চোখে দেখেই ফিটনেস সনদ দিচ্ছে বিআরটিএ by টিটু সাহা
রাজধানীর ক্ষিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ডে বৃহষ্পতিবার দুপুরে যাত্রাবাড়ী-টঙ্গী রুটের তুরাগ পরিবহণের একটি বাস (ঢাকা মেট্রো জ-১৪২৫৩৮) কাগজপত্র পরীক্ষার জন্য দাঁড় করান একজন পুলিশ সার্জেন্ট। তিনি বাসটির ফিটনেস সনদসহ অন্য সব কাগজপত্র ঠিকঠাক দেখে ছেড়ে দেন। এরপর বাসটি কিছুদুর সামনে গিয়ে হঠাৎ থেমে যায়। ব্যাপার কী, যাত্রীরা জানতে চাইলে বাসের সহকারী জানায়, ইঞ্জিনে সমস্যা। আর যাবে না।
তুরাগ পরিবহণের এ বাসটির মতো নগরীতে এমন অনেক লক্করঝক্কর মার্কা আনফিট গাড়ি রাস্তায় চলছে। কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, সেগুলোর ফিটনেস সনদ আছে। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআরটিএ) এই অচল গাড়িগুলোর ফিটনেস সনদ দিচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষার ভেহিকল ইন্সপেকশন সেন্টার (ভিআইসি) বা যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্রের যন্ত্রগুলো খারাপ হয়ে পড়ে আছে। তাই বিভিন্ন যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করা হচ্ছে শুধু চোখে দেখেই।
জানা যায়, রাজধানীতে বিআরটিএর মিরপুর এবং ইকুরিয়ায় দুটি কার্যালয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ যানবাহনের ফিটনেস সনদ দেওয়া হচ্ছে।
মিরপুরে বিআরটিএ ঢাকা সার্কেল (উত্তর) কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক সুব্রত কুমার দেবনাথ বলেন, ‘এ কার্যালয় থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া ইকুরিয়া কার্যালয় থেকে রাজধানীতে প্রতিদিন আরো প্রায় ২০০ গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা হয়। ভিআইসি নষ্ট হওয়ায় খালি চোখেই পরীক্ষাগুলো করতে হচ্ছে।’
ভিআইসি নষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশকে দায়ী করেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিদর্শক বলেন, ‘দক্ষ জনবলের অভাবেই মূলতঃ যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।’
খালি চোখে মোটরযানের সব ত্রুটি বের করা সম্ভব হয় না বলে তিনি স্বীকার করেন।
বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ে যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্রটিতে সরজমিন দেখা যায়, এটি পুরোপুরি বিকল হয়ে পড়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিভিন্ন যন্ত্রাংশে মরচে ধরেছে। এর চারিদিকে ধূলা-ময়লা জমে আছে। ভিআইসি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে পুরোনো বস্তা ও কাগজপত্র রাখার গুদাম হিসেবে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, প্রায় আট বছর ধরে কেন্দ্রটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এখানকার ৬ জন পরিদর্শক বর্তমানে খালি চোখেই প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের মোটরযানের পরীক্ষা করছেন।
ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক এবং অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের (এআরআই) সাবেক পরিচালক শামছুল হক বলেন, ‘যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে কখনোই একটি গাড়ির খুঁটিনাটি দোষত্রুটি বের করা সম্ভব নয়। এভাবে গাড়ি পরীক্ষা করে ফিটনেস সনদ দিলে এসব গাড়ি রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।’
বিআরটিএ সূত্রে আরো জানা যায়, নষ্ট হওয়া ভিআইসিগুলো পূণরায় চালু করার জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালের মধ্যে এগুলো ঠিক করার কথা থাকলেও তা করা যায়নি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আর মন্ত্রণালয় ও এডিবিতে ফাইল চালাচালি ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি।
এদিকে যানবাহনের ফিটনেস কার্যক্রম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে গত বছরের শেষ দিকে বিআরটিএকে ৩ মাস সময় দেয় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে ইওআই (এক্সপ্রেসন অব ইন্টারেস্ট) আহ্বান করে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার রেজিস্ট্রেশনকৃত যানবাহনের ফিটনেস নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে প্রক্রিয়াটিও আটকে আছে অজানা কারণে।
এ ব্যাপারে বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জি) সাইফুল হক বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের অধীনে এনে সেগুলোকে দিয়ে কাজ করাতে হবে। কিন্তু মোটরযান অধ্যাদেশে এজন্য কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। আইন সংশোধনের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, সারাদেশে বিভিন্ন যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য ২০০৪ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচটি ভিআইসি স্থাপন করা হয়। রাজধানীর মিরপুর এবং ইকুরিয়ায় একটি করে ভিআইসি স্থাপন করা হয়।
রাজধানীতে প্রায় সাড়ে ৫ লাখসহ সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ যানবাহন রয়েছে।
মিরপুরে বিআরটিএ ঢাকা সার্কেল (উত্তর) কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক সুব্রত কুমার দেবনাথ বলেন, ‘এ কার্যালয় থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০ গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া ইকুরিয়া কার্যালয় থেকে রাজধানীতে প্রতিদিন আরো প্রায় ২০০ গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা হয়। ভিআইসি নষ্ট হওয়ায় খালি চোখেই পরীক্ষাগুলো করতে হচ্ছে।’
ভিআইসি নষ্ট হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের আবহাওয়া ও পরিবেশকে দায়ী করেন।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরিদর্শক বলেন, ‘দক্ষ জনবলের অভাবেই মূলতঃ যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।’
খালি চোখে মোটরযানের সব ত্রুটি বের করা সম্ভব হয় না বলে তিনি স্বীকার করেন।
বিআরটিএ মিরপুর কার্যালয়ে যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্রটিতে সরজমিন দেখা যায়, এটি পুরোপুরি বিকল হয়ে পড়ে আছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিভিন্ন যন্ত্রাংশে মরচে ধরেছে। এর চারিদিকে ধূলা-ময়লা জমে আছে। ভিআইসি এখন ব্যবহার করা হচ্ছে পুরোনো বস্তা ও কাগজপত্র রাখার গুদাম হিসেবে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, প্রায় আট বছর ধরে কেন্দ্রটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। এখানকার ৬ জন পরিদর্শক বর্তমানে খালি চোখেই প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের মোটরযানের পরীক্ষা করছেন।
ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক এবং অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারের (এআরআই) সাবেক পরিচালক শামছুল হক বলেন, ‘যন্ত্র ছাড়া খালি চোখে কখনোই একটি গাড়ির খুঁটিনাটি দোষত্রুটি বের করা সম্ভব নয়। এভাবে গাড়ি পরীক্ষা করে ফিটনেস সনদ দিলে এসব গাড়ি রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।’
বিআরটিএ সূত্রে আরো জানা যায়, নষ্ট হওয়া ভিআইসিগুলো পূণরায় চালু করার জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। ২০১১ সালের মধ্যে এগুলো ঠিক করার কথা থাকলেও তা করা যায়নি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আর মন্ত্রণালয় ও এডিবিতে ফাইল চালাচালি ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি।
এদিকে যানবাহনের ফিটনেস কার্যক্রম বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সম্পন্ন করতে গত বছরের শেষ দিকে বিআরটিএকে ৩ মাস সময় দেয় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে ইওআই (এক্সপ্রেসন অব ইন্টারেস্ট) আহ্বান করে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার রেজিস্ট্রেশনকৃত যানবাহনের ফিটনেস নির্ধারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে প্রক্রিয়াটিও আটকে আছে অজানা কারণে।
এ ব্যাপারে বিআরটিএর পরিচালক (ইঞ্জি) সাইফুল হক বলেন, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিবন্ধনের অধীনে এনে সেগুলোকে দিয়ে কাজ করাতে হবে। কিন্তু মোটরযান অধ্যাদেশে এজন্য কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। আইন সংশোধনের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, সারাদেশে বিভিন্ন যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য ২০০৪ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এর অর্থায়নে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাঁচটি ভিআইসি স্থাপন করা হয়। রাজধানীর মিরপুর এবং ইকুরিয়ায় একটি করে ভিআইসি স্থাপন করা হয়।
রাজধানীতে প্রায় সাড়ে ৫ লাখসহ সারাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ যানবাহন রয়েছে।
No comments