সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার মাত্র ৪ জন
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার স্বাহ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সঙ্কটসহ নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এতে উপজেলার প্রায় ৪ লাখের বেশি মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রতিদিন অনেক রোগীকেই চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন ডাক্তারের স্থলে খাতা কলমে আছেন ৯ জন। কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত রয়েছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক। এদের মধ্যে এক জন হোমিওপ্যাথিক ও এক জন ডেন্টাল। বাকি তিন জনের মধ্যে এক জন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তাকে প্রশাসনিক কাজের পাশাপাশি রোগী দেখতে হয়। দুই জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে চলছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। এছাড়া ১২ জন সহকারী মেডিক্যাল অফিসার (সেকমো) রয়েছে। অনুপস্থিত ৪ জনের মধ্যে ২ জনকে ডেপুটেশনে পাঠানো হয়েছে। ডাঃ সোহেলী সোবাহান ও জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) খোরশেদ আলম সাঁথিয়া হাসপাতালে যোগদানের পর থেকেই কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। তারা এখন কোথায় কর্মরত আছেন, হাসপাতালের কেউ তা জানেন না। ওই ডাক্তারদের ব্যাপারে মন্ত্রনালয় সবই জানে। তাদেরকে মন্ত্রনালয় থেকে বেশ কয়েকবার শোকজ করা হয়েছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সরেজমিন জানা যায়, সাঁথিয়া উপজেলার ৪ লাখের বেশী মানুষের মৌলিক চাহিদা চিকিৎসাসেবার জন্য উপজেলা সদরে একটি ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল রয়েছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরীন অবস্থা সেই গ্রামীন প্রবাদের মতো “ কাজীর গরু খাতা কলমে আছে গোয়ালে নেই।
চিকিৎসক না থাকায় স্বাস্থ্য সেবা চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা রোগীরা উন্নত চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভীড় করছেন। ডাক্তার সংকটে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। শহরের দিকে। অনেক গরীব রোগী যাদের শহরে চিকিৎসা করানো সামর্থ নেই, তাদেরকে সীমাহিন দুর্ভোগপোহাতে হয়। সিজারের ডাক্তার না থাকায় গ্রাম থেকে আসা অনেক রোগীকে পাবনা রিফার্ড করে দেয়া হয়। এমনকি পাবনা যাওয়ার পথে রাস্তাতেই ডেলিভারীর ঘটনা ঘটেছে। আগে এই হাসপাতালেই সিজার করা হতো। ৫০ শয্যা উন্নীত হওয়ার পর এখানে কোন সিজারের ডাক্তার নেই। নেই কোন অজ্ঞানের ডাক্তার। পদশুন্য রয়েছে সহকারী সার্জন, জুনিয়র কনসালটেন্ট শিশু, অর্থপেডিক, কার্ডি, চক্ষু, ইএনটি। নার্স,ওয়ার্ডবয়, এমএল,এস, নৈশ প্রহরীর পদ শুন্য রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, চিকিৎসক সঙ্কটে আমরা খুবই কষ্টে আছি। একজন চিকিৎসককে ডে-নাইট ডিউটি করাতে হচ্ছে। হাসপাতালে যে সংখ্যক ডাক্তারের পদ অনুমোদন আছে, সেই সংখ্যক জনবল থাকলে কোন সমস্য হতো না। এ ব্যাপরে পাবনার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ তাজ্জেল হোসেন জানান, সাঁথিয়া হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নিত হলেও জনবল পাইনি। ডেপুটেশনের বিষয়ে তিনি জানান, উর্ধ¦তন কর্তৃপক্ষ যেখানে একেবারেই চিকিৎসক নেই, সেখানেই ডেপুটেশনে পাঠিয়েছেন। এ ব্যাপারে আমরা বলার কিছু নেই।
No comments