খালিস্তান ইস্যু: ভারতে শীতল অভ্যর্থনা পেলেন জাস্টিন ট্রুডো
সপ্তাহব্যাপী
সফরে ভারতে অবস্থান করছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কিন্তু
দু’দিন পার হয়ে গেলেও উষ্ণ অভ্যর্থনার বদলে ভারতের পক্ষ থেকে শীতলতাই
জুটেছে তার কপালে। সোমবার তিনি তাজমহল সফর করেছেন। দেখেছেন আগ্রায় হাতির
অভয়ারণ্য। দিল্লি বিমানবন্দরে তিনি যখন পৌঁছলেন তখন তাকে স্বাগত জানাতে
উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং ও কানাডায় ভারতের রাষ্ট্রদূত বিকাশ
স্বরুপ। অথচ, সাম্প্রতিককালে কোনো সফররত সরকার প্রধানকে স্বাগত জানাতে
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই উপস্থিত থেকেছেন।
ক’দিন আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ভারত সফরে এলে মোদি বিমানবন্দরে তো উপস্থিত ছিলেনই, তার সঙ্গে কোলাকুলিও করেছেন। অথচ, ট্রুডো যখন তাজমহল দেখতে আগ্রা যান, তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। বরং জেলা প্রশাসক গৌরব দয়াল ও কমিশনার কে রামমোহন রাও ছিলেন তার সঙ্গে! ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান টুডে এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর প্রতি ভারতের এমন নিষ্প্রভ আতিথেয়তার বিশেষ কারণও থাকতে পারে। ভারত মনে করে, শিখ খালিস্তান ঘরানার প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করছে ট্রুডোর সরকার। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। উল্লেখ্য, খালিস্তান নামে শিখ ধর্মাবলম্বীদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে একাধিক সশস্ত্র আন্দোলন একসময় বেশ শক্তিশালী ছিল।
ভারতের আপত্তির জায়গা হলো, টরেন্টতে খালসা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন ট্রুডো। ওই অনুষ্ঠানে খালিস্তানের পতাকা উড়ানো হয়। প্রদর্শিত হয় সাবেক খালিস্তানি সশস্ত্র আন্দোলনের নেতা জার্নাল সিং ভিন্দ্রনওয়ালের ছবি।
কানাডায় বহু শিখ ধর্মাবলম্বীর বসবাস। অপরদিকে ভারতের পাঞ্জাব অঙ্গরাজ্যে শিখদের বসবাস বেশি। কিন্তু এই সফরে ট্রুডো পাঞ্জাব সফরে গেলেও, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। ভারতের একমাত্র শিখ অধ্যুষিত অঙ্গরাজ্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর শিং সাবেক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা। তিনি নিজে একজন শিখ হলেও, খালিস্তান আন্দোলনকারীরা তাকে শত্রু হিসেবে দেখেন। পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হরিজত সাজ্জান কয়েকদিন আগে পাঞ্জাব সফরে গেলে তার সঙ্গে সাক্ষাতে সম্মত হননি অমরিন্দর সিং। হরিজত সাজ্জানকে ‘খালিস্তানি ও ভারত-বিরোধী’ হিসেবেও আখ্যা দেন তিনি। পরে এই মন্তব্যকে আপত্তিকর বলে অভিহিত করেন হরিজত। এবার অবশ্য ট্রুডোর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন অমরিন্দর সিং। কিন্তু ট্রুডোর দল জানিয়ে দেয়, পাঞ্জাবে প্রধানমন্ত্রী গেলেও, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করবেন না।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ট্রুডোর প্রতি ভারতের এই আচরণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। কলামিস্ট ও অর্থনীতিবিদ বিবেক দেহেজিয়া বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা বেশ বড় ধরণের তিরস্কারই বটে। ট্রুডো ও তার পরিবারকে স্বাগত জানাতে একজন কনিষ্ঠ মন্ত্রী পাঠানো হয়েছে বিমানবন্দরে। এর মাধ্যমে অবশ্যই ট্রুডোকে তিরস্কার করা হচ্ছে।’ দেহেজিয়া বলেন, এর কারণ হলো ট্রুডো সরকারের কয়েকজন সদস্য একসময় খালিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ট্রুডোর উদারপন্থী দলটি শিখ-কানাডিয়ান ভোট ব্যাংকের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। তার সরকারের কয়েকজন শিখ সদস্য খালিস্তানিদের সঙ্গে ছিলেন। ট্রুডোর মন্ত্রীসভায় চারজন শিখ সদস্য রয়েছেন।
তবে কানাডায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত বিষ্ণু প্রকাশ এই ধরণের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। বলছেন, ট্রুডোকে মোটেই খাটো করা হচ্ছে না। তার দাবি, ট্রুডোর বেলায় ঠিকভাবে প্রটৌকল মেনে চলছে ভারত। নিয়ম হলো, একজন বিদেশী সরকার প্রধানকে স্বাগত জানাবেন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেটাই হয়েছে। অন্যবার প্রধানমন্ত্রী মোদি উপস্থিত থেকে এই নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটিয়েছেন। প্রত্যেক বিদেশী সরকার প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানাবেন, এমনটা আশা করা উচিত নয় বলে তার মন্তব্য।
সাবেক কূটনীতিক কানওয়াল সিবাল অবশ্য ট্রুডোর প্রতি ভারতের আচরণ নিয়ে অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, খালিস্তান নিয়ে পূর্বধারণা থেকে প্রভাবিত হয়ে ভারতের উচিত হয়নি ট্রুডোর সফরের শুরুটা এভাবে করা। বরং, ভারতের উচিত ছিল এই সফরকে ব্যবহার করে খালিস্তান নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা কানাডাকে অবহিত করা। তবে তিনিও মনে করেন না, ভারত ট্রুডোকে তিরস্কার বা খাটো করছে। তিনি বলেন, ভারত প্রটৌকলের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মই মেনেছে।
এই সপ্তাহে মুম্বইয়ে ব্যবসায়ীদের একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেবেন ট্রুডো। কথা বলবেন চলচ্চিত্র শিল্পের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও। ২৩শে ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ট্রুডো। তাদের আলোচনায় বাণিজ্য ও ব্যবসা ছাড়া বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা, বিজ্ঞান, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও শিক্ষা সংক্রান্ত ইস্যু প্রাধান্য পাবে।
ক’দিন আগে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ভারত সফরে এলে মোদি বিমানবন্দরে তো উপস্থিত ছিলেনই, তার সঙ্গে কোলাকুলিও করেছেন। অথচ, ট্রুডো যখন তাজমহল দেখতে আগ্রা যান, তাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। বরং জেলা প্রশাসক গৌরব দয়াল ও কমিশনার কে রামমোহন রাও ছিলেন তার সঙ্গে! ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান টুডে এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর প্রতি ভারতের এমন নিষ্প্রভ আতিথেয়তার বিশেষ কারণও থাকতে পারে। ভারত মনে করে, শিখ খালিস্তান ঘরানার প্রতিষ্ঠানকে সমর্থন করছে ট্রুডোর সরকার। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। উল্লেখ্য, খালিস্তান নামে শিখ ধর্মাবলম্বীদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে একাধিক সশস্ত্র আন্দোলন একসময় বেশ শক্তিশালী ছিল।
ভারতের আপত্তির জায়গা হলো, টরেন্টতে খালসা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন ট্রুডো। ওই অনুষ্ঠানে খালিস্তানের পতাকা উড়ানো হয়। প্রদর্শিত হয় সাবেক খালিস্তানি সশস্ত্র আন্দোলনের নেতা জার্নাল সিং ভিন্দ্রনওয়ালের ছবি।
কানাডায় বহু শিখ ধর্মাবলম্বীর বসবাস। অপরদিকে ভারতের পাঞ্জাব অঙ্গরাজ্যে শিখদের বসবাস বেশি। কিন্তু এই সফরে ট্রুডো পাঞ্জাব সফরে গেলেও, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন না। ভারতের একমাত্র শিখ অধ্যুষিত অঙ্গরাজ্য পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর শিং সাবেক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা। তিনি নিজে একজন শিখ হলেও, খালিস্তান আন্দোলনকারীরা তাকে শত্রু হিসেবে দেখেন। পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হরিজত সাজ্জান কয়েকদিন আগে পাঞ্জাব সফরে গেলে তার সঙ্গে সাক্ষাতে সম্মত হননি অমরিন্দর সিং। হরিজত সাজ্জানকে ‘খালিস্তানি ও ভারত-বিরোধী’ হিসেবেও আখ্যা দেন তিনি। পরে এই মন্তব্যকে আপত্তিকর বলে অভিহিত করেন হরিজত। এবার অবশ্য ট্রুডোর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন অমরিন্দর সিং। কিন্তু ট্রুডোর দল জানিয়ে দেয়, পাঞ্জাবে প্রধানমন্ত্রী গেলেও, সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করবেন না।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ট্রুডোর প্রতি ভারতের এই আচরণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন। কলামিস্ট ও অর্থনীতিবিদ বিবেক দেহেজিয়া বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা বেশ বড় ধরণের তিরস্কারই বটে। ট্রুডো ও তার পরিবারকে স্বাগত জানাতে একজন কনিষ্ঠ মন্ত্রী পাঠানো হয়েছে বিমানবন্দরে। এর মাধ্যমে অবশ্যই ট্রুডোকে তিরস্কার করা হচ্ছে।’ দেহেজিয়া বলেন, এর কারণ হলো ট্রুডো সরকারের কয়েকজন সদস্য একসময় খালিস্তান আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তিনি আরও বলেন, ট্রুডোর উদারপন্থী দলটি শিখ-কানাডিয়ান ভোট ব্যাংকের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল। তার সরকারের কয়েকজন শিখ সদস্য খালিস্তানিদের সঙ্গে ছিলেন। ট্রুডোর মন্ত্রীসভায় চারজন শিখ সদস্য রয়েছেন।
তবে কানাডায় ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত বিষ্ণু প্রকাশ এই ধরণের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। বলছেন, ট্রুডোকে মোটেই খাটো করা হচ্ছে না। তার দাবি, ট্রুডোর বেলায় ঠিকভাবে প্রটৌকল মেনে চলছে ভারত। নিয়ম হলো, একজন বিদেশী সরকার প্রধানকে স্বাগত জানাবেন একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। সেটাই হয়েছে। অন্যবার প্রধানমন্ত্রী মোদি উপস্থিত থেকে এই নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটিয়েছেন। প্রত্যেক বিদেশী সরকার প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানাবেন, এমনটা আশা করা উচিত নয় বলে তার মন্তব্য।
সাবেক কূটনীতিক কানওয়াল সিবাল অবশ্য ট্রুডোর প্রতি ভারতের আচরণ নিয়ে অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, খালিস্তান নিয়ে পূর্বধারণা থেকে প্রভাবিত হয়ে ভারতের উচিত হয়নি ট্রুডোর সফরের শুরুটা এভাবে করা। বরং, ভারতের উচিত ছিল এই সফরকে ব্যবহার করে খালিস্তান নিয়ে নিজের উদ্বেগের কথা কানাডাকে অবহিত করা। তবে তিনিও মনে করেন না, ভারত ট্রুডোকে তিরস্কার বা খাটো করছে। তিনি বলেন, ভারত প্রটৌকলের ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মই মেনেছে।
এই সপ্তাহে মুম্বইয়ে ব্যবসায়ীদের একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেবেন ট্রুডো। কথা বলবেন চলচ্চিত্র শিল্পের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও। ২৩শে ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ট্রুডো। তাদের আলোচনায় বাণিজ্য ও ব্যবসা ছাড়া বেসামরিক পরমাণু সহযোগিতা, বিজ্ঞান, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও শিক্ষা সংক্রান্ত ইস্যু প্রাধান্য পাবে।
No comments