বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি আমদানির অনুরোধ জানানো হবে- প্রধানমন্ত্রী আজ কুয়েত যাচ্ছেন

 দু'দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার কুয়েত যাচ্ছেন। সফরকালে পদ্মা সেতু নির্মাণে আর্থিক সহায়তার জন্য কুয়েতের প্রতি অনুরোধ জানাবে বাংলাদেশ। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ফের জনশক্তি আমদানিরও অনুরোধ জানানো হবে।
গত বছরের গোড়ার দিকে দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশটিতে এটি তাঁর প্রথম সফর। এর আগে তিনি সৌদি আরব ও কাতার সফর করেছিলেন। সূত্র জানায়, দুপুর দুইটায় কুয়েতের আমিরের পাঠানো বিশেষ বিমানে প্রধানমন্ত্রী কুয়েতের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং এ্যাম্বাসাডর এ্যাট লার্জ মোঃ জিয়াউদ্দিন তাঁর সঙ্গী হবেন। প্রধানমন্ত্রী সোমবার কুয়েতের আমির সাবাহ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ ছাড়ার দেশটির শীর্ষনেতৃবৃন্দের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন। কুয়েত চেম্বার অব কমার্সের দেয়া এক ভোজসভায়ও তিনি যোগ দেবেন। জানা গেছে, কুয়েতের আমিরের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে কুয়েতী সহায়তার বিষয় নিয়ে কথা বলবেন। আমিরের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী কুয়েত ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করবেন। কুয়েত ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে দেশটি বহির্বিশ্বের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নিমর্াণে আর্থিক সহায়তার জন্য কুয়েতের প্রতি আহ্বান জানাবেন বলে সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া জনশক্তি রফতানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামো নিমর্াণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কুয়েতী সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে সাহায্যের পরিবর্তে বাণিজ্য ও রফতানিসহ অন্যান্য খাতে সহযোগিতার জন্য দাতাদেশটির প্রতি অনুরোধ জানানো হবে। সফরকালে বাংলাদেশের প থেকে ওষুধ, সিরামিক. চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং হিমায়িত খাদ্য আমদানির জন্য কুয়েতের প্রতি অনুরোধ জানানো হবে। সূত্র জানায়, এ পর্যনত্ম বাংলাদেশের ১৬ টি অবকাঠামোসহ উন্নয়ন প্রকল্পে কুয়েত আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এ ছাড়া কুয়েতী সহায়তায় বর্তমানে আরও পাঁচটি প্রকল্প বাসত্মবায়নাধীন রয়েছে। কুয়েতের আর্থিক সাহায্যে নির্মিত উলেস্নখ্যযোগ্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামে তৃতীয় কর্ণফুলি সেতু, সিলেট-তামাবিল-জাফলং সড়ক এবং চট্টগ্রামের শিকলবাহায় ২২৫ মেগাওয়াট উৎপাদনমতার বিদু্যত কেন্দ্র।
কুয়েতে বর্তমানে প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছে। আকামা পরিবর্তনসহ বেশ কিছু জটিলতার কারণে বর্তমানে কুয়েতে বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। সফরকালে বাংলাদেশ থেকে আরও জনশক্তি নিয়োগের জন্য কুয়েতের প্রতি আহ্বান জানানো হবে। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার কুয়েত। দেশটিতে প্রায় পাঁচ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করছে। গত প্রায় তিন বছর ধরে কুয়েতে বাংলাদেশী শ্রমিক রফতানি বন্ধ রয়েছে। শ্রমবাজারটি চালু করতে এ সময় তেমন কোন কূটনৈতিক উদ্যোগও চোখে পড়েনি। কুয়েতী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আকামা পরিবর্তনের সুবিধাসহ বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি জনশক্তি রফতানির আহ্বান জানানো হবে। মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রী কুয়েত ত্যাগ করবেন। বুধবার সকালে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.