বালিতে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা-গণতন্ত্র ছাড়া কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পেঁৗছানো সম্ভব নয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতন্ত্র হচ্ছে উন্নয়ন ও জনগণের ক্ষমতায়নের মূল চাবিকাঠি। গণতন্ত্র ছাড়া কোনো দেশের পক্ষে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পেঁৗছানো সম্ভব নয়। গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মিলিত ধারায় একটি দেশ দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ওয়েস্টিন হোটেলে চতুর্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরামের কো-চেয়ার হিসেবে স্বাগতিক দেশের প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইয়োধোইয়োনোর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ
কথা বলেন। এর আগে চতুর্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম ভাষণে শেখ হাসিনা এ অঞ্চলে প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জন ও সুষম সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুত মনোযোগ প্রদানের জন্য এশীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল দু'দিনের এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বড় দেশগুলো যখন গভীর অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, সে সময় ইন্দোনেশিয়া শক্তিশালী অর্থনীতির মাধ্যমে
দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কেবল সঠিকভাবে কাজ করায় এটি সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর দেশে দীর্ঘদিন প্রকৃত গণতন্ত্র ছিল না। '৭৫ সালে সামরিক শাসকরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করে দেয়। জনগণের সহায়তায় দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সফল হই।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক দেশে কিছু স্বকীয়তা আছে। তবে গণতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা রয়েছে। গণতন্ত্রের অর্থ_ জনগণের ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র নিজেই একটি গন্তব্য। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার, আমরা সবসময় জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জনগণের বক্তব্য তুলে ধরতে সামাজিক গণমাধ্যম বিকাশের প্রশংসা করে বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্ব পাবে নতুন ধারণা ও চিন্তাভাবনা। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম এমন কোনো ফোরাম নয় যা একটি দেশকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করতে বাধ্য করবে। আমরা এখানে আলোচনা করব এবং একে অপরের কাছ থেকে জানব। বালি ফোরাম অন্য কোনো দেশের কর্মসূচি নির্ধারণে নির্দেশনা প্রদানকারী অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামের মতো কোনো ফোরাম নয়। আমরা কেবল বক্তৃতাই দেব না, আমাদের একে অপরের কাছ থেকে শিখতে হবে।
'প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জনে মনোযোগ দিন' : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বালির নুসা দোয়ায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চতুর্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম ভাষণে বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর জন্য প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন এবং ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। এ ছাড়া জাতিগুলোর নেতৃবৃন্দের প্রতিশ্রুত মনোযোগ অপরিহার্য। এ অঞ্চলে গণতন্ত্র অর্জনে আরও মনোযোগ দিতে তিনি এশীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে গঠিত বিদ্যমান গণতান্ত্রিক সরকারকে সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অফুরন্ত সম্পদ, উদীয়মান অর্থনীতি, সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি এবং অত্যাবশ্যকীয় গণতান্ত্রিক শক্তিসমৃদ্ধ এশিয়া এখন সর্ব পর্যায়ে গণতান্ত্রিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করতে সক্ষম। সঙ্গত কারণে এ অঞ্চল ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমি নিশ্চিত করছে। বিভিন্ন দেশের জন্য সময় এসেছে প্রাচীন ভাবধারা পরিহার এবং মুক্তি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নতুন দাবিকে স্বীকার করে নেওয়া।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং আনুষ্ঠানিকভাবে চতুর্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম উদ্বোধন করেন এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টি এম নাতা লেগাওয়া রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। ব্রুনাই দারুসসালামের সুলতান হাসানাল বলকিয়া, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ্র রাজাপাকসে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হামাদ বিন জসিম বিন জব্বার আল-তানি, গণতান্ত্রিক তিমুরের কে রালা জানানা গোসমাও, ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেজোমার বিনায় এবং তুরস্কোর উপ-প্রধানমন্ত্রী বুলেনিট আরনিকও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃবৃন্দের অধিবেশনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
ফোরামের বিভিন্ন অধিবেশনে জাপান, পাপুয়া নিউগিনি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, ইথিওপিয়া, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, চীন, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, জর্জিয়া, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মিয়ানমার, চেক প্রজাতন্ত্র, আফগানিস্তান, ইরাক, লাও পিডিআর, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, বুলগেরিয়া, লিবিয়া, মরক্কো ও জর্ডানের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় গণতন্ত্র ও উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আলোচনার মাধ্যমে এ অঞ্চলে প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জনের জন্য এশীয় নেতৃবৃন্দের সামনে ৭ দফা প্রস্তাব পেশ করেন।
তিনি স্থানীয় সরকার, বিকেন্দ্রীকরণ ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানকে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত ক্ষমতা ও অর্থের জোগান দিয়ে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং প্রাপ্ত সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন_ জনগণের কল্যাণ, উন্নত জীবনযাত্রার জন্য ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি এবং জনগণকে বঞ্চনামুক্ত করার স্বার্থে অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি নাগরিকের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এশীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এতে গণতন্ত্র শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে এর জন্য নাগরিকদের সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্বসহ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন হতে হবে।
শেখ হাসিনা বেসরকারি খাতকে জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ খাতকে সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। গণতন্ত্রের ক্রমবিবর্তনের প্রেক্ষাপটে তিনি বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক নিরাপত্তা ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ জাতি গঠনমূলক কর্মকা ে বরাদ্দ এবং যে কোনো মূল্যে জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
প্রায় ১৫টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এশীয় দেশগুলোর এ ফোরামে যোগ দেন। এ বছর এই ফোরামের প্রতিপাদ্য 'পরিবর্তনশীল বিশ্বে গণতান্ত্রিক অংশীদারিত্ব জোরদার : গণতান্ত্রিক জাগরণের প্রতি সমর্থন দান'। গণতন্ত্র জোরদারে এবং রাজনৈতিক উন্নয়নে এশীয় দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ২০০৮ সালে ইন্দোনেশীয় সরকারের উদ্যোগে এ ফোরাম চালু হয়।
চতুর্থ বছরের মতো এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়নে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আলোচনার জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্লাটফর্ম হিসেবে এই ফোরামের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বায়নের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন_ আকার, জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নির্বিশেষে সব দেশের জন্য এ প্রক্রিয়া সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। বছরের পর বছর গণতন্ত্রের জন্য নিজের নিরলস সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করি কেবল গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা জনগণের ক্ষমতায়ন এবং সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি নিশ্চিত এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বড় দেশগুলো যখন গভীর অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, সে সময় ইন্দোনেশিয়া শক্তিশালী অর্থনীতির মাধ্যমে
দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কেবল সঠিকভাবে কাজ করায় এটি সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমান সরকার গণতন্ত্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে নিরলস প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর দেশে দীর্ঘদিন প্রকৃত গণতন্ত্র ছিল না। '৭৫ সালে সামরিক শাসকরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করে দেয়। জনগণের সহায়তায় দীর্ঘ সংগ্রামের পর আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সফল হই।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক দেশে কিছু স্বকীয়তা আছে। তবে গণতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা রয়েছে। গণতন্ত্রের অর্থ_ জনগণের ক্ষমতায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র নিজেই একটি গন্তব্য। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য পরিষ্কার, আমরা সবসময় জনগণের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা জনগণের বক্তব্য তুলে ধরতে সামাজিক গণমাধ্যম বিকাশের প্রশংসা করে বলেন, এর মাধ্যমে বিশ্ব পাবে নতুন ধারণা ও চিন্তাভাবনা। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম এমন কোনো ফোরাম নয় যা একটি দেশকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা বা গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করতে বাধ্য করবে। আমরা এখানে আলোচনা করব এবং একে অপরের কাছ থেকে জানব। বালি ফোরাম অন্য কোনো দেশের কর্মসূচি নির্ধারণে নির্দেশনা প্রদানকারী অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামের মতো কোনো ফোরাম নয়। আমরা কেবল বক্তৃতাই দেব না, আমাদের একে অপরের কাছ থেকে শিখতে হবে।
'প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জনে মনোযোগ দিন' : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বালির নুসা দোয়ায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চতুর্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম ভাষণে বলেন, প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এর জন্য প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন এবং ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। এ ছাড়া জাতিগুলোর নেতৃবৃন্দের প্রতিশ্রুত মনোযোগ অপরিহার্য। এ অঞ্চলে গণতন্ত্র অর্জনে আরও মনোযোগ দিতে তিনি এশীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা বলেন, 'গণতন্ত্রের জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে গঠিত বিদ্যমান গণতান্ত্রিক সরকারকে সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অফুরন্ত সম্পদ, উদীয়মান অর্থনীতি, সম্ভাবনাময় প্রতিষ্ঠান, প্রযুক্তি এবং অত্যাবশ্যকীয় গণতান্ত্রিক শক্তিসমৃদ্ধ এশিয়া এখন সর্ব পর্যায়ে গণতান্ত্রিক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করতে সক্ষম। সঙ্গত কারণে এ অঞ্চল ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমি নিশ্চিত করছে। বিভিন্ন দেশের জন্য সময় এসেছে প্রাচীন ভাবধারা পরিহার এবং মুক্তি, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নতুন দাবিকে স্বীকার করে নেওয়া।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং আনুষ্ঠানিকভাবে চতুর্থ বালি ডেমোক্রেসি ফোরাম উদ্বোধন করেন এবং দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টি এম নাতা লেগাওয়া রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। ব্রুনাই দারুসসালামের সুলতান হাসানাল বলকিয়া, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ্র রাজাপাকসে, কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হামাদ বিন জসিম বিন জব্বার আল-তানি, গণতান্ত্রিক তিমুরের কে রালা জানানা গোসমাও, ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেজোমার বিনায় এবং তুরস্কোর উপ-প্রধানমন্ত্রী বুলেনিট আরনিকও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃবৃন্দের অধিবেশনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
ফোরামের বিভিন্ন অধিবেশনে জাপান, পাপুয়া নিউগিনি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, ইথিওপিয়া, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, চীন, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, জর্জিয়া, কোরিয়া প্রজাতন্ত্র, মিয়ানমার, চেক প্রজাতন্ত্র, আফগানিস্তান, ইরাক, লাও পিডিআর, সৌদি আরব, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, যুক্তরাষ্ট্র, বুলগেরিয়া, লিবিয়া, মরক্কো ও জর্ডানের প্রতিনিধিরা বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় গণতন্ত্র ও উন্নয়নে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আলোচনার মাধ্যমে এ অঞ্চলে প্রকৃত গণতন্ত্র অর্জনের জন্য এশীয় নেতৃবৃন্দের সামনে ৭ দফা প্রস্তাব পেশ করেন।
তিনি স্থানীয় সরকার, বিকেন্দ্রীকরণ ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানকে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত ক্ষমতা ও অর্থের জোগান দিয়ে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।
আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং প্রাপ্ত সম্পদ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন_ জনগণের কল্যাণ, উন্নত জীবনযাত্রার জন্য ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি এবং জনগণকে বঞ্চনামুক্ত করার স্বার্থে অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি নাগরিকের জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য এশীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এতে গণতন্ত্র শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। তবে এর জন্য নাগরিকদের সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্বসহ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন হতে হবে।
শেখ হাসিনা বেসরকারি খাতকে জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, এ খাতকে সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। গণতন্ত্রের ক্রমবিবর্তনের প্রেক্ষাপটে তিনি বিভিন্ন দেশের বৈদেশিক নিরাপত্তা ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ জাতি গঠনমূলক কর্মকা ে বরাদ্দ এবং যে কোনো মূল্যে জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
প্রায় ১৫টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এশীয় দেশগুলোর এ ফোরামে যোগ দেন। এ বছর এই ফোরামের প্রতিপাদ্য 'পরিবর্তনশীল বিশ্বে গণতান্ত্রিক অংশীদারিত্ব জোরদার : গণতান্ত্রিক জাগরণের প্রতি সমর্থন দান'। গণতন্ত্র জোরদারে এবং রাজনৈতিক উন্নয়নে এশীয় দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য ২০০৮ সালে ইন্দোনেশীয় সরকারের উদ্যোগে এ ফোরাম চালু হয়।
চতুর্থ বছরের মতো এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়নে অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং আলোচনার জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্লাটফর্ম হিসেবে এই ফোরামের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বায়নের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন_ আকার, জনসংখ্যা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নির্বিশেষে সব দেশের জন্য এ প্রক্রিয়া সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে। বছরের পর বছর গণতন্ত্রের জন্য নিজের নিরলস সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করি কেবল গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা জনগণের ক্ষমতায়ন এবং সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি নিশ্চিত এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
No comments