ঈশ উপনিষদ্ কবিতা -- অনুবাদ: সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ

[ঈশ উপনিষদ্, শুক্ল যজুর্বেদ-এর উপসংহার রূপে বেদ-সাহিত্যে সঙ্কলিত একটি ক্ষুদ্র, কিন্তু অত্যন্ত উল্লিখিত ও আলোচিত উপনিষদ্, এটি উপনিষদ্ সমূহের মধ্যে অন্যতম প্রাচীনতমও বটে। এর লেখক অজ্ঞাত। সমগ্র বেদসাহিত্যের মতো এই উপনিষদেরও রচনাকাল সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত; তবে প্রায় সকল মতেই, এটি যে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের পূর্ববর্তী সে-বিষয়ে সন্দেহ তেমন দেখা যায় না। এই ছোট্ট কবিতাটি বৈদিক সাহিত্যের এক রত্নবিশেষ।]

শান্তিপাঠ

পূর্ণ সে, পূর্ণ এ,
পূর্ণ হ’তে পূর্ণোদয়,
পূর্ণ থেকে পূর্ণ নিলে,
পূর্ণ অবশিষ্ট রয়।


জগতে যা-কিছুই চলে,
ঈশ্বরের বসত সব,
ত্যাগের সঙ্গে ভোগ করো রে,
কোরো না পরধনে লোভ।


কাজের মাঝে একশ’ বছর
বাঁচতে চাইবে লোক হেথা,
কর্মে লিপ্ত হবে না তাও,
হবে না তার অন্যথা।


অন্ধ-অন্ধকারাচ্ছন্ন
যে-লোক চিরসূর্যহীন
আত্মঘাতী, দেহত্যাগে,
সেই লোকেতে হয় বিলীন।



একলা এবং অচল, তবু মনের চেয়ে বেগবান্,
দেবতারা পায় না একে, পূর্বগামী এ সবার,
এই স্থাণুকে পারে না ছাড়াতে যারা ধাবমান,
তার ভিতরে, বইছে বাতাস বিশ্বের সব জলের ভার।



চলে সে, ফের চলেও না,
দূরে, আবার কাছে সে,
সবকিছুরই বাইরে থেকে
সবার মাঝে আছে সে।


নিজ-আত্মায় সর্বভূতকে
যে দ্যাখে, আর আপনাকে
সর্বভূতে - তার কি রে, মন,
আর-কোনো রাখঢাক থাকে?



যে জেনেছে তার মধ্যেই
সর্বভূতের সারাৎসার,
সবকিছুতে এক যে দ্যাখে
শোক-মোহ কী তার আত্মার।



শরীর ব্রণ-স্নায়ুবিহীন,
সর্বগামী, জ্যোতিষ্মান্,
স্বয়ম্ভু, মনীষী, কবি -
কর্মফলের দেয় বিধান।



অন্ধ-অন্ধকারে পশে
ভজে যারা অবিদ্যায়,
বিদ্যা যাদের একান্ত ধ্যান
তারা আরও অন্ধ হায়।

১০

কিন্তু বিদ্যা-অবিদ্যাতে
ফলতে পারে অন্য ফল,
বলেন সুধী পণ্ডিতেরা,
জানেন যাঁরা এইসকল।

১১

বিদ্যা এবং অবিদ্যাকে
জানে যে-জন একসাথে
অবিদ্যাতে মৃত্যু ত’রে
অমর হয় সে বিদ্যাতে।

১২

অন্ধ-অন্ধকারে পশে
যারা ভজে অলৌকিক,
প্রাকৃতিকের যে উপাসক,
অন্ধ সে-জন ততোধিক।

১৩


পার্থিব আর অপার্থিবের
ফলতে পারে অন্য ফল,
সুধীর সুধীগণের কাছে
শুনেছিলাম এইসকল।

১৪

উদ্ভব এবং বিনাশকে যে
জানতে পারে একত্তর
বিনাশ দ্বারা মৃত্যু ত’রে
উদ্ভবে সে হয় অমর।

১৫

পূষন্, তোমার হিরণ আলোয়
হায়, সত্যের মুখ ঢাকা!
সত্যধর্মা যে-জন, তারে
দেখাও, ঘোচাও আংরাখা!

১৬

পূষন্, ওগো একর্ষি! যম! প্রজাপতির প্রসূন হে!
সংবরো এ চোখ-ধাঁধানো রশ্মি, এ-তেজ, হে স্বামিন্!
কল্যাণময় যে-রূপ তোমার, দেখেছি তায় এ-শূন্যে,
তোমার ভিতর এই যে পুরুষ, আর-কেউ নয়, সে আমিই!

১৭


শ্বাস মিশিছে নিত্যানিলে,
ভস্ম হচ্ছে শরীর এ,
স্মরো ক্রতু, স্মরো ক্রতু,
কৃতকর্ম স্মরো রে!

১৮

অগ্নি, দেখাও আমাদিগে
অমরলোকের প্রবেশদ্বার,
কুটিল পাপের করো বিনাশ -
তোমায় নমো-নমস্কার।
=====================
মাহমুদ দারবিশের কবিতা ‘অবরোধের কালে’   মাহ্‌মুদ দারবিশের কবিতা 'আমি গণহত্যা দেখেছি'  তাদেউজ রজেভিচ ও তার কয়েকটি কবিতা  স্টিফেন ডান-এর দুটি কবিতা  ফেদেরিকো গার্থিয়া লোরকার কবিতা ও প্রিয় বন্ধুর জন্য বিলাপ   ভ্ল­াদিমির মায়াকভস্কি ও আন্দ্রেই ভজ্‌নেসেন্‌স্কির দুটি কবিতা   মাহমুদ দারবিশের তিনটি কবিতা (পরিচয়পত্র,ও আমার পিতা...   মাহমুদ দারবিশের চারটি কবিতা ‘বিস্মৃতির স্মৃতি,নির্...  জাপানি কবিত  সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ অনুদিত আরবি কবিতা   আমেরিকানদের প্রিয় কবিতা   উইলিয়াম ব্লেইক-এর কবিতা   ৪৫টি চর্যাপদের কাবিতা অনুবাদ করেছেন সুব্রত অগাস্টি...   টম গান্-এর কবিতা : ‌’যিশু ও তার মা’    ইয়োলান্ডা কর্নেলিয়া জিভানির দুটি কবিতা   ল্যুইস ক্যারল-এর ‘হন্তদন্তের গান’



bdnews24 এর সৌজন্যে
অনুবাদ: সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ


এই কবিতা গুলো পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.