মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন-বগুড়ায় নির্বাচন ঘিরে শ্রমিকদের সংঘর্ষ পাঁচজন আহত

গুড়ায় মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সভাপতি পদের দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন। গতকাল মঙ্গলবার শহরের স্টেশন রোডে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও জেলা যুবলীগের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম মোহনকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।


শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যরা জানান, আগামী ২৬ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের কেন্দ্র নিয়ে সভাপতি পদের দুই প্রার্থী এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ মণ্ডল এবং বগুড়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইব্রাহিম হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। সাধারণ শ্রমিকরাও এ দুই নেতার পক্ষ নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েন।
দেড় মাস আগে অনুষ্ঠিত শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সভায় নির্বাচনের কেন্দ্র ও নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে ভোট গ্রহণের ঘোষণা দেয় নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ। তবে জিলা স্কুলে ভোট গ্রহণের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ করছিল ইব্রাহিমের সমর্থকরা।
নির্বাচনের কেন্দ্র পরিবর্তনের দাবিতে গতকাল ইব্রাহিমের সমর্থকরা শহরের স্টেশন রোডে অবস্থিত মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ের সামনে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় ইব্রাহিম হোসেন আত্মাহুতির হুমকি দেন। অন্য পক্ষের শ্রমিকরা সেখানে সমবেত হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এ সময় তারা কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। উভয় পক্ষের ইটপাটকেল নিক্ষেপের ফলে অন্তত পাঁচ শ্রমিক আহত হন। শ্রমিকরা জানান, বাইরে হট্টগোল চলাকালে মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে নির্বাচনসংক্রান্ত কাজ করছিলেন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান তৌফিক হাসান ময়না এবং সদস্যসচিব ও জেলা যুবলীগের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম মোহনসহ অন্যরা। সেখানে হামলা চালায় ইব্রাহিমের সমর্থকরা। একপর্যায়ে তারা মোহনকে লাঞ্ছিত করে। খবর পেয়ে বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে একদল পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জেলা যুবলীগের সভাপতিকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে শহরে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল জানান, ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইট ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। তবে এ সময় কোনো পক্ষেরই কেউ আহত হয়নি। পুলিশ সেখানে পেঁৗছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান তৌফিক হাসান ময়না বলেন, 'সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সভায় আমাদের নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বও দেওয়া হয়। কোনোভাবেই পরিচালনা পর্ষদ সাধারণ সভার সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে পারে না।' এ প্রসঙ্গে ইব্রাহিম হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর স্ত্রী শিল্পী হোসেন স্বামীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, 'সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কেন্দ্র পরিবর্তন নিয়ে তিনি (ইব্রাহিম) কথা বলতে গেলে নির্বাচন পর্যদের চেয়ারম্যান তাঁকে বের করে দেন।'
এ প্রসঙ্গে আরেক সভাপতি পদপ্রার্থী লতিফ বলেন, 'সবার মতের ভিত্তিইে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হবে না।'

No comments

Powered by Blogger.