কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা- যুক্তি উপস্থাপন শেষ, রায় যেকোনো দিন
মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের
বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আরেকটি মামলায় গতকাল
বৃহস্পতিবার যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে।
এটি হলো জামায়াতে
ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে করা
মামলা। এ মামলার রায়ও অপেক্ষাধীন রেখেছেন ট্রাইব্যুনাল। অর্থাৎ যেকোনো দিন এ
রায় ঘোষণা করা হতে পারে। এর আগে একই ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক সদস্য
(রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মামলাটির রায় অপেক্ষাধীন রাখেন। এ ছাড়া
ট্রাইব্যুনাল-১ পুনর্গঠিত হওয়ায় সেখানে বিচারাধীন জামায়াতের নায়েবে আমির
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় নতুন করে যুক্তি উপস্থাপন চলছে।
এটির রায়ও অপেক্ষাধীন ছিল।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও মো. শাহিনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২-এ গতকাল শেষ দিনে কাদের মোল্লার পক্ষে যুক্তি দেন তাঁর প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক। পরে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ বা সিএভি (কেস অ্যায়োইটস ভারডিক্ট) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
যুক্তি উপস্থাপনকালে আবদুর রাজ্জাক রুয়ান্ডার জ্য পল আকায়েইসু ও লাইবেরিয়ার চার্লস টেলরের বিচার-প্রক্রিয়া উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী (মোজাফফর আহমেদ খান) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই সাক্ষী বলেছেন, কাদের মোল্লাকে তিনি মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সামনে অস্ত্র হাতে দেখেছেন। কিন্তু তিনি কাদের মোল্লাকে চিনলেন কীভাবে? এ ছাড়া কাদের মোল্লা যদি কমান্ডার হবেন, তাহলে তিনি অস্ত্র হাতে সেখানে পাহারা দেবেন কেন? সব শেষে আবদুর রাজ্জাক বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ না থাকায় কাদের মোল্লার বিচার করা যায় না। পরে ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যের মাধ্যমে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি গত বুধবার আসামিপক্ষের যুক্তির জবাব দেওয়ার সময় এ মামলায় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিন যুক্তি উপস্থাপন করে। ৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন চলে আট দিন।
২০১০ সালের ২১ জুলাই তদন্ত সংস্থা কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আবদুর রাজ্জাক খান ও মনোয়ারা বেগম। ওই বছরের ২ আগস্ট কাদের মোল্লাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর তদন্ত শেষে ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বছরের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হলে মামলাটি নবগঠিত ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন ট্রাইব্যুনাল-১।
গত ২৮ মে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-২। ২০ জুন রাষ্ট্রপক্ষ সূচনা বক্তব্য দেয়, ৩ জুলাই থেকে সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয়। দুজন তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ১২ জন, আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন ছয়জন। আসামিপক্ষের প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন কাদের মোল্লা।
ছয় অভিযোগ
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ হলো, একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দান। দ্বিতীয় অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাসায় গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৯ মার্চ বিকেলে আরামবাগ থেকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জল্লাদখানা পাম্পহাউসে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটার চরে (শহীদনগর) শতাধিক গ্রামবাসীকে হত্যা করেন। পঞ্চম অভিযোগ অনুসারে, ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালান। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত হন।
ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা, তাঁর সহযোগী এবং পাকিস্তানি সেনারা মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনে এক ব্যক্তির বাসায় যান। কাদের মোল্লার নির্দেশে ওই ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণের শিকার হয় এক মেয়ে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও মো. শাহিনুর ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২-এ গতকাল শেষ দিনে কাদের মোল্লার পক্ষে যুক্তি দেন তাঁর প্রধান আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক। পরে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ বা সিএভি (কেস অ্যায়োইটস ভারডিক্ট) রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
যুক্তি উপস্থাপনকালে আবদুর রাজ্জাক রুয়ান্ডার জ্য পল আকায়েইসু ও লাইবেরিয়ার চার্লস টেলরের বিচার-প্রক্রিয়া উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী (মোজাফফর আহমেদ খান) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই সাক্ষী বলেছেন, কাদের মোল্লাকে তিনি মোহাম্মদপুর শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সামনে অস্ত্র হাতে দেখেছেন। কিন্তু তিনি কাদের মোল্লাকে চিনলেন কীভাবে? এ ছাড়া কাদের মোল্লা যদি কমান্ডার হবেন, তাহলে তিনি অস্ত্র হাতে সেখানে পাহারা দেবেন কেন? সব শেষে আবদুর রাজ্জাক বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ না থাকায় কাদের মোল্লার বিচার করা যায় না। পরে ট্রাইব্যুনাল থেকে বেরিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যের মাধ্যমে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি গত বুধবার আসামিপক্ষের যুক্তির জবাব দেওয়ার সময় এ মামলায় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিন যুক্তি উপস্থাপন করে। ৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন চলে আট দিন।
২০১০ সালের ২১ জুলাই তদন্ত সংস্থা কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আবদুর রাজ্জাক খান ও মনোয়ারা বেগম। ওই বছরের ২ আগস্ট কাদের মোল্লাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর তদন্ত শেষে ১৮ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১-এ তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। গত বছরের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হলে মামলাটি নবগঠিত ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করেন ট্রাইব্যুনাল-১।
গত ২৮ মে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল-২। ২০ জুন রাষ্ট্রপক্ষ সূচনা বক্তব্য দেয়, ৩ জুলাই থেকে সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয়। দুজন তদন্ত কর্মকর্তাসহ রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন ১২ জন, আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন ছয়জন। আসামিপক্ষের প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন কাদের মোল্লা।
ছয় অভিযোগ
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ হলো, একাত্তরের ৫ এপ্রিল মিরপুর বাঙলা কলেজের ছাত্র পল্লবকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ দান। দ্বিতীয় অভিযোগ অনুসারে, একাত্তরের ২৭ মার্চ কাদের মোল্লা তাঁর সহযোগীদের নিয়ে কবি মেহেরুননিসা, তাঁর মা এবং দুই ভাইকে মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বাসায় গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেন। তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৯ মার্চ বিকেলে আরামবাগ থেকে সাংবাদিক খন্দকার আবু তালেবকে কাদের মোল্লা ও তাঁর সহযোগীরা জল্লাদখানা পাম্পহাউসে নিয়ে জবাই করে হত্যা করেন।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ নভেম্বর কাদের মোল্লা ও ৬০-৭০ জন রাজাকার কেরানীগঞ্জ থানার ভাওয়াল খানবাড়ি এবং ঘাটার চরে (শহীদনগর) শতাধিক গ্রামবাসীকে হত্যা করেন। পঞ্চম অভিযোগ অনুসারে, ২৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনা ও অবাঙালি রাজাকারদের সঙ্গে কাদের মোল্লা মিরপুরের আলোকদী (আলুব্দী) গ্রামে হামলা চালান। ওই ঘটনায় ৩৪৪ জনের বেশি নিহত হন।
ষষ্ঠ অভিযোগে বলা হয়েছে, একাত্তরের ২৬ মার্চ কাদের মোল্লা, তাঁর সহযোগী এবং পাকিস্তানি সেনারা মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনে এক ব্যক্তির বাসায় যান। কাদের মোল্লার নির্দেশে ওই ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং দুই বছরের এক ছেলেকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণের শিকার হয় এক মেয়ে।
No comments