রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট অকার্যকর এক যুগ by শরিফুল হাসান ও মাহবুব আলম
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক যুগ ধরে সিনেটের কোনো অধিবেশন বসেনি। দল-মনোনীত উপাচার্যরাই ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নেন।
১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৪ সদস্যের একটি সিনেট কমিটি থাকার কথা।
১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৪ সদস্যের একটি সিনেট কমিটি থাকার কথা।
উপাচার্য নির্বাচন, নতুন বিভাগ খোলা, বাজেট অনুমোদন, আইন সংশোধনসহ যেকোনো
গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এই কমিটিতেই হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, আইন অনুযায়ী, প্রতিবছর অন্তত একবার হলেও সিনেট অধিবেশন বসার কথা। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ম অনুসরণ করা হয়। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট অধিবেশন না ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটির প্রণয়ন করা বাজেট সিন্ডিকেটে অনুমোদন করানো হয়, যা ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন। এ ছাড়া সিনেট অধিবেশন না ডাকার কারণে সবকিছু চূড়ান্ত থাকলেও বিভিন্ন ইনস্টিটিউটে নতুন কোর্স চালুর অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না।
১৯৯৯ সালের জুনে উপাচার্য আবদুল খালেকের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিনেট অধিবেশন বসে। এরপর গত এক যুগে পাঁচজন উপাচার্য দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু সিনেট অধিবেশন আর বসেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল খালেক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক যুগ ধরে সিনেট অধিবেশন ছাড়া চলবে, এটি কোনোভাবেই মানা যায় না। আমরা যখন প্রশাসনে ছিলাম, এটাকে মানার প্রয়োজন বোধ করেছি।’ আইন না মানলে সংশোধন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
শিক্ষকদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক দাবির মুখোমুখি হওয়ার ভয়েই এক যুগে কোনো উপাচার্যই সিনেট অধিবেশন ডাকেননি। শিক্ষক সমিতির সভাপতি আজহার আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিনেট নির্বাচন না হওয়ার ফলে অনির্বাচিত উপাচার্য দিনের পর দিন আছেন, থাকবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম হচ্ছে সিনেট। এক যুগ সেই অধিবেশন না হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কখনো কল্যাণকর হতে পারে না।’
১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, উপাচার্য বছরে অন্তত একবার সিনেটের সভা ডাকবেন, যা বার্ষিক সভা হিসেবে অভিহিত হবে। উপাচার্য চাইলে এর বাইরেও বিশেষ সভা আহ্বান করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালের ২৮ ও ২৯ জুন দুই দিন সর্বশেষ সিনেট সভা হয়। ২০তম ওই সভার পর আর কোনো সভা হয়নি। এরপর প্রশাসনে এসেছে রদবদল। উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন সাইদুর রহমান, ফাইসুল ইসলাম ফারুকী, মামনুল কেরামত ও এম আবদুস সোবহান। সর্বশেষ এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে উপাচার্যের দায়িত্ব পান মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।
যোগাযোগ করা হলে উপাচার্য বলেন, দীর্ঘদিন থেকে সিনেট না হওয়ায় সিনেট অধিবেশন হঠাৎ করেই ডাকা সম্ভব নয়। এটির পুনর্গঠন প্রয়োজন। শিক্ষক প্রতিনিধি, রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট ও ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন করে তারপর সিনেট ডাকতে হবে।
বাজেট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য সিনেটের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর সিনেটের বডি পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেছি। এর আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা এটা করেননি। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সিনেট অধিবেশন ডাকতে চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৪ সদস্যের একটি সিনেট রয়েছে, যার সভাপতি হিসেবে উপাচার্য এবং সচিবের দায়িত্বে আছেন রেজিস্ট্রার। তবে সিনেটের ১২টি পদ এখন শূন্য। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিও নির্বাচন হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে আরও জানা যায়, সিনেটে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েটদের জন্য যে ২৫টি পদ রয়েছে, তা ১৯৯৭ সালের পর থেকে আর নির্বাচিত করা হয়নি। তাঁদের অনেকে এখন বেঁচেও নেই। ২০০১ সালে একবার নতুন করে গ্র্যাজুয়েটদের নির্বাচিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা নানা কারণে সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া পাঁচটি ছাত্র প্রতিনিধির পদও খালি রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর ও ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) পরিচালক অধ্যাপক অভিনয় চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিনেট অধিবেশন না বসার কারণে আমরা স্নাতক (বিবিএ) কোর্স চালুর অনুমতি পাচ্ছি না। অথচ ইনস্টিটিউটে স্নাতক (বিবিএ) ডিগ্রি দেওয়ার জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। আমরা পাঠক্রম প্রস্তুত করে রেখেছি। একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট সব অনুমোদনও পাওয়া গেছে। শুধু সিনেট অধিবেশন না বসায় কোর্সটি চালু করা যাচ্ছে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, আইন অনুযায়ী, প্রতিবছর অন্তত একবার হলেও সিনেট অধিবেশন বসার কথা। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ম অনুসরণ করা হয়। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট অধিবেশন না ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটির প্রণয়ন করা বাজেট সিন্ডিকেটে অনুমোদন করানো হয়, যা ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশের লঙ্ঘন। এ ছাড়া সিনেট অধিবেশন না ডাকার কারণে সবকিছু চূড়ান্ত থাকলেও বিভিন্ন ইনস্টিটিউটে নতুন কোর্স চালুর অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না।
১৯৯৯ সালের জুনে উপাচার্য আবদুল খালেকের সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিনেট অধিবেশন বসে। এরপর গত এক যুগে পাঁচজন উপাচার্য দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু সিনেট অধিবেশন আর বসেনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল খালেক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক যুগ ধরে সিনেট অধিবেশন ছাড়া চলবে, এটি কোনোভাবেই মানা যায় না। আমরা যখন প্রশাসনে ছিলাম, এটাকে মানার প্রয়োজন বোধ করেছি।’ আইন না মানলে সংশোধন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
শিক্ষকদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক দাবির মুখোমুখি হওয়ার ভয়েই এক যুগে কোনো উপাচার্যই সিনেট অধিবেশন ডাকেননি। শিক্ষক সমিতির সভাপতি আজহার আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিনেট নির্বাচন না হওয়ার ফলে অনির্বাচিত উপাচার্য দিনের পর দিন আছেন, থাকবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম হচ্ছে সিনেট। এক যুগ সেই অধিবেশন না হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কখনো কল্যাণকর হতে পারে না।’
১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, উপাচার্য বছরে অন্তত একবার সিনেটের সভা ডাকবেন, যা বার্ষিক সভা হিসেবে অভিহিত হবে। উপাচার্য চাইলে এর বাইরেও বিশেষ সভা আহ্বান করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০১ সালের ২৮ ও ২৯ জুন দুই দিন সর্বশেষ সিনেট সভা হয়। ২০তম ওই সভার পর আর কোনো সভা হয়নি। এরপর প্রশাসনে এসেছে রদবদল। উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেছেন সাইদুর রহমান, ফাইসুল ইসলাম ফারুকী, মামনুল কেরামত ও এম আবদুস সোবহান। সর্বশেষ এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে উপাচার্যের দায়িত্ব পান মুহম্মদ মিজানউদ্দিন।
যোগাযোগ করা হলে উপাচার্য বলেন, দীর্ঘদিন থেকে সিনেট না হওয়ায় সিনেট অধিবেশন হঠাৎ করেই ডাকা সম্ভব নয়। এটির পুনর্গঠন প্রয়োজন। শিক্ষক প্রতিনিধি, রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট ও ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন করে তারপর সিনেট ডাকতে হবে।
বাজেট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের জন্য সিনেটের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর সিনেটের বডি পুনর্গঠনে কাজ শুরু করেছি। এর আগে যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা এটা করেননি। আমরা যত দ্রুত সম্ভব সিনেট অধিবেশন ডাকতে চাই।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৪ সদস্যের একটি সিনেট রয়েছে, যার সভাপতি হিসেবে উপাচার্য এবং সচিবের দায়িত্বে আছেন রেজিস্ট্রার। তবে সিনেটের ১২টি পদ এখন শূন্য। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধিও নির্বাচন হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে আরও জানা যায়, সিনেটে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েটদের জন্য যে ২৫টি পদ রয়েছে, তা ১৯৯৭ সালের পর থেকে আর নির্বাচিত করা হয়নি। তাঁদের অনেকে এখন বেঁচেও নেই। ২০০১ সালে একবার নতুন করে গ্র্যাজুয়েটদের নির্বাচিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা নানা কারণে সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া পাঁচটি ছাত্র প্রতিনিধির পদও খালি রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর ও ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) পরিচালক অধ্যাপক অভিনয় চন্দ্র সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিনেট অধিবেশন না বসার কারণে আমরা স্নাতক (বিবিএ) কোর্স চালুর অনুমতি পাচ্ছি না। অথচ ইনস্টিটিউটে স্নাতক (বিবিএ) ডিগ্রি দেওয়ার জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। আমরা পাঠক্রম প্রস্তুত করে রেখেছি। একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট সব অনুমোদনও পাওয়া গেছে। শুধু সিনেট অধিবেশন না বসায় কোর্সটি চালু করা যাচ্ছে না।’
No comments