আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার প্রশ্নে খাজা নাজিমুদ্দিনের বিরোধিতা করার পর প্রতিনিয়তই ফুঁসে উঠছিল বাঙালী। আন্দোলন পূর্ববাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছিল বিভিন্ন শহরে ও গ্রামে।
মিছিলে মিছিলে ভরে গিয়েছিল ঢাকার রাজপথ। প্রতিবাদে মুখর হলো সারাদেশ। পাকিসত্মানের জন্মের পেছনে যে বাঙালীদেরও অবদান ছিল, তাদেরই পাকিসত্মানী নেতারা অগ্রাহ্য করতে শুরম্ন করলেন। দেশ ভাগের পর, যে লেখকদের লেখায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর প্রশসত্মি দেখা গেছে, তারাই জিন্নাহর ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেললেন। পূর্ববাংলাব্যাপী যে নতুন সাংস্কৃতিক চেতনার উন্মেষ ঘটেছিল, তা তখনকার লেখক-কবিদের লেখা ও ভাষণের মাধ্যমে ধরা দিয়েছিল। ভাষার প্রশ্নে লেখক সাহিত্যিকদের ভূমিকা বাঙালী চেতনাকে আরও বেশি জাগ্রত করেছিল। ভাষার মাস ফেব্রম্নয়ারির আজ সপ্তম দিন।আজ থেকে ৫৮ বছর আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল একুশে ফেব্রম্নয়ারির ঝাঁঝালো মিছিলে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারের রক্তস্রোতে। মায়ের ভাষার জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী শহীদের চেতনার পথ ধরে উঠে এসেছে '৫৪-এর নির্বাচন, '৬৬-এর ৬ দফা, উনসত্তরের গণঅভু্যথান আর একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এর মাধ্যমেই বিশ্বে অভু্যদয় ঘটে নতুন এক ভূখ-ের। যার নাম বাংলাদেশ। বস্তুত দুখিনী বর্ণমালা অ, আ, ক, খ-ই রচনা করে দিয়েছিল বাঙালীর স্বাধীনতার ভিত। এ কারণে সমগ্র বাঙালীর জীবনে ফেব্রম্নয়ারি মাসের গুরম্নত্ব অধিক। তাই এই মাস রাষ্ট্রভাষার মাস হিসেবে দেশব্যাপী চলে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা ও বক্তৃতা। এ উপলৰে বাংলা একাডেমীর মূল মঞ্চে 'ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাসকথা : ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৩' শীর্ষক আলোচনায় আজ বিকেল চারটায় ভাষা শহীদ রফিক উদ্দিনকে নিয়ে সেমিনার। এতে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক আফসার আহমেদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন এম আব্বাস উদ্দিন আহমেদ। আরও বক্তৃতা করবেন ইঞ্জিনিয়ার তোবারক হোসেন ও শাহিদা খাতুন।
No comments