মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার গোলাম আযমের রায়ের জন্য আর কত অপেক্ষা
বিচারিক কার্যক্রম শেষ হওয়ার দুই মাস পার
হলেও গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় হয়নি। রায়টি
অপেক্ষমাণ আছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
গত ১৭
এপ্রিল রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি খণ্ডনের মধ্য দিয়ে এই মামলার
বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়। ওই দিন রায় অপেক্ষাধীন (সিএভি) রেখে
ট্রাইব্যুনাল বলেন, যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে। এরপর দুই মাস চলে গেলেও
রায় ঘোষণা করা হয়নি।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের প্রধান সমন্বয়কারী এম কে রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রায় কবে হবে, এটা তো ট্রাইব্যুনালের বিষয়। আশা করি, খুব দ্রুত হয়ে যাবে।’
বিচারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ট্রাইব্যুনালের প্রতিটি মামলাই আলাদা ও অনন্য প্রকৃতির। একটির সঙ্গে আরেকটির তুলনা চলে না। অন্য মামলাগুলোর রায় দিতে কত সময় লেগেছে, সেই আলোচনা এখানে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। এ ছাড়া গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলাটি প্রকৃতি ও উপাদানগত দিক থেকে অন্যগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা।
জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ বলেন, ‘সিএভি মানে রায় ঘোষণার কোনো সময়সীমা নেই। এটা সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার। তবে আমরা হয়তো এটা বলতে পারি, এই মামলায় অনেক আইনগত দিক আছে, যা অন্য মামলায় নেই। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর আন্তর্জাতিক আদালত এসব আইনগত দিক কীভাবে বিচার করেছেন, তা যাচাই-বাছাই করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন।’
এদিকে অপেক্ষাধীন রয়েছে আরেকটি মামলার রায়। ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচারাধীন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয় ৫ জুন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত দুটি ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত চারটি মামলার রায় দিয়েছেন। এই চারটি মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণার জন্য গড়ে এক মাস করে সময় লেগেছে। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদের মৃত্যুদণ্ডের ওই রায় দিতে ট্রাইব্যুনালের সময় লাগে ২৬ দিন। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছিল। দ্বিতীয় রায়ও আসে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ১৭ জানুয়ারি কার্যক্রম শেষ হওয়া ওই মামলার রায় হয় ১৮ দিন পর। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তৃতীয় রায় ও ট্রাইব্যুনাল-১-এর প্রথম রায় আসে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছিল ঠিক এক মাস আগে, ২৯ জানুয়ারি। সর্বশেষ রায় আসে ট্রাইব্যুনাল-২ থেকে, যাতে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ১৬ এপ্রিল এই মামলার কার্যক্রম শেষ হয়, ২৩ দিন পর ৯ মে রায় ঘোষণা করা হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘রায় দিতে কেন দেরি হচ্ছে, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। শুধু এতটুকু বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু একটি অনিচ্ছুক জাতিকে স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছিলেন। এ জন্য গোলাম আযম থেকে শুরু করে যুদ্ধাপরাধের সব মামলার রায়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হচ্ছে।’
বিচারসংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, নানা দিক থেকেই গোলাম আযমের মামলার রায় দ্রুত হওয়া দরকার। কারণ, রায় যা-ই হোক না কেন, সন্তোষজনক না হলে দুই পক্ষেরই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করার অধিকার রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ অনুসারে, রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে আপিল করতে হবে। এরপর রয়েছে আপিল নিষ্পত্তির সময়। ইতিমধ্যে আপিল বিভাগে মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায়ের আপিল শুনানি চলছে। সাঈদী ও কামারুজ্জামানের মামলার আপিল শুনানি এখনো শুরু হয়নি। এরপর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলাটি আপিল নিষ্পত্তির জন্য যুক্ত হলে তা বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে পড়ে যেতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রপক্ষের এক কৌঁসুলি প্রথম আলোকে বলেন, রায় যা-ই হোক, আপিল হবে এটা নিশ্চিত। এখন এক পক্ষ করবে নাকি দুই পক্ষই করবে, সেটা দেখার বিষয়। যার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, চলতি মাসেও যদি রায় ঘোষণা করা হয়, তার পরও স্বাভাবিকভাবে তা সেপ্টেম্বরের আগে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আবার আপিল নিষ্পত্তির জন্য আইনে দুই মাসের যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা-ও বাধ্যতামূলক নয়।
ট্রাইব্যুনাল-১-এ পাঁচটি ও ট্রাইব্যুনাল-২-এ দুটি—আরও মোট সাতটি মামলা এখন বিচারাধীন। ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, দলটির নায়েবে আমির এ কে এম ইউসুফ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা।
ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচারাধীন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীম এবং মঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা। এ ছাড়া জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মো. কায়সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের প্রধান সমন্বয়কারী এম কে রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রায় কবে হবে, এটা তো ট্রাইব্যুনালের বিষয়। আশা করি, খুব দ্রুত হয়ে যাবে।’
বিচারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ট্রাইব্যুনালের প্রতিটি মামলাই আলাদা ও অনন্য প্রকৃতির। একটির সঙ্গে আরেকটির তুলনা চলে না। অন্য মামলাগুলোর রায় দিতে কত সময় লেগেছে, সেই আলোচনা এখানে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। এ ছাড়া গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলাটি প্রকৃতি ও উপাদানগত দিক থেকে অন্যগুলোর চেয়ে একেবারেই আলাদা।
জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজ বলেন, ‘সিএভি মানে রায় ঘোষণার কোনো সময়সীমা নেই। এটা সম্পূর্ণ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার। তবে আমরা হয়তো এটা বলতে পারি, এই মামলায় অনেক আইনগত দিক আছে, যা অন্য মামলায় নেই। বিশ্বের অন্য দেশগুলোর আন্তর্জাতিক আদালত এসব আইনগত দিক কীভাবে বিচার করেছেন, তা যাচাই-বাছাই করতে অনেক সময়ের প্রয়োজন।’
এদিকে অপেক্ষাধীন রয়েছে আরেকটি মামলার রায়। ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচারাধীন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয় ৫ জুন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত দুটি ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত চারটি মামলার রায় দিয়েছেন। এই চারটি মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষে রায় ঘোষণার জন্য গড়ে এক মাস করে সময় লেগেছে। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সদস্য (রুকন) পলাতক আবুল কালাম আযাদের মৃত্যুদণ্ডের ওই রায় দিতে ট্রাইব্যুনালের সময় লাগে ২৬ দিন। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছিল। দ্বিতীয় রায়ও আসে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল থেকে। ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ১৭ জানুয়ারি কার্যক্রম শেষ হওয়া ওই মামলার রায় হয় ১৮ দিন পর। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তৃতীয় রায় ও ট্রাইব্যুনাল-১-এর প্রথম রায় আসে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সেদিন জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এই মামলার বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়েছিল ঠিক এক মাস আগে, ২৯ জানুয়ারি। সর্বশেষ রায় আসে ট্রাইব্যুনাল-২ থেকে, যাতে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। ১৬ এপ্রিল এই মামলার কার্যক্রম শেষ হয়, ২৩ দিন পর ৯ মে রায় ঘোষণা করা হয়।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘রায় দিতে কেন দেরি হচ্ছে, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। শুধু এতটুকু বলতে পারি, বঙ্গবন্ধু একটি অনিচ্ছুক জাতিকে স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছিলেন। এ জন্য গোলাম আযম থেকে শুরু করে যুদ্ধাপরাধের সব মামলার রায়ের জন্য আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হচ্ছে।’
বিচারসংশ্লিষ্ট অনেকের মতে, নানা দিক থেকেই গোলাম আযমের মামলার রায় দ্রুত হওয়া দরকার। কারণ, রায় যা-ই হোক না কেন, সন্তোষজনক না হলে দুই পক্ষেরই সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করার অধিকার রয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ অনুসারে, রায় ঘোষণার এক মাসের মধ্যে আপিল করতে হবে। এরপর রয়েছে আপিল নিষ্পত্তির সময়। ইতিমধ্যে আপিল বিভাগে মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রায়ের আপিল শুনানি চলছে। সাঈদী ও কামারুজ্জামানের মামলার আপিল শুনানি এখনো শুরু হয়নি। এরপর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলাটি আপিল নিষ্পত্তির জন্য যুক্ত হলে তা বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে পড়ে যেতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রপক্ষের এক কৌঁসুলি প্রথম আলোকে বলেন, রায় যা-ই হোক, আপিল হবে এটা নিশ্চিত। এখন এক পক্ষ করবে নাকি দুই পক্ষই করবে, সেটা দেখার বিষয়। যার অর্থ দাঁড়াচ্ছে, চলতি মাসেও যদি রায় ঘোষণা করা হয়, তার পরও স্বাভাবিকভাবে তা সেপ্টেম্বরের আগে নিষ্পত্তি হচ্ছে না। আবার আপিল নিষ্পত্তির জন্য আইনে দুই মাসের যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা-ও বাধ্যতামূলক নয়।
ট্রাইব্যুনাল-১-এ পাঁচটি ও ট্রাইব্যুনাল-২-এ দুটি—আরও মোট সাতটি মামলা এখন বিচারাধীন। ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন বিএনপির সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী, জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী, দলটির নায়েবে আমির এ কে এম ইউসুফ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা।
ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচারাধীন বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীম এবং মঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা। এ ছাড়া জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মো. কায়সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।
No comments