শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা
ঈদে মানুষের ঘরমুখী যাত্রা শুরু হয়েছে গতকাল। এদিন কমলাপুর স্টেশনে ছিল মানুষের ভিড়। ভেতরে জায়গা না পেয়ে অনেকে ট্রেনের ছাদে ওঠেন। ছবি- প্রথম আলো |
ঈদে
ঘরমুখী মানুষের যাত্রা শুরু হয়েছে গতকাল সোমবার থেকে। রাজধানীর তিনটি
আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে এবং বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির ছাড়া বাসগুলোর
আসন ছিল পূর্ণ। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া অধিকাংশ ট্রেনেই ছিল
উপচে পড়া ভিড়। লঞ্চেও অনেকে বাড়ি গেছেন।
বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাসের অগ্রিম টিকিটের যাত্রার প্রথম দিন ছিল গতকাল। ট্রেনেরও তাই। রেলওয়ের কর্মকর্তা ও পরিবহনমালিকেরা জানিয়েছেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার ভিড় আরও বাড়বে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ৪১টি ট্রেন ছেড়ে যায়। এর মধ্যে সকালে ঢাকা-খুলনা পথের সুন্দরবন এক্সপ্রেস তিন ঘণ্টা এবং কুমিল্লা পথের একটি ডেমু ও রাজশাহী পথের একটি মেইল ট্রেন তিন ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। বাকি ট্রেনগুলো সময় মেনে চলেছে।
পরিবহনমালিকেরা বলেছেন, এখনো সড়কপথে বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। আসন পূর্ণ করে সময়মতো বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারের টিকিটের জন্য হাহাকার চলছে।
গতকাল ছিল ট্রেনে অগ্রিম টিকিট বিক্রির শেষ দিন। কমলাপুর স্টেশনে গত রোববার রাত থেকে অনেকে লাইনে দাঁড়ান অগ্রিম টিকিটের জন্য। লাইনের শেষের দিকে থাকা অনেকে টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণি ও এসি কামরার আসনের টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ বেশি।
সূত্র জানায়, রেলকর্মী ও ভিআইপিদের জন্য ১০ শতাংশ টিকিট সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে এই কোটা ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভিআইপি ও রেলকর্মীদের বেশি চাহিদা প্রথম শ্রেণি ও এসি টিকিটের। ফলে সাধারণ যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও এসব টিকিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সাংবাদিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম দেখতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ জানান অনেকে। সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ভিআইপিরা রাষ্ট্রের সুবিধাভোগী। তাঁদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব গাড়িসহ অন্য সুবিধা রয়েছে। এরপরও তাঁদের জন্য এত কোটা সংরক্ষণ করা নাগরিক ও যাত্রী অধিকার হরণের শামিল। এটা গুরুতর অন্যায়ও। কোটা ১ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদে তূর্ণা নিশীথায় আসন ৮৩৫টি। এর মধ্যে এসি কামরায় ঘুমিয়ে ও বসে যাওয়ার আসন রয়েছে ৩৩০টি। নন-এসি আসন প্রায় ৫০০। ভিআইপিদের মূল চাহিদা হচ্ছে এসি শ্রেণির ৩৩০টি আসন। ঢাকা-নীলফামারী পথের নীলসাগর ট্রেনের এসি কক্ষ ও এসি চেয়ার মিলিয়ে ১২৮ আসন। আর সাধারণ আসন ৫২৭টি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কোটা একটা নীতিনির্ধারণী বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে চলছে। তবে তা খুবই কম, যা যাত্রী চাহিদার ওপর তেমন প্রভাব ফেলে না। এ ছাড়া আগামী জানুয়ারিতে ২৬৮টি নতুন কোচ রেলে যুক্ত হবে এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তখন আর সমস্যা হবে না।
টিকিটযুদ্ধের পর স্বস্তির যাত্রা: বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কমলাপুর স্টেশনে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র ট্রেন দুটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের প্রতিটি আসন ভরে দাঁড়ানোরও জায়গা ছিল না। তবে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলেন, তাঁরা সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত যাবেন না। যানজটের কথা ভেবে উত্তরা-টঙ্গী এলাকার অনেকে ট্রেনে বিমানবন্দরে নামেন।
আসন নিয়ে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে সপরিবারে রওনা হওয়া আশিক মাহমুদ বলেন, তাঁর ছোট ভাইকে ১২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন। তবে আসনে বসতে পেরে এখন আর সেই কষ্ট মনে নেই। আছে স্বস্তি। ঠিকমতো ফিরে আসতে পারলেই হয়।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পথের ব্রহ্মপুত্র ট্রেনে বসা সাজেদুল হক পেশায় শোপিস আমদানিকারক। তিনি বলেন, ইচ্ছা ছিল বুধবার যাবেন। কিন্তু পরিচিতদের কাছে জানতে পারেন, ওই দিনের টিকিট পেলেও আসন পর্যন্ত পৌঁছানো কঠিন হবে। তাই দুই দিন আগেই রওনা দিয়েছেন।
বাসে যেতে অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরাও গন্তব্যে গেছেন স্বস্তি নিয়ে। বাস টার্মিনাল বা কাউন্টারে যাওয়ার পথে কোথাও কোথাও যানজট পেলেও মহাসড়কে তেমন যানজট হয়নি। লঞ্চেও অতিরিক্ত ভিড় ছিল না।
বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানির বাসের অগ্রিম টিকিটের যাত্রার প্রথম দিন ছিল গতকাল। ট্রেনেরও তাই। রেলওয়ের কর্মকর্তা ও পরিবহনমালিকেরা জানিয়েছেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার ভিড় আরও বাড়বে।
গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ৪১টি ট্রেন ছেড়ে যায়। এর মধ্যে সকালে ঢাকা-খুলনা পথের সুন্দরবন এক্সপ্রেস তিন ঘণ্টা এবং কুমিল্লা পথের একটি ডেমু ও রাজশাহী পথের একটি মেইল ট্রেন তিন ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। বাকি ট্রেনগুলো সময় মেনে চলেছে।
পরিবহনমালিকেরা বলেছেন, এখনো সড়কপথে বড় ধরনের যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। আসন পূর্ণ করে সময়মতো বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে বুধ ও বৃহস্পতিবারের টিকিটের জন্য হাহাকার চলছে।
গতকাল ছিল ট্রেনে অগ্রিম টিকিট বিক্রির শেষ দিন। কমলাপুর স্টেশনে গত রোববার রাত থেকে অনেকে লাইনে দাঁড়ান অগ্রিম টিকিটের জন্য। লাইনের শেষের দিকে থাকা অনেকে টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন। বিশেষ করে প্রথম শ্রেণি ও এসি কামরার আসনের টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ বেশি।
সূত্র জানায়, রেলকর্মী ও ভিআইপিদের জন্য ১০ শতাংশ টিকিট সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে অনানুষ্ঠানিকভাবে এই কোটা ২৫-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ভিআইপি ও রেলকর্মীদের বেশি চাহিদা প্রথম শ্রেণি ও এসি টিকিটের। ফলে সাধারণ যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও এসব টিকিট থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সাংবাদিক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম দেখতে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পাওয়ার অভিযোগ জানান অনেকে। সৈয়দ আবুল মকসুদ প্রথম আলোকে বলেন, ভিআইপিরা রাষ্ট্রের সুবিধাভোগী। তাঁদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব গাড়িসহ অন্য সুবিধা রয়েছে। এরপরও তাঁদের জন্য এত কোটা সংরক্ষণ করা নাগরিক ও যাত্রী অধিকার হরণের শামিল। এটা গুরুতর অন্যায়ও। কোটা ১ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঈদে তূর্ণা নিশীথায় আসন ৮৩৫টি। এর মধ্যে এসি কামরায় ঘুমিয়ে ও বসে যাওয়ার আসন রয়েছে ৩৩০টি। নন-এসি আসন প্রায় ৫০০। ভিআইপিদের মূল চাহিদা হচ্ছে এসি শ্রেণির ৩৩০টি আসন। ঢাকা-নীলফামারী পথের নীলসাগর ট্রেনের এসি কক্ষ ও এসি চেয়ার মিলিয়ে ১২৮ আসন। আর সাধারণ আসন ৫২৭টি।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কোটা একটা নীতিনির্ধারণী বিষয়। দীর্ঘদিন ধরে চলছে। তবে তা খুবই কম, যা যাত্রী চাহিদার ওপর তেমন প্রভাব ফেলে না। এ ছাড়া আগামী জানুয়ারিতে ২৬৮টি নতুন কোচ রেলে যুক্ত হবে এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তখন আর সমস্যা হবে না।
টিকিটযুদ্ধের পর স্বস্তির যাত্রা: বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কমলাপুর স্টেশনে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র ট্রেন দুটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের প্রতিটি আসন ভরে দাঁড়ানোরও জায়গা ছিল না। তবে দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলেন, তাঁরা সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত যাবেন না। যানজটের কথা ভেবে উত্তরা-টঙ্গী এলাকার অনেকে ট্রেনে বিমানবন্দরে নামেন।
আসন নিয়ে সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে সপরিবারে রওনা হওয়া আশিক মাহমুদ বলেন, তাঁর ছোট ভাইকে ১২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন। তবে আসনে বসতে পেরে এখন আর সেই কষ্ট মনে নেই। আছে স্বস্তি। ঠিকমতো ফিরে আসতে পারলেই হয়।
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পথের ব্রহ্মপুত্র ট্রেনে বসা সাজেদুল হক পেশায় শোপিস আমদানিকারক। তিনি বলেন, ইচ্ছা ছিল বুধবার যাবেন। কিন্তু পরিচিতদের কাছে জানতে পারেন, ওই দিনের টিকিট পেলেও আসন পর্যন্ত পৌঁছানো কঠিন হবে। তাই দুই দিন আগেই রওনা দিয়েছেন।
বাসে যেতে অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীরাও গন্তব্যে গেছেন স্বস্তি নিয়ে। বাস টার্মিনাল বা কাউন্টারে যাওয়ার পথে কোথাও কোথাও যানজট পেলেও মহাসড়কে তেমন যানজট হয়নি। লঞ্চেও অতিরিক্ত ভিড় ছিল না।
No comments