলবণ নিজের কারখানা ছাড়া অন্য কারখানা ভাড়া নিয়ে উৎপাদন করতে পারবে না। একইভাবে নিজের কারখানা অন্য ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে ভোজ্যলবণ উৎপাদনের জন্য ভাড়াও দিতে পারবে না। ভোজ্যলবণ উৎপাদনকারী কারখানার পরিদর্শন সম্পর্কে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, বিসিক কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিদর্শক যেকোনো কারখানার ভোজ্যলবণ সংগ্রহ করে তাতে আয়োডিনের মাত্রা পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারবে। এই আইন বাস্তবায়নে ভোজ্যলবণ উৎপাদন, পরিশোধন, আমদানি ও বিক্রির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ব্যক্তিকে আইন অনুযায়ী আদেশ দিতে পারবে।
বর্তমান আইনের বিধান লঙ্ঘনকারির জন্য তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে খসড়া আইনে শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাতের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা জরিমানা কিংবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য তৈরি কিংবা প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার না করলে সেটাও অপারাধ বলে গণ্য হবে। এক্ষেত্রে রাখা হয়েছে তিন বছরের কারাদন্ড কিংবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা কিংবা উভয় দন্ড। তবে খসড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তার জন্য সরাসরি আদালতে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি। খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকার কিংবা সরকারের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোনো আদালত এই আইনের অধীনে কোনো অপরাধ বিচারের জন্য আমলে নিতে পারবেন না। আবার এই আইনের অধীন অপরাধগুলো অ-আমলযোগ্য, জামিনযোগ্য এবং আপোসযোগ্য করার বিধান রাখা হয়েছে। জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ), মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ (এমআই) এবং গেইনের সহায়তায় ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিসিকের সর্বজনীন আয়োডিনযুক্ত লবণ (সিআইডিডি) প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের কাজ এখন চলছে। বিসিক বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২০১৬ সালের মধ্যে দেশে উৎপাদিত ভোজ্যলবণের ৯০ শতাংশে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হবে এবং শতভাগ পরিবারকে আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণের ব্যবহারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
# আয়োডিনমুক্ত কোনো ভোজ্যলবণ আমদানি করা যাবে না। খালাসের আগেই বন্দরে পরীক্ষা করতে হবে
# ভোজ্যলবণ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শিল্পে ব্যবহারের লবণ উৎপাদন করতে পারবে না
# আয়োডিনবিহীন ভোজ্যলবণ উৎপাদন ও বাজারজাত করলে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান
# ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তার জন্য সরাসরি আদালতে যাওয়ার সুযোগ রাখা হয়নি
৫৮ শতাংশ লবণে পরিমিত মাত্রায় আয়োডিন মেশানো হচ্ছে
৮১ শতাংশ পরিবার আয়োডিনযুক্ত ভোজ্যলবণ ব্যবহার করছে
No comments