ফেনীর প্রাচীন ঐতিহ্যের নিদর্শন বিজয় সিংহ দীঘি by নাকিবুল আহসান নিশাদ
বিজয় সিংহ দীঘি |
হাজার
বছরের পুরনো ঐতিহাসিক জনপদের মধ্যে ফেনী অন্যতম। এখানে গৌরবগাঁথা অজস্র
নিদর্শন ছড়িয়ে আছে। এগুলোরই একটি বিজয় সিংহ দীঘি। শহরের দুই কিলোমিটার
পশ্চিমে সার্কিট হাউসের পাশে বিজয় সিংহ গ্রামে এটি অবস্থিত। এর তিন দিকে
উঁচু পাহাড়ের মতো সবুজ বৃক্ষ ও লতাপাতায় ঘেরা। সমতলে একপাশে গোসল ও ওজু
করার ঘাট, মানুষের বসার জায়গা আর সরকারি সার্কিট হাউস।
ফেনী জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন বিজয় সিংহ দীঘির আয়তন ৩৭ দশমিক ৫৭ একর। এখানে হেঁটে হেঁটে প্রকৃতির সান্নিধ্যে ডুবে থাকা যায়। রোজ বিকেলে প্রশান্তির খোঁজে ভ্রমণপিপাসুরা হাজির হন বিজয় সিংহ দীঘির পাড়ে। এ সময় জমে ওঠে আড্ডা ও বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর কেনাবেচা। রাতে আলোর মেলায় এক নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
দীঘির পাড়ে বিভিন্ন দিবসে ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড় বাড়ে। উৎসবগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকে বেড়াতে আসেন এখানে। তরুণ-তরুণীরা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি আর সেলফি তোলায় মগ্ন থাকে। তখন মেলাও বসে।
শত বছরের প্রাচীন রূপকথার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে বিজয় সিংহ দীঘি। তবে এ নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। অনেকেই এই দীঘিকে প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত সেন বংশের অমর কীর্তি মনে করেন। তাদের মতে, ৫০০-৭০০ বছর আগে সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেন এটি খনন করেন। আবার অনেকে মনে করেন, দীঘিটি খনন করেন স্থানীয় রাজা বিজয় সিংহ। তার নামানুসারেই এর নামকরণ হয়।
কথিত আছে, মাকে খুশি করার জন্য এই সুদীর্ঘ দীঘিটি খনন করেন রাজা বিজয় সিংহ। এতে একসময় সোনা ও রূপার থালা ভেসে উঠতো! একদিন এক ভিখারিনী একটি থালা চুরি করে। তারপর থেকে আর থালা ভেসে ওঠে না। আরও জনশ্রুতি আছে, দীঘিতে অনেক বড় বড় মাছ পাওয়া যেতো, সেগুলোর একেকটির ওজন ৮০-১০০ কেজি পর্যন্ত হতো।
ফেনীর কৃতি সন্তান প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক জহির রায়হান ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে কমলা সুন্দরীকে জিন দীঘিতে নামিয়ে ফেলার কথা উল্লেখ করেন। অনেকে মনে করেন, এই দীঘির কথাই রয়েছে উপন্যাসটিতে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত দীঘিটি পুরোপুরিভাবে সেচ করা সম্ভব হয়নি।
এখনও দূর-দূরান্ত থেকে অনেক বিজয় সিংহ দীঘিতে গোসল করতে ও পানি পানের জন্য আসেন। ১৯৯৫ সালে এর চারপাশে বৃক্ষরোপণ করে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। গত বছর দীঘির পাড়ে হাঁটাপথ, আরসিসি গ্যালারি, লাইটিং, সীমানা প্রাচীর ও শৌচাগার নির্মাণ করা হয়। ফলে এখানকার সৌন্দর্য বেড়েছে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার সায়দাবাদ বা টিটিপাড়া থেকে স্টার লাইন, এনা অথবা লোকাল বাসে চড়ে ফেনী মহিপাল নামতে হবে। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকা। মহিপাল থেকে রিকশা অথবা পায়ে হেঁটে সার্কিট হাউস রোড দিয়ে বিজয় সিংহ দীঘি যাওয়া যায়। রিকশায় গেলে ১০-১৫ টাকা। হেঁটে গেলে লাগবে ১০ মিনিট।
কোথায় খাবেন
ফেনীর মহিপালে ভালো মানের বেশকিছু রেস্তোরাঁ আছে। এগুলোতে স্বল্পমূল্যে খাওয়া যায়। যেমন ফাইভ স্টার হোটেল, শাহিন হোটেল, ফুড পার্ক রেস্তোরাঁ, আলমাস হোটেল ইত্যাদি।
কোথায় থাকবেন
বিজয় সিংহ দীঘির কাছে গড়ে তোলা হয়েছে ফেনী সার্কিট হাউস। আর দীঘি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মিজান রোডে অবস্থিত ফেনী জেলা পরিষদের ডাকবাংলো। এছাড়া এলজিইডি রেস্টহাউস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউস ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রেস্টহাউসে রাতে থাকা যায়। ফেনী শহরে আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল মিডনাইট ও হোটেল গাজী ইন্টরন্যাশনাল তুলনামূলকভাবে ভালো।
>>ছবি: লেখক
ফেনী জেলা প্রশাসনের মালিকানাধীন বিজয় সিংহ দীঘির আয়তন ৩৭ দশমিক ৫৭ একর। এখানে হেঁটে হেঁটে প্রকৃতির সান্নিধ্যে ডুবে থাকা যায়। রোজ বিকেলে প্রশান্তির খোঁজে ভ্রমণপিপাসুরা হাজির হন বিজয় সিংহ দীঘির পাড়ে। এ সময় জমে ওঠে আড্ডা ও বিভিন্ন দ্রব্যসামগ্রীর কেনাবেচা। রাতে আলোর মেলায় এক নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
দীঘির পাড়ে বিভিন্ন দিবসে ভ্রমণপ্রেমীদের ভিড় বাড়ে। উৎসবগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকে বেড়াতে আসেন এখানে। তরুণ-তরুণীরা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি আর সেলফি তোলায় মগ্ন থাকে। তখন মেলাও বসে।
শত বছরের প্রাচীন রূপকথার ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করছে বিজয় সিংহ দীঘি। তবে এ নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। অনেকেই এই দীঘিকে প্রাচীন বাংলার বিখ্যাত সেন বংশের অমর কীর্তি মনে করেন। তাদের মতে, ৫০০-৭০০ বছর আগে সেন বংশের প্রতিষ্ঠাতা বিজয় সেন এটি খনন করেন। আবার অনেকে মনে করেন, দীঘিটি খনন করেন স্থানীয় রাজা বিজয় সিংহ। তার নামানুসারেই এর নামকরণ হয়।
কথিত আছে, মাকে খুশি করার জন্য এই সুদীর্ঘ দীঘিটি খনন করেন রাজা বিজয় সিংহ। এতে একসময় সোনা ও রূপার থালা ভেসে উঠতো! একদিন এক ভিখারিনী একটি থালা চুরি করে। তারপর থেকে আর থালা ভেসে ওঠে না। আরও জনশ্রুতি আছে, দীঘিতে অনেক বড় বড় মাছ পাওয়া যেতো, সেগুলোর একেকটির ওজন ৮০-১০০ কেজি পর্যন্ত হতো।
ফেনীর কৃতি সন্তান প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক জহির রায়হান ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে কমলা সুন্দরীকে জিন দীঘিতে নামিয়ে ফেলার কথা উল্লেখ করেন। অনেকে মনে করেন, এই দীঘির কথাই রয়েছে উপন্যাসটিতে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এখন পর্যন্ত দীঘিটি পুরোপুরিভাবে সেচ করা সম্ভব হয়নি।
এখনও দূর-দূরান্ত থেকে অনেক বিজয় সিংহ দীঘিতে গোসল করতে ও পানি পানের জন্য আসেন। ১৯৯৫ সালে এর চারপাশে বৃক্ষরোপণ করে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়। গত বছর দীঘির পাড়ে হাঁটাপথ, আরসিসি গ্যালারি, লাইটিং, সীমানা প্রাচীর ও শৌচাগার নির্মাণ করা হয়। ফলে এখানকার সৌন্দর্য বেড়েছে।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার সায়দাবাদ বা টিটিপাড়া থেকে স্টার লাইন, এনা অথবা লোকাল বাসে চড়ে ফেনী মহিপাল নামতে হবে। ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ২৫০-৩০০ টাকা। মহিপাল থেকে রিকশা অথবা পায়ে হেঁটে সার্কিট হাউস রোড দিয়ে বিজয় সিংহ দীঘি যাওয়া যায়। রিকশায় গেলে ১০-১৫ টাকা। হেঁটে গেলে লাগবে ১০ মিনিট।
কোথায় খাবেন
ফেনীর মহিপালে ভালো মানের বেশকিছু রেস্তোরাঁ আছে। এগুলোতে স্বল্পমূল্যে খাওয়া যায়। যেমন ফাইভ স্টার হোটেল, শাহিন হোটেল, ফুড পার্ক রেস্তোরাঁ, আলমাস হোটেল ইত্যাদি।
কোথায় থাকবেন
বিজয় সিংহ দীঘির কাছে গড়ে তোলা হয়েছে ফেনী সার্কিট হাউস। আর দীঘি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে মিজান রোডে অবস্থিত ফেনী জেলা পরিষদের ডাকবাংলো। এছাড়া এলজিইডি রেস্টহাউস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্টহাউস ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রেস্টহাউসে রাতে থাকা যায়। ফেনী শহরে আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল মিডনাইট ও হোটেল গাজী ইন্টরন্যাশনাল তুলনামূলকভাবে ভালো।
>>ছবি: লেখক
No comments