দ. আমেরিকার ‘বাম দুর্গ’ ভাঙার মিশনে আমেরিকা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সিআইএ’র থাবায় রক্তাক্ত হয়েছিল আফ্রিকা। আর এখন এনএসএ’র দাবার প্রতিটা চালেই থাকে উত্তর আমেরিকা। হ্যাঁ, এটাই সত্য। সদ্যই প্রকাশিত হয়ে পড়েছে এ তথ্য। লাতিন আমেরিকায় একক আধিপত্য বিস্তারের জন্য পাঁচ বছর মেয়াদি কূটপরিকল্পনা করেছিল মার্কিনিরা। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনএসএ’র ‘গোপন মিশনসংক্রান্ত’ ফাঁস হওয়া নথি থেকে জানা যায়- এবার বাম দুর্গে একক আধিপত্য চায় আমেরিকা। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত ১৬৬টি নথি ‘দি ইন্টারসেপ্ট ডটকমে’ প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটটির মালিক পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক গ্রেন গ্রিনওয়ার্ল্ড মঙ্গলবার নথিগুলো আপলোড করেন। সিআইএ’র সাবেক কর্মী অ্যাডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা ২০১৩ সালের তথ্যগুলো থেকেই এই গোপন নথিগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সিডটুডে ফাইলস : দি ইন্টারসেপ্ট ডটকমে ‘স্নোডেন আর্কাইভ-দ্য সিডটুডে ফাইলস’ নামে প্রথম ধাপের নথি প্রকাশ করা শুরু হয়েছে। ‘দ্য সিডটুডে’ হল এনএসএ’র গোপন নিউজ লেটার যা শুধু অভ্যন্তরীণ তথ্য বিনিময়ের জন্যই ব্যবহার করা হয়। ২০০৩ সালের ৩১ মার্চ এটি যাত্রা শুরু করে। ঠিক শুরুর দিন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এ নিউজ লেটারের সব গোপন নথি প্রকাশিত হয়ে পড়েছে। নথিগুলো পর্যবেক্ষণ করে আপলোডকৃত আর্কাইভের ভূমিকাতে গ্রিনওয়ার্ল্ড বলেন, ‘বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এনএসএ’র কৌশল ও ধারাবাহিক পর্যালোচনা, ইরাকে মার্কিন অভিযান, বিভিন্ন শক্তিশালী সংস্থা এবং রাষ্ট্রের নতুন নেতৃত্ব নিয়োগের বিষয়ে মার্কিন তৎপরতাসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য আছে এখানে। এ ছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইল, ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ডিভাইস নজরদারির ব্যাপারে এনএসএ’র জড়িত থাকার স্পষ্ট প্রমাণ আছে।’
লাতিন আমেরিকায় অস্থিরতা সৃষ্টিতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা : লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রবিরোধী অবস্থানকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করেছিল এনএসএ। শুধু তাই নয়, লাতিন আমেরিকায় মার্কিন স্বার্থ অক্ষুণœ রাখতে বিশেষ বাহিনীকে নিয়মিতই প্রশিক্ষণ দিত সংস্থাটি। এমনকি এনএসএ’র কর্মকর্তাদেরও লাতিন আমেরিকা বিষয়ে দক্ষ করে তোলার জন্য ‘স্কুল অব আমেরিকা’য় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ‘লাতিন আমেরিকান ভবিষ্যৎ প্রজেক্ট’ নামে একটি কোর্স খুলে সেখানে আন্দিজ পর্বতাঞ্চলের দেশসমূহ এবং ব্রাজিলের ব্যাপারে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা পেশ করে তা অধ্যয়ন করানো হয়েছে তাদের। তারপর পাঠানো হয়েছে নিজ নিজ দায়িত্ব বাস্তবায়নে। ভেনিজুয়েলা, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, চিলি এবং পেরুতে মার্কিন স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চল থেকে ক্রমেই বামপন্থার উচ্ছেদ এবং মার্কিনপন্থী নেতাদের ক্ষমতায়নের ব্যাপারেও বলা হয়েছে। লাতিন আমেরিকাসংক্রান্ত এ প্রকল্পটিকে আধুনিককালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন প্রজেক্ট বলা যাবে কি-না তা নিয়ে ইন্টারসেপ্টার ওয়েবসাইটে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ইউরেশিয়ায় ‘রাশিয়া ফ্যাক্টর’ মার্কিন মাথাব্যথা : মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এনএসএ’র কাছে রাশিয়ার অপরাধ চিত্র এবং অপরাধীদের ব্যাপারে বারবার তথ্য চেয়েছে বলেও সাক্ষী দিচ্ছে নথিগুলো। এদিকে বুধবারের সিবিএস নিউজ বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেশটির মাফিয়া ডন কুমারিনের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সে ব্যাপারেও দীর্ঘদিন সময় ব্যয় করেছে এনএসএ।
ইরাকে ‘আবু গারিবে’ নারকীয় তৎপরতার পটভূমি রচনা : ইরাকে মার্কিন অভিযানের একপর্যায়ে সেনাবাহিনী এবং সিআইএ’র সঙ্গে যৌথভাবে জড়িয়ে পড়ে এনএসএ। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে ইরাকের বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিয়ে বাগদাদে একজন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এবং সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে পরামর্শ দেয় এনএসএ। এ ছাড়া আবু গারিব কারাগারে বন্দিদের কাছ থেকে তথ্য পেতে নির্মমতম উপায় অবলম্বনের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। সে বছর জুন মাসের নিউজ লেটারে দেখা যায়, মেজর জেনারেল রিচার্ড জে কোয়ের্ক আবু গারিবকে বন্দি নির্যাতনের গবেষণাগার বানানোর পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছেন।
গুয়ানতানামো কারাগারে বিভীষিকা ছড়ানোর প্রস্তুতি : নথি থেকে দেখা যায় যে, কিউবার গুয়ানতানামো কারাগারের জিজ্ঞাসাবাদ এবং নির্যাতন পদ্ধতিকে এনএসএ’র এক কর্মকর্তা নিজেই ‘দুঃস্বপ্ন এবং বিভীষিকাময়’ বলে অভিহিত করেছেন। এনএসএ’র সরাসরি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এফবিআই ও সিআইএ সবাই একসঙ্গে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদে অংশগ্রহণ করো।’ প্রত্যুত্তরে এক এফবিআই কর্মকর্তা সেখানকার নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা হল- ‘বন্দিদের গলায় শিকল পরিয়ে কুকুর ভঙ্গিমা করানো, পেটানো, পানি থেরাপি প্রয়োগ, উচ্চ শব্দ, আলো ও তাপ দিয়ে অভিনব পন্থায় জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে।’
মধ্যরাতে বসনিয়ায় অভিযান : ২০০২ সালে বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভোতে মার্কিন দূতাবাসে হামলার অভিযোগে ৬ নাগরিককে তুলে নিয়ে যায় আমেরিকা। বসনিয়ার আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও আমেরিকার চাপে তাদেরকে সারায়েভো শহর ত্যাগ করতে নিষেধাজ্ঞা দেয় বসনিয়া সরকার। পরে একদিন মাঝরাতে সারায়েভোতে অতি গোপন এক সামরিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে তুলে নিয়ে যায় আমেরিকা। এই ৬ বন্দির স্থান হয় গুয়ানতানামো কারাগারে।
লাতিন আমেরিকায় অস্থিরতা সৃষ্টিতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা : লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রবিরোধী অবস্থানকে শক্তিশালী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করেছিল এনএসএ। শুধু তাই নয়, লাতিন আমেরিকায় মার্কিন স্বার্থ অক্ষুণœ রাখতে বিশেষ বাহিনীকে নিয়মিতই প্রশিক্ষণ দিত সংস্থাটি। এমনকি এনএসএ’র কর্মকর্তাদেরও লাতিন আমেরিকা বিষয়ে দক্ষ করে তোলার জন্য ‘স্কুল অব আমেরিকা’য় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ‘লাতিন আমেরিকান ভবিষ্যৎ প্রজেক্ট’ নামে একটি কোর্স খুলে সেখানে আন্দিজ পর্বতাঞ্চলের দেশসমূহ এবং ব্রাজিলের ব্যাপারে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা পেশ করে তা অধ্যয়ন করানো হয়েছে তাদের। তারপর পাঠানো হয়েছে নিজ নিজ দায়িত্ব বাস্তবায়নে। ভেনিজুয়েলা, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, চিলি এবং পেরুতে মার্কিন স্বার্থ প্রতিষ্ঠা করার জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চল থেকে ক্রমেই বামপন্থার উচ্ছেদ এবং মার্কিনপন্থী নেতাদের ক্ষমতায়নের ব্যাপারেও বলা হয়েছে। লাতিন আমেরিকাসংক্রান্ত এ প্রকল্পটিকে আধুনিককালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন প্রজেক্ট বলা যাবে কি-না তা নিয়ে ইন্টারসেপ্টার ওয়েবসাইটে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ইউরেশিয়ায় ‘রাশিয়া ফ্যাক্টর’ মার্কিন মাথাব্যথা : মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এনএসএ’র কাছে রাশিয়ার অপরাধ চিত্র এবং অপরাধীদের ব্যাপারে বারবার তথ্য চেয়েছে বলেও সাক্ষী দিচ্ছে নথিগুলো। এদিকে বুধবারের সিবিএস নিউজ বলছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে দেশটির মাফিয়া ডন কুমারিনের কোনো সম্পর্ক আছে কিনা সে ব্যাপারেও দীর্ঘদিন সময় ব্যয় করেছে এনএসএ।
ইরাকে ‘আবু গারিবে’ নারকীয় তৎপরতার পটভূমি রচনা : ইরাকে মার্কিন অভিযানের একপর্যায়ে সেনাবাহিনী এবং সিআইএ’র সঙ্গে যৌথভাবে জড়িয়ে পড়ে এনএসএ। ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে ইরাকের বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিয়ে বাগদাদে একজন সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষজ্ঞ নিয়োগ এবং সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে পরামর্শ দেয় এনএসএ। এ ছাড়া আবু গারিব কারাগারে বন্দিদের কাছ থেকে তথ্য পেতে নির্মমতম উপায় অবলম্বনের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। সে বছর জুন মাসের নিউজ লেটারে দেখা যায়, মেজর জেনারেল রিচার্ড জে কোয়ের্ক আবু গারিবকে বন্দি নির্যাতনের গবেষণাগার বানানোর পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছেন।
গুয়ানতানামো কারাগারে বিভীষিকা ছড়ানোর প্রস্তুতি : নথি থেকে দেখা যায় যে, কিউবার গুয়ানতানামো কারাগারের জিজ্ঞাসাবাদ এবং নির্যাতন পদ্ধতিকে এনএসএ’র এক কর্মকর্তা নিজেই ‘দুঃস্বপ্ন এবং বিভীষিকাময়’ বলে অভিহিত করেছেন। এনএসএ’র সরাসরি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এফবিআই ও সিআইএ সবাই একসঙ্গে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদে অংশগ্রহণ করো।’ প্রত্যুত্তরে এক এফবিআই কর্মকর্তা সেখানকার নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছেন তা হল- ‘বন্দিদের গলায় শিকল পরিয়ে কুকুর ভঙ্গিমা করানো, পেটানো, পানি থেরাপি প্রয়োগ, উচ্চ শব্দ, আলো ও তাপ দিয়ে অভিনব পন্থায় জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে।’
মধ্যরাতে বসনিয়ায় অভিযান : ২০০২ সালে বসনিয়ার রাজধানী সারায়েভোতে মার্কিন দূতাবাসে হামলার অভিযোগে ৬ নাগরিককে তুলে নিয়ে যায় আমেরিকা। বসনিয়ার আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও আমেরিকার চাপে তাদেরকে সারায়েভো শহর ত্যাগ করতে নিষেধাজ্ঞা দেয় বসনিয়া সরকার। পরে একদিন মাঝরাতে সারায়েভোতে অতি গোপন এক সামরিক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে তুলে নিয়ে যায় আমেরিকা। এই ৬ বন্দির স্থান হয় গুয়ানতানামো কারাগারে।
No comments