বিদ্যুৎ সাশ্রয়-আপনি আচরি ধর্ম...

সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারে জ্বলবে আলো ঘরে ঘরে'_ এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে গত বুধবার সারাদেশে জাতীয় বিদ্যুৎ সপ্তাহ শুরু হয়েছে। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো এবং এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে ফেলতে জনগণকে উৎসাহী করে তোলাই এ প্রচারের উদ্দেশ্য। আমাদের এখানে ইতিমধ্যেই প্রচলিত বাল্ব ব্যবহারের পরিবর্তে ফ্লোরেসেন্ট বাল্ব ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং অনেক নাগরিক এ ধরনের সাশ্রয়ী বাল্ব ব্যবহারে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।


এ ধরনের বাল্ব ব্যবহারের মাধ্যমে একজন গ্রাহক মাসান্তে বিদ্যুৎ বিল হ্রাসের সুবিধা পেতে পারেন এবং এ ধরনের বাল্বের আয়ু প্রচলিত বাল্বের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। শহরগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যবহারে সতর্ক হয়েও বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাত্রা অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। শীত মৌসুম বলে এখন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অনেকাংশেই ব্যবহার হচ্ছে না বলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট গরমের সময়ের মতো হচ্ছে না। কিন্তু এই ব্যবস্থা ব্যবহারকারীরা তাদের ব্যবহৃত যন্ত্রগুলোকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও কম ব্যবহার করে অন্য নাগরিক ও শিল্প চাহিদার অনেকটা অংশ পূরণ করতে পারেন। সরকার এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু তেমন সাড়া মেলেনি। শিল্পোন্নত দেশগুলোতে যেমন বাতি থেকে শুরু করে তাপযন্ত্র পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহারের নিয়ম চালু হয়েছে, তেমনি আমাদেরও সে ধরনের ব্যবস্থাই চালু করতে হবে। উন্নত বিশ্বে এখন সবুজ গাড়ি, সবুজ বাড়ি, সবুজ বিদ্যুৎ ইত্যাদি দূষণমুক্ত ও সাশ্রয়ী ব্যবস্থা বেশ জনপ্রিয়। ফলে তারা অনায়াসেই তাদের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদাকে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী করতে পারছে। জার্মানিতে তো এখন একটি কোম্পানি তাদের রেল ব্যবস্থায় সবুজ জ্বালানি ব্যবহার করছে। আমাদেরও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের সঙ্গে সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য সপ্তাহ পালনের মাধ্যমে যে প্রচারণা শুরু হয়েছে তাকে স্বাগত। এ ধরনের উদ্যোগ আরও বেশি করে নেওয়া হোক। সরকারেরও উচিত সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য কিছু বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। এতে ব্যক্তি, দেশ, অর্থনীতি, পরিবেশের উপকার হবে। তবে সরকার 'আপনি আচরি ধর্ম' নীতি অনুসরণ করতে পারলে এ থেকে আরও বেশি সাফল্য মিলবে, সেটা নিশ্চিত বলা চলে।

No comments

Powered by Blogger.