সুবচন নির্বাসনের উদ্বোধনী প্রদর্শনী শিল্পকলায়- সংস্কৃতি সংবাদ

 স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নাট্যকর্মীদের শ্রম ও মেধায় ক্রমশই এগিয়ে গেছে মঞ্চনাটক। শিল্পমাধ্যম হিসেবে বিশ্বব্যাপী এখন দারুণ সমাদৃত বাংলাদেশের মঞ্চনাটক। এই সফলতারই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার ঢাকার মঞ্চে যোগ হলো আরেকটি নতুন নাটক।
সুবচন নির্বাসনে নামের প্রযোজনাটি মঞ্চে এনেছে নাট্য প্রয়াস। আবদুল্লাহ আল মামুনের রচনা থেকে নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন শিশির রহমান। এটি দলের ষষ্ঠ প্রযোজনা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমীর স্টুডিও থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয়। আর নতুন নাটকটি নিয়ে দর্শকদের ছিল বাড়তি আগ্রহ। উচ্চাকাক্সক্ষা নিবৃত্ত করতে সামাজিক মূল্যবোধ বিসর্জনের গল্প নিয়ে এগিয়েছে নাটকের কাহিনী। ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে নতুন একটি দেশ। এ সুযোগে লোভের বশবর্তী হয়ে অনেকেই মেতে ওঠে দ্রুত ভাগ্য পরিবর্তনের খেলায়। যে প্রক্রিয়া আজও অব্যাহত রয়েছে। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জীবনের পথচলা যেন অনেকটাই নির্বুদ্ধিতা বলে প্রতীয়মান হয়। ফলে সমাজে নেমে আসে হতাশা। বেড়ে ওঠে আইন অমান্য করার প্রবণতা। ক্রমশই হারিয়ে যেতে থাকে মানবিকতা। সততা ও সুনীতি যেন আজকের যুগে অচল হয়ে গেছে। চারদিকে যে মিথ্যা কিংবা পথভ্রষ্টতার বেসাতি তার বিরুদ্ধে এক বিদ্রƒপাত্মক প্রতিবাদ সুবচন নির্বাসনে।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন খন্দকার সানাউল হক, পলাশ বন্ধু কর, ইমন পাল, কামরুল হাসান, সুভাষ চন্দ্র দেবনাথ, মোতালেব হোসেন, তনুশ্রী সাহা প্রমুখ।
মাহিদুল ইসলামের আবৃত্তিসন্ধ্যা ॥ জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলামের একক আবৃত্তিসন্ধ্যা আজ শুক্রবার। শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৫টায় এই আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হবে। একজন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা সহায়তার জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ‘পুনরাবৃত্তি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মাহিদুল ইসলাম ইতোমধ্যে আবৃত্তি করা জনপ্রিয় কবিতাগুলো পাঠ করবেন। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় প্রায় পঞ্চাশটি কবিতা নিয়ে এই আবৃত্তি সন্ধ্যা সজানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
বই পড়া কর্মসূচীর পুরস্কার ॥ আলোকিত মানুষ গড়ার প্রত্যয়ে বছরজুড়েই চলে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বই পড়া কর্মসূচী। বই পড়া নিয়ে প্রতিযোগিতার এমন আসরে অংশ নেয় সারাদেশের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আর সেসব শিক্ষার্থীকে পুরস্কার তুলে দেয়া হবে আজ শুক্রবার থেকে। সকাল নয়টায় রাজধানীর রমনা বটমূলে এ পুরস্কার বিতরণীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবে।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেল অনুষ্ঠিত হয়। এতে কর্মসূচীর তাৎপর্যসহ বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এই কর্মসূচীর সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের করপোরেট রেসপন্সিবিলিটি বিভাগের প্রধান দেবাশীষ রায় ও কেন্দ্রের পরিচালক শরিফ মোহাম্মদ মাসুদ।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, গত ৩৪ বছর ধরে বই পড়াকে উৎসাহিত করতে এই কর্মসূচী চালিয়ে আসছে সাহিত্য কেন্দ্র। বর্তমানে সারাদেশের সাত হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাত লাখ ছাত্রছাত্রী এই কর্মসূচীর সদস্য। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনায় তিনটি বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার দেয়া হয়। এতে প্রায় ২৫ হাজার ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকের সমাবেশ ঘটে। এ ধারাবাহিকতায় এবারেও ঢাকায় দুই দিনব্যাপী এবং চট্টগ্রাম ও খুলনায় একদিন করে মোট তিনটি পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকায় আজ রমনার বট মূলে সকাল নয়টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বেলা একটা পর্যন্ত চলবে প্রথম পর্ব। মধ্যাহ্ন বিরতির পর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে বেলা আড়াইটা থেকে। চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। শনিবার দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান হবে বেলা আড়াইটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।
চট্টগ্রামে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হবে ১৫ মার্চ, চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল প্রাঙ্গণে। খুলনার অনুষ্ঠান হবে ২২ মার্চ স্থানীয় করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে।
পাপেট থিয়েটার প্রশিক্ষণ কর্মশালা
‘দেশজ সংস্কৃতির বিকাশ ও আন্তর্জাতিক সংস্কৃতির সঙ্গে মেলবন্ধন’ শীর্ষক কর্মসূচির আওতায় শিল্পকলা একাডেমীতে শুরু হয়েছে সাতদিনের পাপেট থিয়েটার কর্মশালা। বৃহস্পতিবার জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার।
শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের আয়োজনে আবাসিক এই কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন জেলার, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং ঢাকা মহানগরের নাট্যদলগুলো থেকে ৩৫ নাট্যকর্মী অংশ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন হলেন বরেণ্য শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, ভারতের পাপেট থিয়েটার নির্মাতা সুদীপ গুপ্ত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদ হারুন এবং শিল্পী কিরিটি রঞ্জন বিশ্বাস।

No comments

Powered by Blogger.