সবার জন্য ইতিহাস- জানা গেছে, ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ছয়টিতে ইতিহাস পড়ানো হয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনটিতেই ইতিহাস পড়ানো হয় না
ইতিহাস না জানলে মানুষ তার অতীতের গৌরব
সম্পর্কে জানবে কীভাবে? এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতেই সোমবার দেশের বিশিষ্ট
লেখক, শিক্ষক ও ইতিহাসবিদরা রাজধানীতে এক আলোচনাসভায় মিলিত হয়েছিলেন।
তাঁরা প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত ইতিহাস শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক
করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি যুক্তিসঙ্গত। বাঙালী জাতির রয়েছে হাজার
বছরের গৌরবময় ইতিহাস। ইতিহাসের নানা ঘটনা, বাঁক পরিবর্তন ও সংগ্রামের মধ্য
দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই সঙ্গে সারাবিশ্বেও
ঐতিহাসিক বিবর্তনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। পরিবর্তনশীল বিশ্বে ইতিহাস জ্ঞান
ছাড়া কারও পক্ষে প্রকৃত জ্ঞানী, সচেতন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হওয়া সম্ভব নয়।
এজন্য শিশুবয়স থেকে প্রত্যেককে দেশ ও পৃথিবীর ইতিহাস সম্পর্কে ন্যূনতম
ধারণা থাকতে হবে। শিশুদের জন্য সহজ সরল ভাষায় ইতিহাসের নানা ঘটনা লিখতে
হবে। বস্তুত ইতিহাসের অনেক গৌরবময় ঘটনা গল্প উপন্যাসকে হার মানায়। শিশুরা
ইতিহাসের এসব আকর্ষণীয় অধ্যায়সমূহ পড়তে ভালবাসে। যেমন মোগল সম্রাট বাবরের
জীবনী ও সাম্রাজ্য স্থাপনের ইতিহাস সব বয়সের মানুষ পড়তে পছন্দ করে। এক সময়
দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে যে ভারত সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিলÑ বঙ্গ ছিল তার অংশ। আবার
বাংলার স্বাধীন নৃপতীদের সংগ্রামও আমাদের প্রিয় ইতিহাস। বিখ্যাত গবেষক
দীনেশ সেন সেই গৌরবময় ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। এক গভীর উদার
দৃষ্টিভঙ্গির আলোকেই তিনি লিখেছিলেন প্রাচীন ইতিহাস ‘বৃহৎ বাংলা’।
তবে একথা সত্য যে, দেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ‘ইতিহাস’ অবহেলিত। এই বাজার অর্থনীতির যুগে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং, বাণিজ্য প্রশাসন প্রভৃতি বিষয়ে যতটা পড়তে চায়; সাহিত্য, ইতিহাস কিংবা দর্শন বিষয়ে তার এক শতাংশও পড়তে আগ্রহী নয়। বিষয়টি আমাদের জাতিগত উৎকর্ষের উন্নয়নের পক্ষে প্রতিবন্ধক। নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইতিহাস সচেতনতা কম। জানা গেছে, ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ছয়টিতে ইতিহাস পড়ানো হয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিতেই ইতিহাস পড়ানো হয় না। বেশিরভাগ মাদ্রাসায় ‘ইতিহাস’ বলে কোনো বিষয় নেই। অপরদিকে কওমী মাদ্রাসায় বাংলাদেশের স্বার্থ ও ইতিহাসবিরোধী অনুমোদনহীন বই বেশি পড়ানো হয়।
এখন যে ধরনের বাণিজ্যমুখী শিক্ষা গড়ে উঠেছেÑ এতে আশঙ্কা হয়, অচিরেই হয়তো এদেশে সাহিত্য, ইতিহাস ও দর্শন বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন একটি গোষ্ঠী গড়ে ঊঠবে। তাই এখন দরকার ‘সবার মধ্যে ইতিহাস’Ñ এই আন্দোলনকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। সেই সঙ্গে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীর জন্য ইতিহাস শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা দরকার। বাংলাদেশের বিজ্ঞানভিত্তিক ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ অনেকের প্রশংসা অর্জন করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিৎ, আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতিতে এমন ধারার সংযোজন করাÑ যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী শিশুকাল থেকে স্থানীয় ও বিশ্ব ইতিহাসের মূল বিষয়গুলি জানতে পারে। সেই সঙ্গে জানাতে পারে বাঙালীর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও।
তবে একথা সত্য যে, দেশের প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত ‘ইতিহাস’ অবহেলিত। এই বাজার অর্থনীতির যুগে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিং, বাণিজ্য প্রশাসন প্রভৃতি বিষয়ে যতটা পড়তে চায়; সাহিত্য, ইতিহাস কিংবা দর্শন বিষয়ে তার এক শতাংশও পড়তে আগ্রহী নয়। বিষয়টি আমাদের জাতিগত উৎকর্ষের উন্নয়নের পক্ষে প্রতিবন্ধক। নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইতিহাস সচেতনতা কম। জানা গেছে, ৩৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ছয়টিতে ইতিহাস পড়ানো হয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিতেই ইতিহাস পড়ানো হয় না। বেশিরভাগ মাদ্রাসায় ‘ইতিহাস’ বলে কোনো বিষয় নেই। অপরদিকে কওমী মাদ্রাসায় বাংলাদেশের স্বার্থ ও ইতিহাসবিরোধী অনুমোদনহীন বই বেশি পড়ানো হয়।
এখন যে ধরনের বাণিজ্যমুখী শিক্ষা গড়ে উঠেছেÑ এতে আশঙ্কা হয়, অচিরেই হয়তো এদেশে সাহিত্য, ইতিহাস ও দর্শন বিষয়ে সম্পূর্ণ উদাসীন একটি গোষ্ঠী গড়ে ঊঠবে। তাই এখন দরকার ‘সবার মধ্যে ইতিহাস’Ñ এই আন্দোলনকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। সেই সঙ্গে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীর জন্য ইতিহাস শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা দরকার। বাংলাদেশের বিজ্ঞানভিত্তিক ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ অনেকের প্রশংসা অর্জন করেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিৎ, আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতিতে এমন ধারার সংযোজন করাÑ যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী শিশুকাল থেকে স্থানীয় ও বিশ্ব ইতিহাসের মূল বিষয়গুলি জানতে পারে। সেই সঙ্গে জানাতে পারে বাঙালীর গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও।
No comments