এমন মাঠে স্কুল ফুটবল!

লালবাগ হাজী আবদুল হামিদ ঈদগাহ মাঠের একপাশে চলছে দেয়াল নির্মাণের প্রস্তুতি। আরেক পাশে স্তূপ করে রাখা ইট। সারা মাঠ বালুতে ভরা। কোথাও ঘাসের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। খেলার বিরতিতে চিকন নল দিয়ে বালুর ওপরে ছিঁটানো হচ্ছিল পানি। কিন্তু খুব ধীর গতিতে বের হওয়া পানি মাঠের জন্য মোটেও পর্যাপ্ত ছিল না। জাতীয় স্কুল ফুটবলের ‘বি’ গ্রুপের সব খেলা কাল দিনব্যাপী হলো এই মাঠে। স্কুলের ছোট ফুটবলাররা ফুটবল তো নয়, খেলল ধুলো খেলা!


মাঠে ধুলো এত বেশি ছিল যে রেফারিরা সারাক্ষণ নাক চেপে ধরে খেলা পরিচালনা করলেন। মাঠের ওরিয়েন্ট ক্লাব কার্যালয়ের দিকে নতুন করে বালু ফেলা জায়গায় পানি দিয়ে এমনই নরম করে ফেলা হয় যে, বুট পড়তেই ডুবে যাচ্ছিল খেলোয়াড়দের পা। ফাইনাল চলার সময় মাঠে ঢুকে পড়ল একটি কুকুর। এক দর্শক মাঠ থেকে তাড়িয়ে নিয়ে গেলেন। গোল হলেই উল্লাস করতে করতে মাঠে ঢুকে পড়ছিল স্থানীয় সমর্থকেরা। তাদের সরিয়ে নিতেও বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল আয়োজকদের। ঢাকা শহরে কি ভালো মাঠের এতই অভাব? জাতীয় স্কুল ফুটবল কমিটির কো-চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ আসলাম জানালেন, ‘এই অঞ্চলে এর চেয়ে ভালো মাঠ আর নেই। মাঠের অবস্থা আরও খারাপ ছিল। মাটি ফেলে এই পর্যায়ে এনেছি। তবে এর পরের গ্রুপের খেলা ধানমন্ডি বা আবাহনী মাঠে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
খেলোয়াড়দের বয়স চুরি এবং এক স্কুলের ছাত্র অন্য স্কুলে খেলানোর অভিযোগ ছিল। এসব অভিযোগের কারণে রেড স্টার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলকে গ্রুপ পর্বে খেলতে হলো আটজন নিয়ে। বেশি বয়সের অভিযোগে বাকি তিন খেলোয়াড়কে দর্শক সারিতে বসিয়ে দিলেন ফেডারেশন কর্মকর্তারা। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো একজন দেখল লাল কার্ড। সাতজনের রেড স্টার শেষ পর্যন্ত ইসলামবাগ আশরাফ আলী স্কুলের বিপক্ষে জিতল টাইব্রেকারে (১২-১১)। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ছিল সমতায় (১-১)। সেমিফাইনালেও রেড স্টার আটজন নিয়ে জেতে। তবে ফাইনালের আগে কোচ আবেদন করায় নামাতে পারে ১১ জনকে। যদিও নাহার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিষণ্ন মুখে মাঠ ছেড়েছে রেড স্টার। ৪০ মিনিটের ম্যাচের শেষ ২ মিনিটে রেড স্টারের সর্বনাশ করে কামাল ও বেলাল। এই জয়ে ঢাকা মহানগর অঞ্চলে ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন নাহার ইন্টারন্যাশনাল।

No comments

Powered by Blogger.