রাজন হত্যা: পুলিশের সঙ্গে বৈঠক ১২ লাখ টাকায় রফা by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
চুক্তি
হয়েছিল ১২ লাখ টাকায়। অর্ধেক পরিশোধ হয়েছিল। বাস্তবায়নও হয়েছিল অর্ধেক।
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল সামিউল আলম রাজন হত্যা ঘটনার মূল
নায়ক কামরুল। পুলিশের এমন ঠাণ্ডা মাথায় আঁকা ছকে হঠাৎ যেন গোলমাল বাধে।
গোপন কথা গোপন থাকে না। ফাঁস হয়ে যায়। বুধবার এই নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত
হলেও শুরুতে এ নিয়ে তেমন কোন রা হয়নি। তবে নির্মম নির্যাতনে ২৮ মিনিটের
ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পরই তোলপাড় শুরু হয় চারদিকে। সংবাদমাধ্যমে বড়
আকারে প্রকাশিত হয় নিষ্ঠুর এ ঘটনার খবর। প্রতিবাদী হয়ে উঠে মানুষ।
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পরিস্থিতি।
রাজনের বাবা আজিজুর রহমান অভিযোগ করেন, জালালাবাদ থানা পুলিশ ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে আমার ছেলে রাজনের হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, রাজনকে হত্যার পর বুধবার রাত ১০টার দিকে জালালাবাদ থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। আমাকে থানা থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এসআই আমিনুল।
মানবজমিনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৮ই জুলাই বুধবার সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে রাজনকে চুরির মিথ্যা অপবাদে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে সামিউল আলম রাজন মারা গেলে তার লাশ গুম করার চেষ্টাকালে জনতার হাতে আটক হয় মুহিদ আলম। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল। পৈশাচিক নির্যাতনে রাজনের মৃত্যুর বিষয়ে পুরোপুরি অবহিত থাকার পরও ঐদিন সন্ধ্যায় জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুলের সঙ্গে বৈঠক করে কামরুল ও মুহিত। চুক্তি হয় ১২ লাখ টাকার। ৬ লাখ টাকা হাতে পেয়ে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল মামলার প্রধান আসামি কামরুলকে সৌদি আরব পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। বাকি ৬ লাখ টাকা হাতে পেলে জনতার হাতে আটকের পর গ্রেপ্তার হওয়া কামরুলের বড় ভাই মুহিত আলমকেও ছেড়ে দেবে বলে কথা দেয় পুলিশ। ১০ই জুলাই বিজি-৪০৪ যোগে সিলেট বিমানবন্দর ছাড়ে কামরুল। নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করেন ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন। হত্যাকাণ্ডের পর দুইদিন পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কোন উদ্যোগ না নিয়ে চুপ করে থাকে। কামরুলের দেশত্যাগ ও লেনদেনের ঘটনা একসময় ফাঁস হয়ে যায়। ১১ই জুলাই এলাকাবাসী ঘেরাও করে জালালাবাদ থানা। টনক নড়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের।
রাজনের বাবা আজিজুর রহমান অভিযোগ করেন, জালালাবাদ থানা পুলিশ ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে আমার ছেলে রাজনের হত্যাকাণ্ডটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, রাজনকে হত্যার পর বুধবার রাত ১০টার দিকে জালালাবাদ থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। আমাকে থানা থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এসআই আমিনুল।
মানবজমিনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ৮ই জুলাই বুধবার সিলেট নগরীর কুমারগাঁওয়ে রাজনকে চুরির মিথ্যা অপবাদে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। একপর্যায়ে সামিউল আলম রাজন মারা গেলে তার লাশ গুম করার চেষ্টাকালে জনতার হাতে আটক হয় মুহিদ আলম। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন জালালাবাদ থানার এসআই আমিনুল। পৈশাচিক নির্যাতনে রাজনের মৃত্যুর বিষয়ে পুরোপুরি অবহিত থাকার পরও ঐদিন সন্ধ্যায় জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুলের সঙ্গে বৈঠক করে কামরুল ও মুহিত। চুক্তি হয় ১২ লাখ টাকার। ৬ লাখ টাকা হাতে পেয়ে জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন ও এসআই আমিনুল মামলার প্রধান আসামি কামরুলকে সৌদি আরব পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেন। বাকি ৬ লাখ টাকা হাতে পেলে জনতার হাতে আটকের পর গ্রেপ্তার হওয়া কামরুলের বড় ভাই মুহিত আলমকেও ছেড়ে দেবে বলে কথা দেয় পুলিশ। ১০ই জুলাই বিজি-৪০৪ যোগে সিলেট বিমানবন্দর ছাড়ে কামরুল। নিরাপদ প্রস্থান নিশ্চিতের দায়িত্ব পালন করেন ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন। হত্যাকাণ্ডের পর দুইদিন পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কোন উদ্যোগ না নিয়ে চুপ করে থাকে। কামরুলের দেশত্যাগ ও লেনদেনের ঘটনা একসময় ফাঁস হয়ে যায়। ১১ই জুলাই এলাকাবাসী ঘেরাও করে জালালাবাদ থানা। টনক নড়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তাব্যক্তিদের।
নিহত রাজনের বাবা আজিজুর রহমান জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এসআই আমিনুল রাজনের লাশের ছবি দেখায় তার মোবাইলফোনে। এরপর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে থানায় যাই মামলা করতে। তিনি জানান, ‘ততক্ষণে এসআই আমিরুল অজ্ঞাতদের নামে আগেই মামলা করে বসে আছেন। আমি আসামিদের নাম ধরে মামলা করতে চাইলে এক পর্যায়ে এসআই আমিনুল আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কোন উদ্যোগ নেয়নি। চারদিন পর পত্রিকায় খবর বের হলে পুলিশ তৎপর হয়। পুলিশ কোন আসামিকে ধরেনি। মুহিত আলমকে পাবলিক ধরেছে।’
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আখতার হোসেন এসআই আমিনুলের এই আচরণের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার দিন থানায় ছিলাম না। মামলার সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলাম। পরে এসে রাজনের বাবার লিখিত অভিযোগকে এজাহার হিসেবে নিয়েছি।
মঙ্গলবার বিকালে সহকারী পুলিশ কর্মকর্তা (জনসংযোগ) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আজই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. রুকনউদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবেন। তিন দিনের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
বেঁধে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় শেখ সামিউল আলম রাজন নামে ১৩ বছরের শিশুকে |
সহকারী
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, মামলা দায়ের নিয়ে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। লাশ
পাওয়ার পর ঐদিন রাত সোয়া ১০টায় এসআই আমিনুল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন,
যাতে মুহিতকে ১ নম্বর ও ময়নাকে ২ নম্বর আসামি করা হয়। আসামি ‘অজ্ঞাত’ লেখা
হয়নি। পরে রাজনের বাবা এজাহার দিলে তা নেয়া হয়। রাজনের বাবা আজিজুর রহমানের
দায়ের করা এজাহারে ঐ দুজন ছাড়াও আলী হায়দার ও কামরুলকে আসামি করা হয়। এখন
রাজনের বাবা যদি পুলিশের মামলা দায়েরের আগে থানায় এসে থাকেন তবে জালালাবাদ
থানা পুলিশ কেন এমনটি করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। তিনি তথ্য দেন এ মামলায়
মুহিত আলম ছাড়াও কামরুলকে সৌদি আরবে এবং দুই প্রত্যক্ষদর্শী ফিরোজ আলী ও
আজমত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা আজ আদালতে ঘটনার প্রত্যক্ষ বর্ণনা
দিয়েছেন। তিনি বলেন, মামলার তদন্ত তদারকির জন্য আরও একটি তিন সদস্যের
কমিটি করা হয়েছে-আমি এর প্রধান।
সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামের বাসিন্দা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের ছেলে সামিউল আলম রাজন। স্থানীয় অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করা রাজন সবজি বিক্রি করতো। কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ভ্যান চুরির অভিযোগে বুধবার তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তুলে রাজনের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মুহিত আলম নামের একজনকে ধরে পুলিশে দেন স্থানীয়রা। মুহিত শেখপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালিকের ছেলে। ঐ ঘটনায় মুহিতের ভাই কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে গ্রেপ্তার হয়।
সিলেট নগরীর কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডের পাশে সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদে আলী গ্রামের বাসিন্দা গাড়িচালক শেখ মোহাম্মদ আজিজুর রহমান আলমের ছেলে সামিউল আলম রাজন। স্থানীয় অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করা রাজন সবজি বিক্রি করতো। কুমারগাঁও এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে ভ্যান চুরির অভিযোগে বুধবার তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তুলে রাজনের লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় মুহিত আলম নামের একজনকে ধরে পুলিশে দেন স্থানীয়রা। মুহিত শেখপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালিকের ছেলে। ঐ ঘটনায় মুহিতের ভাই কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানে গ্রেপ্তার হয়।
No comments