আইনশৃঙ্খলা ও মানবাধিকার-শঙ্কা তৈরি করেছে রাষ্ট্রীয় বাহিনী
২০১১ সালে দেশের মানবাধিকার-পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। এর মধ্যে মানুষ ‘নিখোঁজ’ হওয়া ও ‘গুপ্তহত্যার’ ঘটনা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) মানবাধিকার-পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে।
বেসরকারি এই মানবাধিকার সংগঠনটির মতে, এসব ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কিছু আচরণ জনমনে শঙ্কা ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়।
বেসরকারি এই মানবাধিকার সংগঠনটির মতে, এসব ঘটনায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কিছু আচরণ জনমনে শঙ্কা ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। গতকাল রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়।
আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর সাধারণভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও অপরাধের নতুন প্রবণতা হিসেবে ‘নিখোঁজ’ বা ‘গুপ্তহত্যার’ ঘটনা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ। এ ধরনের ঘটনায় অন্তত ৫১ জন নিখোঁজ বা অপহরণের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৫ জনের লাশ পাওয়া গেছে। আর প্রায় প্রতিটি ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তাদের স্বজনকে র্যাব বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে।
আসকের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, গুপ্তহত্যার ঘটনাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নানাভাবে দায় বর্তায়। তাদের ওপর যখন অভিযোগ ওঠে, তখন বিবেচনা করতে হবে কেন উঠল। এসব অভিযোগ খণ্ডানোর দায়ও তাদের। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের বাহিনীগুলো এখনো ক্ষমতাবানদের পক্ষে কাজ করার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের অঙ্গীকার নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেও তা বন্ধ হয়নি। র্যাবের বিরুদ্ধে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠলেও বাহিনীটি কখনোই তা স্বীকার করেনি। এ ধরনের ঘটনার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেন।
আসকের সভাপতি হামিদা হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছে, গুপ্তহত্যার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এসব তদন্তের ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে গত বছরের মানবাধিকার-পরিস্থিতি নিয়ে আসকের পর্যালোচনা তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক মো. নূর খান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছর পুলিশের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ছিল লক্ষণীয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নামে মূলত বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের আগে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে ১৩৩ বার। এ ছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারেরও সমালোচনা করে বলা হয়, এর ফলে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ব্যাহত হবে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে আসকের তৈরি মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও কথিত ‘ক্রসফায়ারে’ ১০০ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে শুধু ‘ক্রসফায়ারে’ র্যাবের হাতে ৩৫ জন, পুলিশের হাতে ১৯ জন, র্যাব ও পুলিশের হাতে যৌথভাবে চারজন নিহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনের প্রতি আস্থাহীনতায় নিজ হাতে আইন তুলে নেওয়ার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটেছে। গত বছর গণপিটুনিতে মারা গেছে ১৩৪ জন। কারা হেফাজতে ১১৬ জন কয়েদি ও হাজতির মৃত্যু হয়েছে। সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে ৪০ জন।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর বখাটেদের উৎপাতে ৩৩ জন নারী আত্মহত্যা করেছে আর বখাটেদের হাতে খুন হয়েছে ২৩ জন। ফতোয়ার শিকার হয়েছে ৫৯ জন নারী। এদের মধ্যে একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৩ জন ফতোয়ার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। ছয়জন নারীকে দোররা মারা হয়েছে। একই সময়ে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯৩৬ জন নারী, যার মধ্যে ১০৫ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১২ জন। এসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ৬২ জন নারী।
এ ছাড়া ১১৭ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, যাদের ৭৪ জনই শিশু। আর এদের মধ্যে নির্যাতনে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আটজন আত্মহত্যা করেছে, ছয়জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫১৪ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে একজন শারীরিক নির্যাতনের পর মারা গেছে, একজন আত্মহত্যা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন কার্যত থেমে রয়েছে এবং সরকার চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতায় মারা গেছে ৩০ জন। এ ছাড়া ঢাকায় ভিক্ষুক জরিপ, সীমান্তে বিএসএফের দ্বারা বাংলাদেশি হত্যা, সাংবাদিক নির্যাতন, শ্রমিক বঞ্চনার বিভিন্ন ঘটনার সমালোচনা করা হয়।
আসকের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল বলেন, গুপ্তহত্যার ঘটনাগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নানাভাবে দায় বর্তায়। তাদের ওপর যখন অভিযোগ ওঠে, তখন বিবেচনা করতে হবে কেন উঠল। এসব অভিযোগ খণ্ডানোর দায়ও তাদের। তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের বাহিনীগুলো এখনো ক্ষমতাবানদের পক্ষে কাজ করার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধের অঙ্গীকার নিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেও তা বন্ধ হয়নি। র্যাবের বিরুদ্ধে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠলেও বাহিনীটি কখনোই তা স্বীকার করেনি। এ ধরনের ঘটনার জ্বলন্ত উদাহরণ হলো ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেন।
আসকের সভাপতি হামিদা হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে বলা হয়েছে, গুপ্তহত্যার বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এসব তদন্তের ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে গত বছরের মানবাধিকার-পরিস্থিতি নিয়ে আসকের পর্যালোচনা তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক মো. নূর খান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছর পুলিশের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ছিল লক্ষণীয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নামে মূলত বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের আগে ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে ১৩৩ বার। এ ছাড়া রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহারেরও সমালোচনা করে বলা হয়, এর ফলে সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ব্যাহত হবে।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে আসকের তৈরি মানবাধিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে ও কথিত ‘ক্রসফায়ারে’ ১০০ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে শুধু ‘ক্রসফায়ারে’ র্যাবের হাতে ৩৫ জন, পুলিশের হাতে ১৯ জন, র্যাব ও পুলিশের হাতে যৌথভাবে চারজন নিহত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনের প্রতি আস্থাহীনতায় নিজ হাতে আইন তুলে নেওয়ার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটেছে। গত বছর গণপিটুনিতে মারা গেছে ১৩৪ জন। কারা হেফাজতে ১১৬ জন কয়েদি ও হাজতির মৃত্যু হয়েছে। সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে ৪০ জন।
আসকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর বখাটেদের উৎপাতে ৩৩ জন নারী আত্মহত্যা করেছে আর বখাটেদের হাতে খুন হয়েছে ২৩ জন। ফতোয়ার শিকার হয়েছে ৫৯ জন নারী। এদের মধ্যে একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৩ জন ফতোয়ার শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে। ছয়জন নারীকে দোররা মারা হয়েছে। একই সময়ে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৯৩৬ জন নারী, যার মধ্যে ১০৫ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে ১২ জন। এসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে ৬২ জন নারী।
এ ছাড়া ১১৭ জন গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, যাদের ৭৪ জনই শিশু। আর এদের মধ্যে নির্যাতনে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে, আটজন আত্মহত্যা করেছে, ছয়জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫১৪ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে একজন শারীরিক নির্যাতনের পর মারা গেছে, একজন আত্মহত্যা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন কার্যত থেমে রয়েছে এবং সরকার চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতায় মারা গেছে ৩০ জন। এ ছাড়া ঢাকায় ভিক্ষুক জরিপ, সীমান্তে বিএসএফের দ্বারা বাংলাদেশি হত্যা, সাংবাদিক নির্যাতন, শ্রমিক বঞ্চনার বিভিন্ন ঘটনার সমালোচনা করা হয়।
No comments