সংলাপমুখী রাজনীতি-সংঘাত নয়, সমঝোতাই কাম্য
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচিত বিষয় এখন আগামী জাতীয় নির্বাচন কোন ধরনের সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে- অন্তর্বর্তী না তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হওয়ার পর বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নতুন করে প্রবর্তনের দাবিতে অনড়।
অন্যদিকে সরকার শুরুতে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বললেও এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে। সরকারের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলা হচ্ছে। সম্প্রতি লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি রূপরেখাও দিয়েছেন। বিএনপি শুরুতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে। স্বাভাবিকভাবেই আগামী নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন নিয়ে সরকার ও বিরোধী দল উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। ওদিকে বিরোধী দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ঈদের পর নতুন আন্দোলন করার কথা বলে আসছে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঈদের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সংঘাত অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে বলে সচেতন মহলের আশঙ্কা। অবশ্য বিরোধী দল আন্দোলনের পাশাপাশি আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।
অতীতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখনই নানা কারণে উত্তপ্ত হয়েছে, তখনই পরিস্থিতি অনিবার্য সংঘাতের দিকেই গেছে। বিভিন্ন সময়ের সেই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের স্মৃতি কোনো রাজনৈতিক দলের কাছেই সুখকর নয়। বিশেষ করে গত নির্বাচনের আগে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল, তাতে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। গণতন্ত্র নির্বাসনে পাঠিয়ে সংবিধানবহির্ভূতভাবে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্দিষ্ট সময়ের আট গুণ বেশি সময় ক্ষমতায় থাকে। এই সময়ে দেশের রাজনীতিকে দূষণমুক্ত করার নামে যা করা হয়েছে, সে অভিজ্ঞতাও সুখপ্রদ নয়। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নিকট-অতীতের সে অভিজ্ঞতা প্রায় বিস্মৃত হলেও পর্যবেক্ষক মহল এখনো সেই অশনিসংকেত দেখতে পায়। একটি অদৃশ্য শক্তি আড়ালে কলকাঠি নাড়ছে- এমন আশঙ্কা করা হয়তো একেবারে অমূলক নয়। কিন্তু সেই অবস্থা আমাদের দেশে ফিরে আসুক- এমনটি আমাদের কারো কাম্য নয়। তবু নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো। গত নির্বাচনের আগে ওয়ান-ইলেভেন নামের যে পদ্ধতি একটি সংবিধানবহির্ভূত সরকার ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়, সেই সরকার ব্যবস্থা দেশের রাজনীতিকে কলুষযুক্ত প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। দেশের সাধারণ মানুষের কাছে রাজনীতিবিদদের বিতর্কিত চরিত্র তুলে ধরতেই সচেষ্ট ছিল দুই বছর। দুই প্রধান নেত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
এখন নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই আলোচনার শীর্ষে আসছে নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন কী হবে। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারাও একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার ব্যাপারে জোর তাগিদ দিচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে এবার তার ফল মোটেও ভালো হবে না। সেই কারণে আগামী সরকারের ধরন ও নির্বাচন বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন। সেই সমঝোতার পথ খুঁজে বের করতে সংলাপ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সবাই জোর দিয়েছে। কিন্তু সরকার ও বিরোধী দল এখন পর্যন্ত নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। নিজেদের দল ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মধ্যেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে তারা।
এখন অন্তর্বর্তীকালীন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার একটি সমন্বয় প্রয়োজন। এই সমন্বয়ের জন্য সংলাপ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। শীর্ষ দুই নেত্রীকে সহমতে পৌঁছতে দলগুলো আলাদা আলাদা করে সংলাপ অনুষ্ঠান করতে পারে। এক দিনেই সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না। নিজেদের মুখ না দেখাদেখির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে পরমতসহিষ্ণুতার পরীক্ষায় উভয় দলকেই উত্তীর্ণ হতে হবে। আস্থার সংকট কাটবেই, এ বিশ্বাস নিয়েই বসতে হবে আলোচনায়।
রাজনীতিতে সংঘাত নয়, সমঝোতাই আমাদের কাম্য। সেই সমঝোতায় পৌঁছানোর সোপান হতে পারে সংলাপ।
অতীতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখনই নানা কারণে উত্তপ্ত হয়েছে, তখনই পরিস্থিতি অনিবার্য সংঘাতের দিকেই গেছে। বিভিন্ন সময়ের সেই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের স্মৃতি কোনো রাজনৈতিক দলের কাছেই সুখকর নয়। বিশেষ করে গত নির্বাচনের আগে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছিল, তাতে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। গণতন্ত্র নির্বাসনে পাঠিয়ে সংবিধানবহির্ভূতভাবে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্দিষ্ট সময়ের আট গুণ বেশি সময় ক্ষমতায় থাকে। এই সময়ে দেশের রাজনীতিকে দূষণমুক্ত করার নামে যা করা হয়েছে, সে অভিজ্ঞতাও সুখপ্রদ নয়। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নিকট-অতীতের সে অভিজ্ঞতা প্রায় বিস্মৃত হলেও পর্যবেক্ষক মহল এখনো সেই অশনিসংকেত দেখতে পায়। একটি অদৃশ্য শক্তি আড়ালে কলকাঠি নাড়ছে- এমন আশঙ্কা করা হয়তো একেবারে অমূলক নয়। কিন্তু সেই অবস্থা আমাদের দেশে ফিরে আসুক- এমনটি আমাদের কারো কাম্য নয়। তবু নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো। গত নির্বাচনের আগে ওয়ান-ইলেভেন নামের যে পদ্ধতি একটি সংবিধানবহির্ভূত সরকার ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়, সেই সরকার ব্যবস্থা দেশের রাজনীতিকে কলুষযুক্ত প্রমাণ করার চেষ্টা করেছে। দেশের সাধারণ মানুষের কাছে রাজনীতিবিদদের বিতর্কিত চরিত্র তুলে ধরতেই সচেষ্ট ছিল দুই বছর। দুই প্রধান নেত্রীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
এখন নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই আলোচনার শীর্ষে আসছে নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন কী হবে। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারাও একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার ব্যাপারে জোর তাগিদ দিচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হলে এবার তার ফল মোটেও ভালো হবে না। সেই কারণে আগামী সরকারের ধরন ও নির্বাচন বিষয়ে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন। সেই সমঝোতার পথ খুঁজে বের করতে সংলাপ অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সবাই জোর দিয়েছে। কিন্তু সরকার ও বিরোধী দল এখন পর্যন্ত নিজ নিজ অবস্থানে অনড়। নিজেদের দল ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মধ্যেই আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছে তারা।
এখন অন্তর্বর্তীকালীন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার একটি সমন্বয় প্রয়োজন। এই সমন্বয়ের জন্য সংলাপ অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। শীর্ষ দুই নেত্রীকে সহমতে পৌঁছতে দলগুলো আলাদা আলাদা করে সংলাপ অনুষ্ঠান করতে পারে। এক দিনেই সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে না। নিজেদের মুখ না দেখাদেখির সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে পরমতসহিষ্ণুতার পরীক্ষায় উভয় দলকেই উত্তীর্ণ হতে হবে। আস্থার সংকট কাটবেই, এ বিশ্বাস নিয়েই বসতে হবে আলোচনায়।
রাজনীতিতে সংঘাত নয়, সমঝোতাই আমাদের কাম্য। সেই সমঝোতায় পৌঁছানোর সোপান হতে পারে সংলাপ।
No comments