‘সংকটময় পরিস্থিতি’ নিয়ে ইইউ সম্মেলন
স্লোভাকিয়ার ব্রাতিস্লাভা দুর্গের বাইরে ‘ফ্যামিলি ফটো’ তোলার জন্য গতকাল সার বেঁধে দাঁড়ান ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। রয়টার্স |
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ নেতারা ভবিষ্যতের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে আলোচনায় বসেছেন। গতকাল শুক্রবার স্লোভাকিয়ার রাজধানী ব্রাতিস্লাভায় এ বৈঠক শুরু হয়। এতে প্রভাবশালী সদস্য যুক্তরাজ্যের ইইউ ত্যাগ-পরবর্তী অবস্থা, অভিবাসন নিয়ে মতভেদ, নিরাপত্তা ও বিশ্বায়ন গুরুত্ব পাচ্ছে। যুক্তরাজ্য ‘ব্রেক্সিট’ অর্থাৎ ইইউ ত্যাগের পক্ষে ভোট দেওয়ায় দেশটিকে ছাড়াই ইইউ–এর এবারের সম্মেলন বসেছে। ব্রেক্সিট ভোটের পর এটাই জোটটির প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। ব্রাতিস্লাভায় দানিয়ুব নদী তীরবর্তী একটি দুর্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন ইইউর ২৭ নেতা। সংকট থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পেতে ‘নির্মম সততা’ দেখাতে হবে বলে তাঁরা পরস্পরকে সতর্ক করে দেন। ভবিষ্যতের একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে এ বৈঠকের পর আরও একাধিক সম্মেলন করে রোমে আগামী বছরের মার্চে সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হবে। উল্লেখ্য, আগামী বছর ইইউর প্রতিষ্ঠা চুক্তির ৬০তম বার্ষিকী। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, ‘আমরা একটা সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে আছি। নিজেদের কাজের মাধ্যমে দেখিয়ে দিতে হবে, আমরা আরও ভালো করতে পারি। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ইইউর ভেতরে-বাইরে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা জোরদার করতে হবে।’
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বলেন, ‘ইইউর নেতাদের সবাই ঐক্য দেখাতে চান। কিন্তু সেটা সহজ হবে না। ব্রেক্সিটের পরে ও তার সঙ্গে যুক্ত নানা রকম ঝুঁকির কারণে অত্যন্ত সৎ হওয়ার প্রয়োজন খুব বেশি করে দেখা দিয়েছে।’ অবশ্য অভিবাসন সমস্যা নিয়ে ফিকো নিজেই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি ‘একজন মুসলিমকেও’ সুযোগ দিতে নারাজ। ইউরোপের পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর নেতাদের অনেকে তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। অভিবাসন সংকট নিয়ে উত্তেজনার আরেকটি ইঙ্গিত মেলে লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি এ বিষয়ে কঠোর মনোভাবাপন্ন হাঙ্গেরিকে ইইউ থেকে বের করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চলতি সপ্তাহে। যুদ্ধকবলিত সিরিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের সঙ্গে হাঙ্গেরি ‘পশুর’ মতো আচরণ করেছে বলেই অভিযোগ তাঁর। ইইউর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক এবারের সম্মেলন শুরুর আগে আগে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে ইইউ নেতাদের সবাইকে অবশ্যই ‘সংযম ও নির্মম সততার’ পরিচয় দিতে হবে। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, ইইউর সব দেশকে সন্ত্রাসবাদ দমনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ইউরোপকে আরও বেশি নিরাপদ রাখার জন্যই এটা জরুরি।
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো বলেন, ‘ইইউর নেতাদের সবাই ঐক্য দেখাতে চান। কিন্তু সেটা সহজ হবে না। ব্রেক্সিটের পরে ও তার সঙ্গে যুক্ত নানা রকম ঝুঁকির কারণে অত্যন্ত সৎ হওয়ার প্রয়োজন খুব বেশি করে দেখা দিয়েছে।’ অবশ্য অভিবাসন সমস্যা নিয়ে ফিকো নিজেই কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি ‘একজন মুসলিমকেও’ সুযোগ দিতে নারাজ। ইউরোপের পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর নেতাদের অনেকে তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করেন। অভিবাসন সংকট নিয়ে উত্তেজনার আরেকটি ইঙ্গিত মেলে লুক্সেমবার্গের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে। তিনি এ বিষয়ে কঠোর মনোভাবাপন্ন হাঙ্গেরিকে ইইউ থেকে বের করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চলতি সপ্তাহে। যুদ্ধকবলিত সিরিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের সঙ্গে হাঙ্গেরি ‘পশুর’ মতো আচরণ করেছে বলেই অভিযোগ তাঁর। ইইউর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক এবারের সম্মেলন শুরুর আগে আগে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে ইইউ নেতাদের সবাইকে অবশ্যই ‘সংযম ও নির্মম সততার’ পরিচয় দিতে হবে। নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট বলেন, ইইউর সব দেশকে সন্ত্রাসবাদ দমনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ইউরোপকে আরও বেশি নিরাপদ রাখার জন্যই এটা জরুরি।
অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন বন্ধ করতে হবে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়িয়ে আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে। যুক্তরাজ্য গণভোটে ইইউ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ফ্রান্সই এখন জোটের সবচেয়ে শক্তিধর সামরিক বাহিনীর অধিকারী। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ব্রাতিস্লাভায় পৌঁছানোর পর বলেন, প্রতিরক্ষার দায়িত্ব তাঁর দেশের একার নয়। পরিস্থিতি সম্পর্কে সবাই জানেন। যুক্তরাজ্য ইইউ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন ইউরোপের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জ্যঁ-ক্লদ ইয়ুঙ্কার ইইউর একটি প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য চলতি সপ্তাহে প্রস্তাব দিয়েছেন। যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরেই ইইউ সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করছিল। এ জন্য তারা ন্যাটো বাহিনীর গুরুত্ব হ্রাসের ঝুঁকির যুক্তি দেখিয়েছিল। ৫০ কোটি জনগণের জোট ইইউ ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার পর থেকে নানামুখী চাপে রয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ, অভিবাসন সংকট এবং ইউরোপের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের একের পর এক হামলা ইত্যাদি ঘটনায় ইইউর আত্মবিশ্বাস যেমন কমেছে, তেমনি এই জোট তার নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পারে কি না, তা নিয়েও একধরনের সংশয় তৈরি হয়েছে।
No comments