রাজনীতি-তেল নিয়ে তেলেসমাতি by নুরুল ইসলাম বিএসসি
সরকার চালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পেরেছে। অথচ ওই সস্তা চাল পেয়েও মানুষের মুখের গুঞ্জন কেন, উপলব্ধি করার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। সংসদ আছে, সংসদ অধিবেশন চলছে, এ সময় সংসদকে পাশ কাটিয়ে কর্মকাণ্ডগুলো যারা করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা কোনো অবস্থাতেই ভালো কাজ করছেন বলে বলা যাবে না
ভোজ্যতেল নিয়ে নানা তেলেসমাতির কথা আমরা জানি; কিন্তু জ্বালানি তেল নিয়ে নানামুখী তেলেসমাতি অনেককে
ভোজ্যতেল নিয়ে নানা তেলেসমাতির কথা আমরা জানি; কিন্তু জ্বালানি তেল নিয়ে নানামুখী তেলেসমাতি অনেককে
অবাক করেছে। গভীর রাতে তেলের দাম বৃদ্ধি, দস্তুরমতো তুঘলকি কর্মকাণ্ড ছাড়া অন্য কিছু ভাবার অবকাশ নেই। অর্থমন্ত্রী বলেন, সিএনজির দাম ডিজেলের সমান করবেন আর রাতে দেখা গেল সিএনজি নয়, জ্বালানি তেলের দামই বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে জনগণের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সরকারের মধ্যে সমন্বয় আছে? নাকি অর্থমন্ত্রী নিজেই জানেন না ঘটনা কী হবে! ঘটনা যা-ই হোক ঘটে গেছে, যে-ই ঘটাক সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য, অন্যের হয়ে কাজ করছেন বলে মনে হয়।
সরকার চাল, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎসহ অনেক খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে। ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকারকে ব্যাংক থেকে ধার নিতে হচ্ছে। ফলে শিল্পোদ্যোক্তা ঋণ পান না। শিল্প-কারখানা হয় না। এমনিতে শতকরা ১৫-১৬ টাকা হারে সুদ দিয়ে কোনো শিল্প-কারখানা গড়ার সুযোগ সীমিত। অথচ অর্থমন্ত্রী এ উচ্চ সুদের বিষয়ে একেবারেই নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। অনেকে বলে থাকেন, জ্বালানি তেল বিপণন, সংরক্ষণ ও বিতরণে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে ভর্তুকি অনেক কম হওয়ার কথা এবং সরকারকে বারবার মূল্য বৃদ্ধির ঝুঁকিতে যেতে হতো না। বিভিন্ন পত্রিকার খবরে দেখা যায়, সরকার অকটেনে প্রতি লিটারে লাভ করে ৩১.৮৫ টাকা, পেট্রোলে ৭.৯০ টাকা। এই লাভের টাকা যায় কোথায়?
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির আগে পাম্পগুলোতে কত পরিমাণ তেল জমা আছে, ওটার আগাম হিসাব নিয়ে দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করার নিয়ম। মধ্যরাতে এ বৃদ্ধির সময় হাজার হাজার পাম্পের তেলের স্টক নেওয়া হয়েছিল কি-না, ওই স্টককে বাড়তি দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল কি-না জানা নেই। তবে এটা যে করা হয়নি, তা নিশ্চিত। স্টক নেওয়ার সময়, দাম বাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে এবং ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ ক্রেতা ফুয়েল আগেভাগে কিনে নেওয়ার সম্ভাবনায় হয়তো করা হয়নি। কিন্তু ওই হাজার হাজার লিটার স্টক পরের দিন ৫ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে, যা পাম্পের মালিকের পকেটে গেছে। আগে খবর পেলেও ব্যবহারকারীরা সুযোগটা পেত। কথা দুটি একই। এখন পাম্পের মালিক সুযোগটা পেলেন, পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থা থাকলে সাধারণের মধ্যে অনেকে সুযোগটা গ্রহণ করতে পারতেন।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে যুক্তি আছে। সরকার আর কত ভর্তুকি দেবে? কিন্তু যে পদ্ধতিতে বাড়ানো হয়েছে, ওখানে আপত্তি আছে। বলবেন, সিএনজির কথা, বাড়াবেন ডিজেল, পেট্রোলের দাম আবার ঘোষণা ছাড়া মধ্যরাতে বাড়িয়ে পাম্প মালিকদের পকেট ভারী করার সুযোগ দান এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। এমনি রাস্তায় দুরবস্থা, যানজটের সমস্যা ঘণ্টার পর ঘণ্টা শ্রমঘণ্টা, ফুয়েল নষ্ট হয়ে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে। তার ওপর এ মূল্য বৃদ্ধির বাড়তি চাপ, পণ্যের ওপরই পড়বে। সাধারণ মানুষের অসন্তোষ বৃদ্ধি পেলে, বিএনপি এটাকে কাজে লাগাবে। সরকারে বসে, এদিকগুলোর ব্যাপারে দৃষ্টি না দিয়ে, যারা তুঘলকি কর্মকাণ্ড করছেন, প্রকারান্তরে তারা বিএনপির হাতে আন্দোলন করার এবং তাদের পক্ষে সাধারণ মানুষকে ঠেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।
এ সময় যুদ্ধাপরাধীর বিচার চলছে। বিচারকে ভণ্ডুল করার জন্য বিএনপি পথ খুঁজছে। জামায়াত শত শত কোটি টাকা নিয়ে সারা বিশ্বে অপপ্রচারে নেমেছে। মীর কাশেম আলীর ১৯২ কোটি টাকার লবিস্ট নিয়োগের খবর সরকার নিশ্চয়ই জানে। অথচ মীর কাশেম আলী বুক ফুলিয়ে হাটে, সরকার চুপচাপ। ভূমিদস্যু, জামায়াতি প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হন। এগুলো কার বা কাদের মাধ্যমে হচ্ছে, আমার জানা নেই। তবে লক্ষণ ভালো নয়। গ্রামগঞ্জের দিকে তাকালে বর্তমান অবস্থা পরিষ্কার হওয়ার কথা। মানুষ কী বলাবলি করছে, কান পেতে না শুনলে বিপদ হতে পারে।
সরকার চালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পেরেছে। অথচ ওই সস্তা চাল পেয়েও মানুষের মুখের গুঞ্জন কেন, উপলব্ধি করার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। সংসদ আছে, সংসদ অধিবেশন চলছে, এ সময় সংসদকে পাশ কাটিয়ে কর্মকাণ্ডগুলো যারা করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা কোনো অবস্থাতেই ভালো কাজ করছেন বলে বলা যাবে না।
সরকার ভর্তুকি দিয়ে চালের বাজার ঠিক রেখেছে। যেখানে ওএমএসের মাধ্যমে ২৪ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হয়, খালেদা জিয়া ৫০ টাকা কেজি চালের কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় রত। সরকার জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ালে বিএনপির রোডমার্চের কথা বলার সুযোগই হতো না। আমার কেমন জানি মনে হয়, সরকারে বসে কেউ কেউ বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন। নতুবা এমন হবে কেন? সরকারের এত ভালো ভালো কাজ ম্লান করে দিচ্ছেন এরা। মাঠে-ময়দানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা এখন শঙ্কিত। অনেকে বর্তমান কর্মকাণ্ডগুলো দেখে হতাশ। কর্মী বাহিনী যদি হতাশ হয়ে, যে কর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি যদি হাত গুটিয়ে বসে থাকে, মহাদুর্যোগ নেমে আসতে পারে আগামীতে। ফলে এক্ষুণি সাবধান হওয়ার বিকল্প নেই।
নুরুল ইসলাম বিএসসি :সংসদ সদস্য
সরকার চাল, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎসহ অনেক খাতে ভর্তুকি দিচ্ছে। ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকারকে ব্যাংক থেকে ধার নিতে হচ্ছে। ফলে শিল্পোদ্যোক্তা ঋণ পান না। শিল্প-কারখানা হয় না। এমনিতে শতকরা ১৫-১৬ টাকা হারে সুদ দিয়ে কোনো শিল্প-কারখানা গড়ার সুযোগ সীমিত। অথচ অর্থমন্ত্রী এ উচ্চ সুদের বিষয়ে একেবারেই নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। অনেকে বলে থাকেন, জ্বালানি তেল বিপণন, সংরক্ষণ ও বিতরণে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে ভর্তুকি অনেক কম হওয়ার কথা এবং সরকারকে বারবার মূল্য বৃদ্ধির ঝুঁকিতে যেতে হতো না। বিভিন্ন পত্রিকার খবরে দেখা যায়, সরকার অকটেনে প্রতি লিটারে লাভ করে ৩১.৮৫ টাকা, পেট্রোলে ৭.৯০ টাকা। এই লাভের টাকা যায় কোথায়?
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির আগে পাম্পগুলোতে কত পরিমাণ তেল জমা আছে, ওটার আগাম হিসাব নিয়ে দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করার নিয়ম। মধ্যরাতে এ বৃদ্ধির সময় হাজার হাজার পাম্পের তেলের স্টক নেওয়া হয়েছিল কি-না, ওই স্টককে বাড়তি দামের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছিল কি-না জানা নেই। তবে এটা যে করা হয়নি, তা নিশ্চিত। স্টক নেওয়ার সময়, দাম বাড়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে এবং ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ ক্রেতা ফুয়েল আগেভাগে কিনে নেওয়ার সম্ভাবনায় হয়তো করা হয়নি। কিন্তু ওই হাজার হাজার লিটার স্টক পরের দিন ৫ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হয়েছে, যা পাম্পের মালিকের পকেটে গেছে। আগে খবর পেলেও ব্যবহারকারীরা সুযোগটা পেত। কথা দুটি একই। এখন পাম্পের মালিক সুযোগটা পেলেন, পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থা থাকলে সাধারণের মধ্যে অনেকে সুযোগটা গ্রহণ করতে পারতেন।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে যুক্তি আছে। সরকার আর কত ভর্তুকি দেবে? কিন্তু যে পদ্ধতিতে বাড়ানো হয়েছে, ওখানে আপত্তি আছে। বলবেন, সিএনজির কথা, বাড়াবেন ডিজেল, পেট্রোলের দাম আবার ঘোষণা ছাড়া মধ্যরাতে বাড়িয়ে পাম্প মালিকদের পকেট ভারী করার সুযোগ দান এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। এমনি রাস্তায় দুরবস্থা, যানজটের সমস্যা ঘণ্টার পর ঘণ্টা শ্রমঘণ্টা, ফুয়েল নষ্ট হয়ে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেছে। তার ওপর এ মূল্য বৃদ্ধির বাড়তি চাপ, পণ্যের ওপরই পড়বে। সাধারণ মানুষের অসন্তোষ বৃদ্ধি পেলে, বিএনপি এটাকে কাজে লাগাবে। সরকারে বসে, এদিকগুলোর ব্যাপারে দৃষ্টি না দিয়ে, যারা তুঘলকি কর্মকাণ্ড করছেন, প্রকারান্তরে তারা বিএনপির হাতে আন্দোলন করার এবং তাদের পক্ষে সাধারণ মানুষকে ঠেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।
এ সময় যুদ্ধাপরাধীর বিচার চলছে। বিচারকে ভণ্ডুল করার জন্য বিএনপি পথ খুঁজছে। জামায়াত শত শত কোটি টাকা নিয়ে সারা বিশ্বে অপপ্রচারে নেমেছে। মীর কাশেম আলীর ১৯২ কোটি টাকার লবিস্ট নিয়োগের খবর সরকার নিশ্চয়ই জানে। অথচ মীর কাশেম আলী বুক ফুলিয়ে হাটে, সরকার চুপচাপ। ভূমিদস্যু, জামায়াতি প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হন। এগুলো কার বা কাদের মাধ্যমে হচ্ছে, আমার জানা নেই। তবে লক্ষণ ভালো নয়। গ্রামগঞ্জের দিকে তাকালে বর্তমান অবস্থা পরিষ্কার হওয়ার কথা। মানুষ কী বলাবলি করছে, কান পেতে না শুনলে বিপদ হতে পারে।
সরকার চালের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পেরেছে। অথচ ওই সস্তা চাল পেয়েও মানুষের মুখের গুঞ্জন কেন, উপলব্ধি করার সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। সংসদ আছে, সংসদ অধিবেশন চলছে, এ সময় সংসদকে পাশ কাটিয়ে কর্মকাণ্ডগুলো যারা করার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা কোনো অবস্থাতেই ভালো কাজ করছেন বলে বলা যাবে না।
সরকার ভর্তুকি দিয়ে চালের বাজার ঠিক রেখেছে। যেখানে ওএমএসের মাধ্যমে ২৪ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হয়, খালেদা জিয়া ৫০ টাকা কেজি চালের কথা বলে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টায় রত। সরকার জ্বালানি তেলের দাম না বাড়ালে বিএনপির রোডমার্চের কথা বলার সুযোগই হতো না। আমার কেমন জানি মনে হয়, সরকারে বসে কেউ কেউ বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন। নতুবা এমন হবে কেন? সরকারের এত ভালো ভালো কাজ ম্লান করে দিচ্ছেন এরা। মাঠে-ময়দানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা এখন শঙ্কিত। অনেকে বর্তমান কর্মকাণ্ডগুলো দেখে হতাশ। কর্মী বাহিনী যদি হতাশ হয়ে, যে কর্মীরা আওয়ামী লীগের প্রাণশক্তি যদি হাত গুটিয়ে বসে থাকে, মহাদুর্যোগ নেমে আসতে পারে আগামীতে। ফলে এক্ষুণি সাবধান হওয়ার বিকল্প নেই।
নুরুল ইসলাম বিএসসি :সংসদ সদস্য
No comments