মুমিনের কাজ দ্বীনের পথে ডাকা by নুরুল্লাহ আকন্দ

হান আল্লাহ মানুষকে ভালো-মন্দ যাচাই করার জ্ঞান দান করেছেন সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে দিয়েছেন শ্রেষ্ঠত্ব। এ জন্যই তাদের ওপর এক বিশাল দায়িত্ব অর্পণ করেছেন। নির্দেশ দিয়েছেন, ডাক তোমার প্রভুর পথে হিকমত ও নসিহতের সাহায্যে আর মানুষের সঙ্গে বিতর্ক কর পরস্পর উত্তম পন্থায়। (সূরা নাহল-১২৫)এ সম্পর্কে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন, 'তার কথার চেয়ে কার কথা উত্তম হতে পারে। যে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে, নেক আমল করে


এবং বলে, আমি একজন মুসলমান।' (সুরা হা-মিম সজদা-৩৩) ইসলামে দাওয়াতের গুরুত্ব অপরিসীম। পৃথিবীতে যত জাতি আগমন করেছিল, তাদের আল্লাহর পথে আহ্বানের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসূল এসেছিলেন। তাদের কাজ ছিল পথহারা মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করা। এমন কোনো জাতির আবির্ভাব হয়নি যাদের কাছে কোনো আহ্বানকারী আসেনি। মহান আল্লাহর ভাষায়_ আল্লাহর ইবাদতের হুকুম এবং তাগুতকে বর্জনের নির্দেশ দেওয়ার জন্য আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি। হজরত মোহাম্মদ (সা.) সর্বশেষ নবী, তারপর আর কোনো নবী আসবেন না।
যেহেতু পৃথিবীবাসীর জন্য আর কোনো নবী রাসূল আসবেন না, সেহেতু নবীর অবর্তমানে পথহারা মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করার যে কাজটি নবী রাসূলরা করেছিলেন তা এখন মুমিনদের পালন করতে হবে। মুমিনদের পরিচয় দিতে গিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, মুমিন তারাই যারা আল্লাহর রাসূলের প্রতি ইমান আনার পর আর সন্দেহে পড়ে না এবং নিজেদের জানমাল দিয়ে আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে তারাই তাদের ইমানের দাবিতে সত্যবাদী। (সূরা হুজরাত-১৫) মুমিনের কাজের কথা বলতে গিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, তারা ন্যায়ের নির্দেশ দানকারী ও অন্যায়ের বাধা দানকারী এবং আল্লাহর নির্ধারিত সীমা রক্ষাকারী। (সূরা তাওবা-১১২) মহান সৃষ্টিকর্তা আরও বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। তারা জানমাল দিয়ে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে নিজেরা মরে ও মারে। (সূরা তাওবা-১১১)
এই সময় মুমিনের কাজ হলো, নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো_ নিজেকে ও পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষার জন্য আল্লাহর দিকে আহ্বান করা। আল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআলা বলেছেন, 'হে মুমিনগণ তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের ভয়াবহ অগি্ন থেকে রক্ষা কর, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর।' (সূরা আত তাহরিম-৬)
এই আয়াতে মুমিনদের বলা হয়েছে, তোমরা নিজেদের ও তোমাদের আহালদের জাহান্নামের অগি্ন থেকে রক্ষা কর এবং জাহান্নামের অগি্নর ভয়াবহতাও এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর হজরত উমর (রা.) বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, নিজেদের জাহান্নামের অগি্ন থেকে রক্ষার ব্যাপারটি বুঝে আসে কিন্তু পরিবার-পরিজনকে কীভাবে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করব?
রাসূলে করিম (সা.) বলেন, এর উপায় এই যে আল্লাহ তোমাদের যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তোমরা তাদের সেসব কাজ করতে নিষেধ কর এবং যেসব কাজ করতে আদেশ করেছেন তোমরা সেগুলো করতে আদেশ কর। এভাবে জাহান্নামের অগি্ন থেকে রক্ষা করতে পারবে। তাই মুমিনের জীবনের মিশন হওয়া উচিত, ন্যায় কাজের আদেশ ও অন্যায় কাজের নিষেধ করার মাধ্যমে পথহারা মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা।

No comments

Powered by Blogger.