এসো হে বৈশাখ...
১৪২৪ বাংলা নববর্ষের হালখাতা খোলা হবে আগামীকাল। বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংস্কৃতিতে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার প্রথা ও পদ্ধতিতে এসেছে পরিবর্তন। এ পরিবর্তনের হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিচ্ছেন অনেকেই। এখন পহেলা বৈশাখ মানেই যেন পান্তা-ইলিশ। চকচকে পোশাকে খাঁটি বাঙালিয়ানা প্রকাশের একটি দিন। পরিবর্তিত এ রঙে গা ভাসিয়েছেন শোবিজের তারকারাও। তাই তারকাদের তারকা হয়ে ওঠার আগের বৈশাখ এবং ইট-পাথর আর যান্ত্রিক শহরে নিয়ে বর্তমানের বৈশাখ পালনের বিষয়-আশয় নিয়ে আজকের আয়োজন-
পহেলা বৈশাখে ঢাকায় থাকব- অনন্ত ও বর্ষা
বাংলা নববর্ষে সাধারণত দেশে থাকার চেষ্টা করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের তারকা দম্পতি অনন্ত ও বর্ষা। বরাবরের মতো এবারও ঢাকায় থাকছেন এ তারকা জুটি। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বেশ প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে অনন্ত বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে এবার ঢাকাতেই থাকছি। সাধারণত বৈশাখী আয়োজনের সব দায়িত্ব বর্ষাই পালন করে। সকাল থেকে বাসাতেই থাকব। দিনের যে কোনো অংশে আরিজ ও বর্ষাকে নিয়ে বের হতে পারি। রাতে কিছু পারিবারিক প্রোগ্রামে অংশ নেব। এর বাইরে আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই।’ বৈশাখে পান্তা-ইলিশ সংস্কৃতিতে কতটা বিশ্বাস করেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রথা চলে আসছে। এটা যে পালন করতেই হবে তা কিন্তু নয়। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী বৈশাখ উদযাপন করবে।’ দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বর্ষা বলেন, ‘বৈশাখ উপলক্ষে আগে থেকেই কেনাকাটা করেছি। বিশেষ করে আরিজের জন্য কেনাকাটা করতেই হয়। ও এখন অনেক কিছু বুঝতে পারে। কিছু কেনাকাটা করতে গেলে পছন্দের বিষয়টা বুঝতে পারে। আমিও ওর পছন্দকে গুরুত্ব দিই। সকালে পান্তা-ইলিশের আয়োজন করেছি। সবকিছু আমি নিজের হাতেই রান্না করব।’ আরিজ কী পান্তা-ইলিশের বিষয়টি বুঝতে পারে? এমন প্রশ্নে বর্ষা বলেন, ‘এখনও ঠিক বুঝতে পারে না। তবে আমরা কী করছি সেটি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে।’ এই যে পান্তা-ইলিশের যে আয়োজন, এটা কী বৈশাখ পালনের জন্য খুব জরুরি? এ প্রশ্নে বর্ষা বলেন, ‘জরুরি তা কিন্ত বলছি না। দীর্ঘদিন ধরে বাঙালি সংস্কৃতিতে এ আয়োজনটা জড়িয়ে আছে। তাই আমরাও পালন করি। তবে সবার সাধ্যের মধ্যে নিজেদের মতো করে বৈশাখ পালন করা উচিত।’ বাংলা নববর্ষ শুধু একদিনের আয়োজনেই সীমাবদ্ধ। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? বর্ষা বলেন, ‘এটা সত্যি যে, পহেলা বৈশাখ এলেই বাংলা নববর্ষের কথা আমরা স্মরণ করি। এটা ঠিক না। বাংলা ভাষার জন্য আমরা প্রাণ দিয়েছি। ভাষার জন্য প্রাণ দেয়ার ইতিহাস কিন্তু বিশ্বের আর কোনো দেশে নেই। সুতরাং এ ভাষাকে ভালোবেসে বাংলা নববর্ষের কথা বছরব্যাপী স্মরণ রাখা উচিত। তাহলে বাংলা ভাষাকে সম্মান করা হবে বলে আমি মনে করি।
পহেলা বৈশাখে ঢাকায় থাকব- অনন্ত ও বর্ষা
বাংলা নববর্ষে সাধারণত দেশে থাকার চেষ্টা করেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের তারকা দম্পতি অনন্ত ও বর্ষা। বরাবরের মতো এবারও ঢাকায় থাকছেন এ তারকা জুটি। দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বেশ প্রস্তুতিও নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে অনন্ত বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে এবার ঢাকাতেই থাকছি। সাধারণত বৈশাখী আয়োজনের সব দায়িত্ব বর্ষাই পালন করে। সকাল থেকে বাসাতেই থাকব। দিনের যে কোনো অংশে আরিজ ও বর্ষাকে নিয়ে বের হতে পারি। রাতে কিছু পারিবারিক প্রোগ্রামে অংশ নেব। এর বাইরে আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই।’ বৈশাখে পান্তা-ইলিশ সংস্কৃতিতে কতটা বিশ্বাস করেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি। দীর্ঘদিন ধরে এ প্রথা চলে আসছে। এটা যে পালন করতেই হবে তা কিন্তু নয়। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী বৈশাখ উদযাপন করবে।’ দিনটি উদযাপন উপলক্ষে বর্ষা বলেন, ‘বৈশাখ উপলক্ষে আগে থেকেই কেনাকাটা করেছি। বিশেষ করে আরিজের জন্য কেনাকাটা করতেই হয়। ও এখন অনেক কিছু বুঝতে পারে। কিছু কেনাকাটা করতে গেলে পছন্দের বিষয়টা বুঝতে পারে। আমিও ওর পছন্দকে গুরুত্ব দিই। সকালে পান্তা-ইলিশের আয়োজন করেছি। সবকিছু আমি নিজের হাতেই রান্না করব।’ আরিজ কী পান্তা-ইলিশের বিষয়টি বুঝতে পারে? এমন প্রশ্নে বর্ষা বলেন, ‘এখনও ঠিক বুঝতে পারে না। তবে আমরা কী করছি সেটি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে।’ এই যে পান্তা-ইলিশের যে আয়োজন, এটা কী বৈশাখ পালনের জন্য খুব জরুরি? এ প্রশ্নে বর্ষা বলেন, ‘জরুরি তা কিন্ত বলছি না। দীর্ঘদিন ধরে বাঙালি সংস্কৃতিতে এ আয়োজনটা জড়িয়ে আছে। তাই আমরাও পালন করি। তবে সবার সাধ্যের মধ্যে নিজেদের মতো করে বৈশাখ পালন করা উচিত।’ বাংলা নববর্ষ শুধু একদিনের আয়োজনেই সীমাবদ্ধ। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? বর্ষা বলেন, ‘এটা সত্যি যে, পহেলা বৈশাখ এলেই বাংলা নববর্ষের কথা আমরা স্মরণ করি। এটা ঠিক না। বাংলা ভাষার জন্য আমরা প্রাণ দিয়েছি। ভাষার জন্য প্রাণ দেয়ার ইতিহাস কিন্তু বিশ্বের আর কোনো দেশে নেই। সুতরাং এ ভাষাকে ভালোবেসে বাংলা নববর্ষের কথা বছরব্যাপী স্মরণ রাখা উচিত। তাহলে বাংলা ভাষাকে সম্মান করা হবে বলে আমি মনে করি।
আগের দিনগুলোতে ফিরে যেতে ইচ্ছে করে- পরীমনি
সিনেমায় কাজ করার আগে সব উৎসবই বেশ আয়োজন করে পালন করা হতো। কিন্তু নায়িকা হওয়ার পর ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ফলে আগের মতো আর উৎসবগুলো পালন করা হয় না। নববর্ষও আহামরি আয়োজন করে পালন করতে পারি না। বেশিরভাগ নববর্ষ শুটিং স্পটেই পালন করি। এবারের নববর্ষও শুটিংয়ের ব্যস্ততাতেই কেটে যাবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ আগে থেকেই শিডিউল দেয়া আছে। পান্তা-ইলিশ শুটিং স্পটের সবার সঙ্গেই খাব। তবে ব্যস্ত থাকলেও আমি মনে প্রাণে বাঙালি। বাঙালিয়ানা নিজের ভেতরে ধারণ করি। অনেকেই বলে থাকেন পান্তা-ইলিশ না খেলে নাকি বৈশাখ পালন হয় না। আমি এ ধারণার বিপক্ষে। বাঙালিয়ানা আমাদের ধারণ করার বিষয়। নববর্ষ উপলক্ষে যতটা পারি অন্যকে সহায়তা করব। গরিব অসহায়কে উৎসব পালনে সহায়তা করব। অন্যের সুখের মাঝেই সুখ খুঁজে নেব। শুধু বৈশাখেই নয়, প্রতিটি উৎসবেই আমি গরিব-দুঃখীদের নিয়ে পালন করার চেষ্টা করি। পাশাপাশি শুটিং না থাকলে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের সময় দিই। অনেকের দাওয়াতে যোগ দিই। তাদের সঙ্গে পান্তা-ইলিশ খাই। দূরে কোথাও ঘুরতে যাই। নববর্ষে রাস্তায় বের হলে সবাইকে বাঙালি সাজের পোশাকে দেখতে দারুণ লাগে। গাড়ি থেকে নেমে তাদের সঙ্গে আমারও হাঁটতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু এখনকার পরিচয়ের কারণে সেটা আর সম্ভব হয় না। তবে প্রত্যেক নববর্ষে আগের দিনগুলো খুব মিস করি। ইচ্ছা করে সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে। যদিও এটা এখন আর সম্ভব নয়।
পরিবারের সঙ্গেই বৈশাখ উদযাপন করব- মাহিয়া মাহি
পহেলা বৈশাখের দিন মনে হয় শুটিং রয়েছে। তবে শুটিং থাকলেও দিনটি শ্বশুরবাড়ি আর নিজের বাড়ির লোকজনের সঙ্গেই কাটানোর ইচ্ছা। ছোটবেলা থেকেই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার মাধ্যমে নববর্ষ পালন করে আসছি। এখনও তার ব্যতিক্রম হয় না। তবে এ পান্তা-ইলিশ খাওয়াকে কিন্তু আমি বাঙালিয়ানা মনে করি না। এটা আমার কাছে নববর্ষ পালনের একটা অংশ। বাঙালিত্ব তো আমাদের মনে ধারণ করতে হবে। একেক দেশের নববর্ষ একেক আয়োজনে পালন করে। কোনো দেশ সারা রাত আতশবাজি করে পালন করে, কোনো দেশ আবার নেচে গেয়ে পালন করে। আমরা বাঙালিরা করি পান্তা-ইলিশ খাওয়া আর বাঙালি পোশাক পরে ঘুরে বেড়িয়ে। এটা প্রত্যেকের নিজস্ব সংস্কৃতির বিষয়। কীভাবে পালন হল সেটি মুখ্য নয়, আমার কাছে উৎসবটাই মুখ্য। আনন্দ করাটাই আসল। তবে যারা বলে পান্তা-ইলিশ না হলে নববর্ষ পালন হয় না বলেন, তাদের আমার কাছে কখনই বাঙালি মনে হয়নি। তারা হচ্ছেন মৌসুমি বাঙালি। বাঙালিয়ানা পান্তা-ইলিশ নয়, মনে প্রাণে বাংলা সংস্কৃতি ধারণ করার বিষয়।
এবারের নববর্ষ স্বামী-সন্তান নিয়েই পালন করব- চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস
ছোটবেলার সব অনুষ্ঠানই নানা রঙের আনন্দে কেটেছে। সে সময়ের বৈশাখ পালনও ঈদের মতো আনন্দে কেটেছে। পহেলা বৈশাখেও ঈদের মতো সালামি বা উপহার পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম। ইলিশ মাছ খাওয়ার সংস্কৃতিটাও উপস্থিত ছিল। গ্রামে বৈশাখ উপলক্ষে মেলা বসলেও আমার কখনও মেলায় যাওয়া হয়নি। কারণ ভিড় ঠেলে মেলায় যাওয়াটা একদমই পছন্দ করতাম না। মেলা থেকে যে মিষ্টিজাতীয় খাবারগুলো আনা হতো তা খাওয়া কখনই মিস করতাম না। কিন্তু এখন শহুরের যান্ত্রিক জীবনযাপন আর ব্যস্ততার আড়ালে গ্রাম্য পহেলা বৈশাখের সবকিছুই যেন হারিয়ে ফেলেছি। তবে এবারের বৈশাখ আমার কাছে বিশেষ কিছু এ জন্যই স্বামী-সন্তান নিয়েই পালন করব।
আমার সময় কাটে পরিবার নিয়েই- সঙ্গীতশিল্পী ন্যান্সি
গান নিয়ে সারা বছরই ব্যস্ত থাকতে হয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সির। বিশেষ করে উৎসবে স্টেজ পারফর্ম করেই দিন কেটে যায় তার। এবার পহেলা বৈশাখেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। নববর্ষ উপলক্ষে নিজের নতুন অ্যালবাম নিয়েও বেশ ব্যস্ততা গেল তার। এ ব্যস্ততার মধ্যেও নববর্ষ নিয়ে পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে ন্যান্সি বলেন, গত আট বছরে পহেলা বৈশাখ কী তা বলতে পারব না। খুব আয়েশ করে পান্তা-ইলিশ খাওয়া ভুলে গেছি অনেক আগে। ছোটবেলায় পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতাম। সব বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া হতো। কিন্তু এখন কাজের ব্যস্ততার কারণে তা হয় না। তবে ছোটবেলার দিনগুলো খুব মিস করি। এখন দিনটি আমার মেয়ে আর পরিবারের অন্যদের ঘিরেই। শুধু বৈশাখ নয় সব উৎসবই এখন আমার পরিবারকে কেন্দ্র করেই।
পান্তা-ইলিশেই যেন নববর্ষ সীমাবদ্ধ- চিত্রনায়ক রিয়াজ
ঢাকাই ছবির অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ। বর্তমানে ছবির ব্যস্ততা না থাকলেও নাটকে অভিনয় ও ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ততা তার। এবারের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নাটকেও অভিনয় করছেন তিনি। পহেলা বৈশাখ ও পান্তা-ইলিশ প্রসঙ্গে তিনি জানান, শৈশবে বৈশাখ নিয়ে খুবই কম আনন্দ করতে পেরেছি। আমাদের সময় এত আয়োজন করে বৈশাখ পালন করা হতো না তখন। আগে বৈশাখ বলতে হালখাতাকেই বুঝতাম। গয়নার দোকানে গেলে মিষ্টি খাওয়া যেত। অপেক্ষা করতাম কখন বৈশাখের প্রথম দিন আসবে। নববর্ষে তখন খুব মজা হতো। বড় হওয়ার পর সে আনন্দ আর পাই না। তবে এখন কেন যেন মনে হয় শুধু পান্তা-ইলিশের মধ্যেই নববর্ষ সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। আর দিনের বেশিরভাগ সময় কাজ নিয়েই থাকি।
পান্তা-ইলিশে বিশ্বাসী নই- অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা
কাজের যে অবস্থা, হয়তো বৈশাখের দিনও শুটিং থাকবে। সমগ্র বাঙালি জাতির এত বড় আয়োজন, সবার জন্যই বেশ কাঙ্ক্ষিত ও আকর্ষণীয়। আমার বেলাতেও ব্যতিক্রম কিছু নয়। যেখানেই থাকি না কেন, বৈশাখে আমেজেই থাকব। সেদিন হয়তো শুটিং ইউনিটে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার সুযোগ পাব। সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রঙিন পোশাক পরব। আমি মনে করি, শুধু একদিন নয়, প্রতিটি দিনই বাঙালি সত্তাকে নিজের মধ্যে ধারণ করে চলা উচিত সবার। এই একটি দিন সবাই একই আনন্দে মেতে উঠি, একই রঙে ঘুরতে বের হই। একটা কথা স্পষ্ট করতে চাই, পান্তা-ইলিশ যে নববর্ষের ঐতিহ্য এটা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ পান্তা সবার জন্য সহজলভ্য হলেও ইলিশ কিন্তু সবার ভাগ্যে জোটে না। পান্তা-ইলিশকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজেদের মতো করেই নববর্ষ পালন করা উচিত।
ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ে- সঙ্গীতশিল্পী আঁখি আলমগীর
সময় বের করে, নিজের মতো করে বৈশাখের আনন্দ শেষ কবে উপভোগ করেছি ঠিক মনে নেই। আমি কখনই অনেক ভিড়ে আনন্দ করতে পারি না। তাই পহেলা বৈশাখে তেমন পরিকল্পনা করা হতো না। ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালন আমাদের গ্রামে দেখিনি। মনে আছে, আম্মু এদিন লাল পাড় সাদা শাড়ি পরত। কত রকমের ভর্তা যে হতো বলে শেষ করা যাবে না! গ্রামে মেলা বসত। আম্মু মেলা থেকে তালের পাখা কিনে দিত। তবে সে দিনগুলো সত্যি খুব মনে পড়ে। এখন ভক্তদের সঙ্গে প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখের আনন্দ ভাগাভাগি করে সময় কাটে। নিজের জন্য সেভাবে সময় দেয়া হয় না। বিভিন্ন জায়গায় শো থাকে। দিনের কোনো অংশে সময় পেলে মেয়েদের নিয়ে বেড়াতে বের হই। এ ছাড়া অন্য আর কোনো পরিকল্পনা থাকে না।
একদিনেই নববর্ষ শেষ হয়ে যায় না- সঙ্গীতশিল্পী আরফিন রুমী
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন যেটুকু নববর্ষের দিনটি পালন করা হতো এখন তা হয় না। কারণ সারা বছর শো আর স্টুডিওতে কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই এই দিনে সময় পেলে ঘুমিয়েই পার করি। এর বাইরে যেটুকু সময় পাই ছেলেকে নিয়েই থাকা হয়। এবার পহেলা বৈশাখ ঢাকার বাইরে পালন করা হবে। বড় বাবার বাসায় থাকব। সেখান থেকে পরের দিন নারায়ণগঞ্জের তারাবোতে একটি শো করতে যাব। তবে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার বিষয়টি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। রেওয়াজ মেনে আমরাও হয়তো পালন করি। একটা কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, শুধু একদিনেই বাংলার ঐতিহ্য নিজেদের মধ্যে ধারণ করা উচিত নয়। বাংলা বছরের অন্য দিনগুলোও সমভাবে স্মরণ রাখা উচিত সবার।
শুটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়- অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন
শৈশবে পহেলা বৈশাখের দিনে বাবা খুব সকালে ঘুম থেকে তুলে দিতেন। ভাইবোনরা মিলে ধানমণ্ডি লেকে ফুল কুড়াতে যেতাম। সেগুলো দিয়ে বাসা সাজাতাম। নতুন জামা পরে সকালবেলায় দই, মিষ্টি, চিড়া দিয়ে আমাদের পরিবারের সবার নাস্তা করা হতো। সবচেয়ে বেশি যেটি মনে পড়ে সেটি হচ্ছে বাবা পহেলা বৈশাখের দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতেন, যেন আমরা বছরের প্রথম দিন কারও সঙ্গে মিথ্যা না বলি সত্যি বলি। তাহলে বছরের বাকিটা সময় আমরা সত্যি কথাই বলব। এখন নববর্ষের প্রথম দিন কখন চলে যায় বুঝতেও পারি না। শুটিং নিয়েই থাকতে হয়। সময় পেলে পরিবারের সঙ্গেই থাকি।
এখনকার বর্ষবরণ আগের মতো না- অভিনেত্রী আফসানা মিমি
আমরা যখন ছোট্ট ছিলাম তখন পহেলা বৈশাখ এখনকার মতো এতটা কর্পোরেট ঘরানার হতো না। নিরেট বাঙালি সংস্কৃতিটাই তখন প্রচলিত ছিল। ছেলেমেয়েরা দলবেঁধে বৈশাখী মেলা দেখতে হাজির হতাম। নাগরদোলায় ওঠা হতো। দেখা হতো বায়োস্কোপ, আরও কত কী। কিন্তু এখন বাংলা বর্ষবরণে মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে বৈকি সেটি যেন শুধু পান্তা-ইলিশ আর ছবি তোলা পর্যন্তই। তাই এখনকার বর্ষবরণে আগের মতো আর প্রাণ পাই না আনন্দও করতে পারি না। সাধারণত আমি চেষ্টা করি বাঙালি রীতি মেনে সবকিছু করতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে আশা করছি।
পান্তা-ইলিশ কোনো জরুরি বিষয় নয়- অভিনেত্রী মৌটুসি বিশ্বাস
আমার ছোটবেলা চট্টগ্রামে কেটেছে। তখন থেকেই নাচ করতাম। বৈশাখ এলেই আমার আনন্দের সীমা থাকত না। পহেলা বৈশাখের বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো। সকালে চলে যেতাম ওই অনুষ্ঠানে নাচ করতে। অনুষ্ঠান শেষ হলে কিছুক্ষণ বাইরেই আড্ডা দিতাম। তবে আমার বন্ধু খুব কম ছিল। তাই খুব একটা বেড়াতে যাওয়া হতো না। ইলিশ-পান্তা খাওয়া আসলে এক রকমের নিয়ম হয়ে এসেছে। তাই প্রতিবছর নিয়ম করে তা পালন করা হয়। ভালো লাগার বিষয় তো আছেই। তবে পান্তা-ইলিশ যে সার্বজনীন হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। এটাকে বাঙালি সংস্কৃতির কেনো অংশ বলে মানতে রাজি নই আমি।
সিনেমায় কাজ করার আগে সব উৎসবই বেশ আয়োজন করে পালন করা হতো। কিন্তু নায়িকা হওয়ার পর ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ফলে আগের মতো আর উৎসবগুলো পালন করা হয় না। নববর্ষও আহামরি আয়োজন করে পালন করতে পারি না। বেশিরভাগ নববর্ষ শুটিং স্পটেই পালন করি। এবারের নববর্ষও শুটিংয়ের ব্যস্ততাতেই কেটে যাবে বলে মনে হচ্ছে। কারণ আগে থেকেই শিডিউল দেয়া আছে। পান্তা-ইলিশ শুটিং স্পটের সবার সঙ্গেই খাব। তবে ব্যস্ত থাকলেও আমি মনে প্রাণে বাঙালি। বাঙালিয়ানা নিজের ভেতরে ধারণ করি। অনেকেই বলে থাকেন পান্তা-ইলিশ না খেলে নাকি বৈশাখ পালন হয় না। আমি এ ধারণার বিপক্ষে। বাঙালিয়ানা আমাদের ধারণ করার বিষয়। নববর্ষ উপলক্ষে যতটা পারি অন্যকে সহায়তা করব। গরিব অসহায়কে উৎসব পালনে সহায়তা করব। অন্যের সুখের মাঝেই সুখ খুঁজে নেব। শুধু বৈশাখেই নয়, প্রতিটি উৎসবেই আমি গরিব-দুঃখীদের নিয়ে পালন করার চেষ্টা করি। পাশাপাশি শুটিং না থাকলে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের সময় দিই। অনেকের দাওয়াতে যোগ দিই। তাদের সঙ্গে পান্তা-ইলিশ খাই। দূরে কোথাও ঘুরতে যাই। নববর্ষে রাস্তায় বের হলে সবাইকে বাঙালি সাজের পোশাকে দেখতে দারুণ লাগে। গাড়ি থেকে নেমে তাদের সঙ্গে আমারও হাঁটতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু এখনকার পরিচয়ের কারণে সেটা আর সম্ভব হয় না। তবে প্রত্যেক নববর্ষে আগের দিনগুলো খুব মিস করি। ইচ্ছা করে সেই দিনগুলোতে ফিরে যেতে। যদিও এটা এখন আর সম্ভব নয়।
পরিবারের সঙ্গেই বৈশাখ উদযাপন করব- মাহিয়া মাহি
পহেলা বৈশাখের দিন মনে হয় শুটিং রয়েছে। তবে শুটিং থাকলেও দিনটি শ্বশুরবাড়ি আর নিজের বাড়ির লোকজনের সঙ্গেই কাটানোর ইচ্ছা। ছোটবেলা থেকেই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার মাধ্যমে নববর্ষ পালন করে আসছি। এখনও তার ব্যতিক্রম হয় না। তবে এ পান্তা-ইলিশ খাওয়াকে কিন্তু আমি বাঙালিয়ানা মনে করি না। এটা আমার কাছে নববর্ষ পালনের একটা অংশ। বাঙালিত্ব তো আমাদের মনে ধারণ করতে হবে। একেক দেশের নববর্ষ একেক আয়োজনে পালন করে। কোনো দেশ সারা রাত আতশবাজি করে পালন করে, কোনো দেশ আবার নেচে গেয়ে পালন করে। আমরা বাঙালিরা করি পান্তা-ইলিশ খাওয়া আর বাঙালি পোশাক পরে ঘুরে বেড়িয়ে। এটা প্রত্যেকের নিজস্ব সংস্কৃতির বিষয়। কীভাবে পালন হল সেটি মুখ্য নয়, আমার কাছে উৎসবটাই মুখ্য। আনন্দ করাটাই আসল। তবে যারা বলে পান্তা-ইলিশ না হলে নববর্ষ পালন হয় না বলেন, তাদের আমার কাছে কখনই বাঙালি মনে হয়নি। তারা হচ্ছেন মৌসুমি বাঙালি। বাঙালিয়ানা পান্তা-ইলিশ নয়, মনে প্রাণে বাংলা সংস্কৃতি ধারণ করার বিষয়।
এবারের নববর্ষ স্বামী-সন্তান নিয়েই পালন করব- চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস
ছোটবেলার সব অনুষ্ঠানই নানা রঙের আনন্দে কেটেছে। সে সময়ের বৈশাখ পালনও ঈদের মতো আনন্দে কেটেছে। পহেলা বৈশাখেও ঈদের মতো সালামি বা উপহার পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম। ইলিশ মাছ খাওয়ার সংস্কৃতিটাও উপস্থিত ছিল। গ্রামে বৈশাখ উপলক্ষে মেলা বসলেও আমার কখনও মেলায় যাওয়া হয়নি। কারণ ভিড় ঠেলে মেলায় যাওয়াটা একদমই পছন্দ করতাম না। মেলা থেকে যে মিষ্টিজাতীয় খাবারগুলো আনা হতো তা খাওয়া কখনই মিস করতাম না। কিন্তু এখন শহুরের যান্ত্রিক জীবনযাপন আর ব্যস্ততার আড়ালে গ্রাম্য পহেলা বৈশাখের সবকিছুই যেন হারিয়ে ফেলেছি। তবে এবারের বৈশাখ আমার কাছে বিশেষ কিছু এ জন্যই স্বামী-সন্তান নিয়েই পালন করব।
আমার সময় কাটে পরিবার নিয়েই- সঙ্গীতশিল্পী ন্যান্সি
গান নিয়ে সারা বছরই ব্যস্ত থাকতে হয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সির। বিশেষ করে উৎসবে স্টেজ পারফর্ম করেই দিন কেটে যায় তার। এবার পহেলা বৈশাখেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। নববর্ষ উপলক্ষে নিজের নতুন অ্যালবাম নিয়েও বেশ ব্যস্ততা গেল তার। এ ব্যস্ততার মধ্যেও নববর্ষ নিয়ে পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে ন্যান্সি বলেন, গত আট বছরে পহেলা বৈশাখ কী তা বলতে পারব না। খুব আয়েশ করে পান্তা-ইলিশ খাওয়া ভুলে গেছি অনেক আগে। ছোটবেলায় পরিবারের সঙ্গেই সময় কাটাতাম। সব বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া হতো। কিন্তু এখন কাজের ব্যস্ততার কারণে তা হয় না। তবে ছোটবেলার দিনগুলো খুব মিস করি। এখন দিনটি আমার মেয়ে আর পরিবারের অন্যদের ঘিরেই। শুধু বৈশাখ নয় সব উৎসবই এখন আমার পরিবারকে কেন্দ্র করেই।
পান্তা-ইলিশেই যেন নববর্ষ সীমাবদ্ধ- চিত্রনায়ক রিয়াজ
ঢাকাই ছবির অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ। বর্তমানে ছবির ব্যস্ততা না থাকলেও নাটকে অভিনয় ও ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ততা তার। এবারের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নাটকেও অভিনয় করছেন তিনি। পহেলা বৈশাখ ও পান্তা-ইলিশ প্রসঙ্গে তিনি জানান, শৈশবে বৈশাখ নিয়ে খুবই কম আনন্দ করতে পেরেছি। আমাদের সময় এত আয়োজন করে বৈশাখ পালন করা হতো না তখন। আগে বৈশাখ বলতে হালখাতাকেই বুঝতাম। গয়নার দোকানে গেলে মিষ্টি খাওয়া যেত। অপেক্ষা করতাম কখন বৈশাখের প্রথম দিন আসবে। নববর্ষে তখন খুব মজা হতো। বড় হওয়ার পর সে আনন্দ আর পাই না। তবে এখন কেন যেন মনে হয় শুধু পান্তা-ইলিশের মধ্যেই নববর্ষ সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। আর দিনের বেশিরভাগ সময় কাজ নিয়েই থাকি।
পান্তা-ইলিশে বিশ্বাসী নই- অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা
কাজের যে অবস্থা, হয়তো বৈশাখের দিনও শুটিং থাকবে। সমগ্র বাঙালি জাতির এত বড় আয়োজন, সবার জন্যই বেশ কাঙ্ক্ষিত ও আকর্ষণীয়। আমার বেলাতেও ব্যতিক্রম কিছু নয়। যেখানেই থাকি না কেন, বৈশাখে আমেজেই থাকব। সেদিন হয়তো শুটিং ইউনিটে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার সুযোগ পাব। সবার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রঙিন পোশাক পরব। আমি মনে করি, শুধু একদিন নয়, প্রতিটি দিনই বাঙালি সত্তাকে নিজের মধ্যে ধারণ করে চলা উচিত সবার। এই একটি দিন সবাই একই আনন্দে মেতে উঠি, একই রঙে ঘুরতে বের হই। একটা কথা স্পষ্ট করতে চাই, পান্তা-ইলিশ যে নববর্ষের ঐতিহ্য এটা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ পান্তা সবার জন্য সহজলভ্য হলেও ইলিশ কিন্তু সবার ভাগ্যে জোটে না। পান্তা-ইলিশকে প্রাধান্য না দিয়ে নিজেদের মতো করেই নববর্ষ পালন করা উচিত।
ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ে- সঙ্গীতশিল্পী আঁখি আলমগীর
সময় বের করে, নিজের মতো করে বৈশাখের আনন্দ শেষ কবে উপভোগ করেছি ঠিক মনে নেই। আমি কখনই অনেক ভিড়ে আনন্দ করতে পারি না। তাই পহেলা বৈশাখে তেমন পরিকল্পনা করা হতো না। ঘটা করে পহেলা বৈশাখ পালন আমাদের গ্রামে দেখিনি। মনে আছে, আম্মু এদিন লাল পাড় সাদা শাড়ি পরত। কত রকমের ভর্তা যে হতো বলে শেষ করা যাবে না! গ্রামে মেলা বসত। আম্মু মেলা থেকে তালের পাখা কিনে দিত। তবে সে দিনগুলো সত্যি খুব মনে পড়ে। এখন ভক্তদের সঙ্গে প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখের আনন্দ ভাগাভাগি করে সময় কাটে। নিজের জন্য সেভাবে সময় দেয়া হয় না। বিভিন্ন জায়গায় শো থাকে। দিনের কোনো অংশে সময় পেলে মেয়েদের নিয়ে বেড়াতে বের হই। এ ছাড়া অন্য আর কোনো পরিকল্পনা থাকে না।
একদিনেই নববর্ষ শেষ হয়ে যায় না- সঙ্গীতশিল্পী আরফিন রুমী
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন যেটুকু নববর্ষের দিনটি পালন করা হতো এখন তা হয় না। কারণ সারা বছর শো আর স্টুডিওতে কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই এই দিনে সময় পেলে ঘুমিয়েই পার করি। এর বাইরে যেটুকু সময় পাই ছেলেকে নিয়েই থাকা হয়। এবার পহেলা বৈশাখ ঢাকার বাইরে পালন করা হবে। বড় বাবার বাসায় থাকব। সেখান থেকে পরের দিন নারায়ণগঞ্জের তারাবোতে একটি শো করতে যাব। তবে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার বিষয়টি আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। রেওয়াজ মেনে আমরাও হয়তো পালন করি। একটা কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, শুধু একদিনেই বাংলার ঐতিহ্য নিজেদের মধ্যে ধারণ করা উচিত নয়। বাংলা বছরের অন্য দিনগুলোও সমভাবে স্মরণ রাখা উচিত সবার।
শুটিং নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়- অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন
শৈশবে পহেলা বৈশাখের দিনে বাবা খুব সকালে ঘুম থেকে তুলে দিতেন। ভাইবোনরা মিলে ধানমণ্ডি লেকে ফুল কুড়াতে যেতাম। সেগুলো দিয়ে বাসা সাজাতাম। নতুন জামা পরে সকালবেলায় দই, মিষ্টি, চিড়া দিয়ে আমাদের পরিবারের সবার নাস্তা করা হতো। সবচেয়ে বেশি যেটি মনে পড়ে সেটি হচ্ছে বাবা পহেলা বৈশাখের দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতেন, যেন আমরা বছরের প্রথম দিন কারও সঙ্গে মিথ্যা না বলি সত্যি বলি। তাহলে বছরের বাকিটা সময় আমরা সত্যি কথাই বলব। এখন নববর্ষের প্রথম দিন কখন চলে যায় বুঝতেও পারি না। শুটিং নিয়েই থাকতে হয়। সময় পেলে পরিবারের সঙ্গেই থাকি।
এখনকার বর্ষবরণ আগের মতো না- অভিনেত্রী আফসানা মিমি
আমরা যখন ছোট্ট ছিলাম তখন পহেলা বৈশাখ এখনকার মতো এতটা কর্পোরেট ঘরানার হতো না। নিরেট বাঙালি সংস্কৃতিটাই তখন প্রচলিত ছিল। ছেলেমেয়েরা দলবেঁধে বৈশাখী মেলা দেখতে হাজির হতাম। নাগরদোলায় ওঠা হতো। দেখা হতো বায়োস্কোপ, আরও কত কী। কিন্তু এখন বাংলা বর্ষবরণে মানুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে বৈকি সেটি যেন শুধু পান্তা-ইলিশ আর ছবি তোলা পর্যন্তই। তাই এখনকার বর্ষবরণে আগের মতো আর প্রাণ পাই না আনন্দও করতে পারি না। সাধারণত আমি চেষ্টা করি বাঙালি রীতি মেনে সবকিছু করতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে আশা করছি।
পান্তা-ইলিশ কোনো জরুরি বিষয় নয়- অভিনেত্রী মৌটুসি বিশ্বাস
আমার ছোটবেলা চট্টগ্রামে কেটেছে। তখন থেকেই নাচ করতাম। বৈশাখ এলেই আমার আনন্দের সীমা থাকত না। পহেলা বৈশাখের বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো। সকালে চলে যেতাম ওই অনুষ্ঠানে নাচ করতে। অনুষ্ঠান শেষ হলে কিছুক্ষণ বাইরেই আড্ডা দিতাম। তবে আমার বন্ধু খুব কম ছিল। তাই খুব একটা বেড়াতে যাওয়া হতো না। ইলিশ-পান্তা খাওয়া আসলে এক রকমের নিয়ম হয়ে এসেছে। তাই প্রতিবছর নিয়ম করে তা পালন করা হয়। ভালো লাগার বিষয় তো আছেই। তবে পান্তা-ইলিশ যে সার্বজনীন হবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। এটাকে বাঙালি সংস্কৃতির কেনো অংশ বলে মানতে রাজি নই আমি।
No comments