সুরমা নদীর ভাঙন
সুরমা
নদীর ভাঙনে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সড়ক, দোকানপাট ও বসতঘর বিলীন
হওয়ার খবর আসছে। কিন্তু নদীটির ভাঙন রোধে কোনো উদ্যোগ নেই। সুরমা নদীর ভাঙন
চলছে চার বছর ধরে। ইতিমধ্যে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনের অংশে ১০০ মিটারের
মতো পাকা সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। মূল সড়ক ভাঙার পর আড় দিয়ে কিছু বস্তা
ফেলা হয়েছিল। সেগুলোও এখন ভেঙে যাচ্ছে। যেকোনো সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে
যেতে পারে। অন্তত ৩০টি দোকানঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন ঝুঁকিতে রয়েছে
উপজেলা পরিষদের ভবনসহ আরও শতাধিক দোকান ও বসতঘর। পাশের কয়েকটি গ্রামও
হুমকিতে রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা চার বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসন, পানি
উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাছে নদীভাঙন প্রতিরোধের
দাবি জানিয়ে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসন এ ব্যাপারে পাউবোর কাছে সুপারিশ করেছে।
এলাকার সাংসদ মুহিবুর রহমান এ নিয়ে জাতীয় সংসদে কথা বলেছেন। কিন্তু তারপরও
নদীভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ভাঙন রোধে এখনই উদ্যোগ নেওয়া
দরকার, নইলে পুরো এলাকাই নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে। এ জন্য পানিসম্পদ
মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় পাউবোকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। নদীভাঙন রোধে দ্রুত
প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনকেও এ ব্যাপারে তৎপর হতে হবে।
সাধারণত দেখা যায়, স্থানীয় প্রশাসন থেকে চাপ না এলে বা কোনো কাজের গুরুত্ব
যথাযথভাবে তুলে ধরতে না পারলে এ ধরনের কাজে অর্থের বরাদ্দ বা প্রকল্প পাস
করানো সহজ হয় না। পাউবো সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সূত্রে
জানা গেছে, দোয়ারাবাজারে সুরমা নদীর ভাঙন প্রতিরোধে একটি প্রকল্পের
প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আছে। আমরা চাই প্রকল্পটি দ্রুত অনুমোদন করা
হোক। আমাদের দেশে নদী–তীরবর্তী মাটির তলদেশ ক্ষয়ে যাওয়া, বন্যার তীব্রতা
বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত খনন, নদীর গতিপথ পরিবর্তন, নদীতে অপরিকল্পিত বাঁধ,
গ্রোয়েন নির্মাণসহ নানা কারণে নদীভাঙন হয়। সরকারি উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন
স্থানে নদীভাঙন রোধে নেওয়া হয় নানা প্রকল্প। ব্লক ফেলাসহ নেওয়া হয় নানা
ব্যবস্থা। এতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও এসব ব্যবস্থা স্থায়ী হয় না। আমরা
চাই, সুরমা নদীসহ দেশের অন্যান্য নদীতে সৃষ্ট ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা
নেওয়া হোক।
No comments