মাঠের বাইরেও উত্তাপ
ক্রিকেট মাঠে সেরা মুহূর্তগুলোর একটি এসেছে পার্থে’—টি-টোয়েন্টি বিগ ব্যাশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কাল হাসিমুখে বললেন শেন ওয়াটসন। নিশ্চয়ই ভাবছেন দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ৯৫ রানের ইনিংসটা বা অস্ট্রেলিয়ার দুর্দান্ত ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলছেন তিনি?
ভুল। তাঁর নিজের মুখেই শুনুন, ‘সবাই জানে, জিমি অ্যান্ডারসন মাঠে কথা একটু বেশিই বলে। আমার ধারণা, ইংলিশরা ওকে একটা বাড়তি দায়িত্বও দিয়েছে—আমাদের উত্ত্যক্ত করা। তো, ওকে কিছুটা ফিরিয়ে দিতে পেরে ভালোই লেগেছে। দিনের শেষ বলের আগের বলে অ্যান্ডারসনের সিঙ্গেল না নেওয়া, এরপর শেষ বলে কলিংউডের আউট হওয়া তাই দারুণ উপভোগ করেছি।’
ঘটনা পার্থ টেস্টের তৃতীয় দিনের। শেষ বিকেলে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানকে আড়াল করা নাইটওয়াচম্যানের দায়িত্ব, কিন্তু শেষ বলের আগের বলে সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ পেয়েও নেননি অ্যান্ডারসন। পরের বলেই স্লিপে ধরা পড়েন কলিংউড।
নিজের বা দলের সাফল্যের চেয়েও এ ঘটনা ওয়াটসনের স্মরণীয় হওয়ায় অবাক হচ্ছেন? শুরু থেকে এবারের অ্যাশেজ অনুসরণ করে আসলে অবশ্য অবাক হওয়ার কথা নয়। ওয়াটসন যেমন বলেছেন, ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের মতো অ্যান্ডারসন এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্লেজিংয়েও। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম তো এই পেসারের নামই দিয়ে দিয়েছে ‘চিফ স্লেজার’। চিফ স্লেজারকে খোঁচা দেওয়ার এই সুযোগ ওয়াটসন ছাড়বেন কেন?
অ্যাশেজে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের মতো জমে উঠেছে কথার লড়াইও। পার্থে সুইং বোলিংয়ে ইংলিশদের বিধ্বস্ত করা মিচেল জনসন বলছেন, তাঁকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছে কেভিন পিটারসেনের উইকেটটা। শুনে পিটারসেন নাকি জনসনের কাছে ফোন নম্বর চেয়েছিলেন, যাতে ‘দুজন খুব ভালো বন্ধু হতে পারি।’ ফোনে দুজনের কথোপকথন শোভন কিছু হতো না, এটা তো বোঝাই যাচ্ছে। জনসন ফোন নম্বর দেননি, তবে পিটারসেনকে বলেছেন, ‘স্মার্ট পশ্চাৎদেশ।’
পিটারসেন-জনসনের ‘বীরত্ব’ তো তবু কথা-চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, প্রিয়র-সিডল নাকি একেবারে হাতাহাতির অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন! প্রথম ইনিংসে প্রিয়রকে বোল্ড করার পর নাকি ছাপার অযোগ্য কিছু একটা বলেছিলেন সিডল। প্রিয়র জবাব দিয়েছিলেন, ‘উইকেটটা পেয়েছিস তো ভাগ্যে।’ সিডল এরপর এমন কিছু একটা বলেছিলেন যাতে মাথায় রক্ত উঠে যায় প্রিয়রের। সেদিনই খেলা শেষে কার পার্কিংয়ে মুখোমুখি হন সিডলের। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রিয়র এমনভাবে এগিয়ে গিয়েছিলেন যেটাকে সোজা বাংলায় বলে ‘হাত থাকতে মুখে কী!’
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট-এ নিজের কলামে প্রিয়র অবশ্য এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তবে সিডলের স্লেজিং নিয়ে যা বলেছেন, তাতেই পরিষ্কার ঘটনা কত দূর গড়িয়েছে, ‘এমনকি বক্সিং ম্যাচেও আপনি খুব একটা দেখবেন না যে, কেউ একজন প্রতিপক্ষকে নকআউট করে নিচে ফেলে দেওয়ার পর আবার লাথি দিয়েছে।’ সিডল কিন্তু পুরো ব্যাপারটায় খুব মজা পেয়েছেন। বোলিংয়ের মতো স্লেজিংটাও যে তিনি মনপ্রাণ দিয়ে করেন! ভিক্টোরিয়ান ফাস্ট বোলার স্লেজিংকে মনে করেন জ্বলে ওঠার রসদ, ‘স্লেজিং খেলারই অংশ। খেলায় আমরা সবটুকু ঢেলে দিই, কিছুটা আবেগ তাই বেরিয়ে আসবেই। ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে মজা করতে আমি ভালোবাসি, স্লেজিং করলে আমার বোলিং আরও ভালো হয়। রিকি (পন্টিং) এটা জানে বলেই আমাকে তাতিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।’ স্লেজিংকে ‘মজা’ হিসেবে দেখেন বলেই চিফ স্লেজার অ্যান্ডারসন নন, সিডলের প্রিয় স্লেজার সোয়ান, ‘ও খুব মজার!’
সিডলের দাবি, হেরেছেন বলেই ছিঁচকাঁদুনের মতো আচরণ করছেন প্রিয়র। পিটারসেন কিন্তু এই স্লেজিংকে কোনো স্লেজিংই মনে করছেন না। ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রাদের স্লেজিংয়ের কাছে এসব নাকি নস্যি! ২০০৮ সালের সিডনি টেস্টের সেই ‘হরভজন-সাইমন্ডস’ বিতর্কের পর ক্রিকেটারদের মাঠে অনেক সংযত হতে বলেছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী পল মার্শের দাবি, অস্ট্রেলিয়ার পারফরম্যান্সের অধোগতিতে একটা বড় ভূমিকা রেখেছে এটা, ‘কোনো সন্দেহই নেই স্লেজিং কমিয়ে দেওয়া পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। অস্ট্রেলিয়া দলের ডিএনএতেই আছে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোর্ডের ওই সিদ্ধান্তের পর ক্রিকেটাররা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।’ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মুখপাত্র পিটার ইয়াং কিন্তু পার্থের স্লেজিংটাকে বলছেন ‘গ্রহণযোগ্য।’ এটা তাই নিশ্চিত, সিডল-জনসনের এই রূপ সামনেও দেখা যাবে। পার্থের পর পিটারসেন-অ্যান্ডারসনরাও নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবেন না। অ্যাশেজ তাহলে সত্যিই জমে উঠল!
ভুল। তাঁর নিজের মুখেই শুনুন, ‘সবাই জানে, জিমি অ্যান্ডারসন মাঠে কথা একটু বেশিই বলে। আমার ধারণা, ইংলিশরা ওকে একটা বাড়তি দায়িত্বও দিয়েছে—আমাদের উত্ত্যক্ত করা। তো, ওকে কিছুটা ফিরিয়ে দিতে পেরে ভালোই লেগেছে। দিনের শেষ বলের আগের বলে অ্যান্ডারসনের সিঙ্গেল না নেওয়া, এরপর শেষ বলে কলিংউডের আউট হওয়া তাই দারুণ উপভোগ করেছি।’
ঘটনা পার্থ টেস্টের তৃতীয় দিনের। শেষ বিকেলে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যানকে আড়াল করা নাইটওয়াচম্যানের দায়িত্ব, কিন্তু শেষ বলের আগের বলে সিঙ্গেল নেওয়ার সুযোগ পেয়েও নেননি অ্যান্ডারসন। পরের বলেই স্লিপে ধরা পড়েন কলিংউড।
নিজের বা দলের সাফল্যের চেয়েও এ ঘটনা ওয়াটসনের স্মরণীয় হওয়ায় অবাক হচ্ছেন? শুরু থেকে এবারের অ্যাশেজ অনুসরণ করে আসলে অবশ্য অবাক হওয়ার কথা নয়। ওয়াটসন যেমন বলেছেন, ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের মতো অ্যান্ডারসন এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্লেজিংয়েও। অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম তো এই পেসারের নামই দিয়ে দিয়েছে ‘চিফ স্লেজার’। চিফ স্লেজারকে খোঁচা দেওয়ার এই সুযোগ ওয়াটসন ছাড়বেন কেন?
অ্যাশেজে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের মতো জমে উঠেছে কথার লড়াইও। পার্থে সুইং বোলিংয়ে ইংলিশদের বিধ্বস্ত করা মিচেল জনসন বলছেন, তাঁকে সবচেয়ে বেশি আনন্দ দিয়েছে কেভিন পিটারসেনের উইকেটটা। শুনে পিটারসেন নাকি জনসনের কাছে ফোন নম্বর চেয়েছিলেন, যাতে ‘দুজন খুব ভালো বন্ধু হতে পারি।’ ফোনে দুজনের কথোপকথন শোভন কিছু হতো না, এটা তো বোঝাই যাচ্ছে। জনসন ফোন নম্বর দেননি, তবে পিটারসেনকে বলেছেন, ‘স্মার্ট পশ্চাৎদেশ।’
পিটারসেন-জনসনের ‘বীরত্ব’ তো তবু কথা-চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, প্রিয়র-সিডল নাকি একেবারে হাতাহাতির অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন! প্রথম ইনিংসে প্রিয়রকে বোল্ড করার পর নাকি ছাপার অযোগ্য কিছু একটা বলেছিলেন সিডল। প্রিয়র জবাব দিয়েছিলেন, ‘উইকেটটা পেয়েছিস তো ভাগ্যে।’ সিডল এরপর এমন কিছু একটা বলেছিলেন যাতে মাথায় রক্ত উঠে যায় প্রিয়রের। সেদিনই খেলা শেষে কার পার্কিংয়ে মুখোমুখি হন সিডলের। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রিয়র এমনভাবে এগিয়ে গিয়েছিলেন যেটাকে সোজা বাংলায় বলে ‘হাত থাকতে মুখে কী!’
ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট-এ নিজের কলামে প্রিয়র অবশ্য এ ঘটনা অস্বীকার করেছেন। তবে সিডলের স্লেজিং নিয়ে যা বলেছেন, তাতেই পরিষ্কার ঘটনা কত দূর গড়িয়েছে, ‘এমনকি বক্সিং ম্যাচেও আপনি খুব একটা দেখবেন না যে, কেউ একজন প্রতিপক্ষকে নকআউট করে নিচে ফেলে দেওয়ার পর আবার লাথি দিয়েছে।’ সিডল কিন্তু পুরো ব্যাপারটায় খুব মজা পেয়েছেন। বোলিংয়ের মতো স্লেজিংটাও যে তিনি মনপ্রাণ দিয়ে করেন! ভিক্টোরিয়ান ফাস্ট বোলার স্লেজিংকে মনে করেন জ্বলে ওঠার রসদ, ‘স্লেজিং খেলারই অংশ। খেলায় আমরা সবটুকু ঢেলে দিই, কিছুটা আবেগ তাই বেরিয়ে আসবেই। ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে মজা করতে আমি ভালোবাসি, স্লেজিং করলে আমার বোলিং আরও ভালো হয়। রিকি (পন্টিং) এটা জানে বলেই আমাকে তাতিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।’ স্লেজিংকে ‘মজা’ হিসেবে দেখেন বলেই চিফ স্লেজার অ্যান্ডারসন নন, সিডলের প্রিয় স্লেজার সোয়ান, ‘ও খুব মজার!’
সিডলের দাবি, হেরেছেন বলেই ছিঁচকাঁদুনের মতো আচরণ করছেন প্রিয়র। পিটারসেন কিন্তু এই স্লেজিংকে কোনো স্লেজিংই মনে করছেন না। ওয়ার্ন-ম্যাকগ্রাদের স্লেজিংয়ের কাছে এসব নাকি নস্যি! ২০০৮ সালের সিডনি টেস্টের সেই ‘হরভজন-সাইমন্ডস’ বিতর্কের পর ক্রিকেটারদের মাঠে অনেক সংযত হতে বলেছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী পল মার্শের দাবি, অস্ট্রেলিয়ার পারফরম্যান্সের অধোগতিতে একটা বড় ভূমিকা রেখেছে এটা, ‘কোনো সন্দেহই নেই স্লেজিং কমিয়ে দেওয়া পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। অস্ট্রেলিয়া দলের ডিএনএতেই আছে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোর্ডের ওই সিদ্ধান্তের পর ক্রিকেটাররা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল।’ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার মুখপাত্র পিটার ইয়াং কিন্তু পার্থের স্লেজিংটাকে বলছেন ‘গ্রহণযোগ্য।’ এটা তাই নিশ্চিত, সিডল-জনসনের এই রূপ সামনেও দেখা যাবে। পার্থের পর পিটারসেন-অ্যান্ডারসনরাও নিশ্চয়ই ছেড়ে কথা বলবেন না। অ্যাশেজ তাহলে সত্যিই জমে উঠল!
No comments