চরাচর-ধাঁধারচর by সাইফুল ইসলাম খান
সুন্দরের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। প্রকৃতিও মানুষের জন্য তার সৌন্দর্যের ডালি সাজিয়ে দিয়েছে অকৃপণ হাতে। পাহাড়, সমুদ্র কিংবা নদীতে প্রকৃতির সৌন্দর্যের তীব্রতা যেন আরো বেশি। প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে পাহাড়, সমুদ্র বা নদীতে এমন কিছু রূপের প্রকাশ ঘটায়, যা মানুষকে কাছে টানে। সৌন্দর্যপিয়াসি মানুষ তাই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে যায় এসব স্থানে। কালক্রমে এসব স্থান হয়ে ওঠে দর্শনীয়। দর্শনীয় স্থানে মানুষ মনের খোরাক খ্ুঁজে পায়। কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ততা
ও যাপিত জীবনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে মানুষ ছুটে যায় এসব দর্শনীয় স্থানে। দেশের অনেক দর্শনীয় স্থানের মতো একটি হলো ধাঁধারচর। গাজীপুর জেলার পূর্ব সীমান্তে বয়ে চলা শীতলক্ষ্যা নদীর বুকে জেগে থাকা এ চরটির অবস্থান কাপাসিয়া থানার তারাগঞ্জ ও রানীগঞ্জের মাঝখানে। উত্তর দিক থেকে নেমে আসা শীতলক্ষ্যা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের এক শাখানদীর মিলনস্থলে এই চরের অবস্থান। চরটির দৈর্ঘ্য তিন কিলোমিটার এবং প্রস্থ কমবেশি এক কিলোমিটার। তিন বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ চরটির নাম কেন ধাঁধারচর, তা আজও রহস্যাবৃত। অবশ্য স্থানীয় অনেকে একে মাঝেরচর বলেও ডাকে। নদীর মাঝখানে দ্বীপসদৃশ বলেই এ রকম নামকরণ বলে অনুমান করা যায়। তবে ধাঁধারচরে কোনো রহস্য না থাকলেও আছে অপরূপ সৌন্দর্য। প্রকৃতি যেন তার সৌন্দর্যের ডালি এখানে সাজিয়ে দিয়েছে আপন হাতে। আরো আছে গাছগাছালি ও ফসলের অপরূপ সমাহার।
ধান, গম, আলু, আখ, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ ছাড়াও আরো বেশ কিছু ফসল এখানে সারা বছর ফলে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, কলা ছাড়াও আছে তাল-তমালের সারি। সকাল হলে দল বেঁধে দুই পারের কৃষকরা নৌকায় পাড়ি দিয়ে ধাঁধারচরে যায় কৃষিকাজ করতে, ফিরে আসে সন্ধ্যায়। চরের উত্তর প্রান্তে রানীগঞ্জ বাজারের বটতলায় নদীর বাঁধানো ঘাটে দাঁড়ালে ধাঁধারচর চমৎকার দেখা যায়। অনেকে খেয়ানৌকা বা ইঞ্চিননৌকা ভাড়া করে চলে যায় চরে। শীতকাল এলেই দূর-দূরান্ত থেকে এখানে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। অনেকেই পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঢাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে আসে এখানে। নদীর বাঁধানো ঘাটে দাঁড়িয়ে চরের দিকে তাকালেই মন খুশিতে ভরে যায়। আর যারা চরে যায় হাঁটতে, তারা চরের সবুজে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলে। নিঃশব্দে দুই পাশে বয়ে যাওয়া নদীর স্বচ্ছ জলের পাশ দিয়ে হেঁটে বেড়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বসতিহীন এই চরে কৃষক কাজ করে আপন মনে আর দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়ায় অনাবিল আনন্দে। শীতজুড়ে এভাবে চলে দর্শনার্থীদের ধাঁধারচরে বেড়ানো। আর বর্ষাকালে চরটি যেন আরো মোহনীয় হয়ে ওঠে।
তখন দর্শনার্থীরা চরে যেতে পারে না। কিন্তু বাজারের বাঁধানো পাড়ে অনেককে দেখা যায় অপলক সেদিকে তাকিয়ে থাকতে। তখন উন্মত্ত শীতলক্ষ্যার বুকে এ চরটি হয়ে যায় একটি দ্বীপ, যার মাথার ওপর থাকে কালো মেঘ। বৃষ্টির অঝোর ধারা কিংবা আকাশঢাকা মেঘে চরটি হয়ে যায় আরো রহস্যময়। এমন ধাঁধা লাগানো ধাঁধারচরে গত এক যুগ ধরে বেড়েই চলেছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। কিন্তু দর্শনার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয় খেয়া পারাপার নিয়ে। রানীগঞ্জ-লাখপুরে খেয়া পারাপার একমাত্র ব্যবস্থা। এ ছাড়া শীতের সময় দূর-দূরান্ত থেকে মাঝেমধ্যেই পিকনিক পার্টি আসে এখানে। ধাঁধারচরের উর্বর মাটিতে ফলানো ফসল দুই পারের কৃষকের প্রাণ। তেমনি দর্শনার্থীদের কাছেও তা অনাবিল আনন্দের উৎস।
সাইফুল ইসলাম খান
ধান, গম, আলু, আখ, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ ছাড়াও আরো বেশ কিছু ফসল এখানে সারা বছর ফলে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, কলা ছাড়াও আছে তাল-তমালের সারি। সকাল হলে দল বেঁধে দুই পারের কৃষকরা নৌকায় পাড়ি দিয়ে ধাঁধারচরে যায় কৃষিকাজ করতে, ফিরে আসে সন্ধ্যায়। চরের উত্তর প্রান্তে রানীগঞ্জ বাজারের বটতলায় নদীর বাঁধানো ঘাটে দাঁড়ালে ধাঁধারচর চমৎকার দেখা যায়। অনেকে খেয়ানৌকা বা ইঞ্চিননৌকা ভাড়া করে চলে যায় চরে। শীতকাল এলেই দূর-দূরান্ত থেকে এখানে প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। অনেকেই পরিবার-পরিজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঢাকা থেকে ৭০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে আসে এখানে। নদীর বাঁধানো ঘাটে দাঁড়িয়ে চরের দিকে তাকালেই মন খুশিতে ভরে যায়। আর যারা চরে যায় হাঁটতে, তারা চরের সবুজে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলে। নিঃশব্দে দুই পাশে বয়ে যাওয়া নদীর স্বচ্ছ জলের পাশ দিয়ে হেঁটে বেড়ায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বসতিহীন এই চরে কৃষক কাজ করে আপন মনে আর দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়ায় অনাবিল আনন্দে। শীতজুড়ে এভাবে চলে দর্শনার্থীদের ধাঁধারচরে বেড়ানো। আর বর্ষাকালে চরটি যেন আরো মোহনীয় হয়ে ওঠে।
তখন দর্শনার্থীরা চরে যেতে পারে না। কিন্তু বাজারের বাঁধানো পাড়ে অনেককে দেখা যায় অপলক সেদিকে তাকিয়ে থাকতে। তখন উন্মত্ত শীতলক্ষ্যার বুকে এ চরটি হয়ে যায় একটি দ্বীপ, যার মাথার ওপর থাকে কালো মেঘ। বৃষ্টির অঝোর ধারা কিংবা আকাশঢাকা মেঘে চরটি হয়ে যায় আরো রহস্যময়। এমন ধাঁধা লাগানো ধাঁধারচরে গত এক যুগ ধরে বেড়েই চলেছে দর্শনার্থীর সংখ্যা। কিন্তু দর্শনার্থীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয় খেয়া পারাপার নিয়ে। রানীগঞ্জ-লাখপুরে খেয়া পারাপার একমাত্র ব্যবস্থা। এ ছাড়া শীতের সময় দূর-দূরান্ত থেকে মাঝেমধ্যেই পিকনিক পার্টি আসে এখানে। ধাঁধারচরের উর্বর মাটিতে ফলানো ফসল দুই পারের কৃষকের প্রাণ। তেমনি দর্শনার্থীদের কাছেও তা অনাবিল আনন্দের উৎস।
সাইফুল ইসলাম খান
No comments