ভাষার জন্য রাজশাহীতে প্রথম শহীদ মিনার
ভাষার জন্য ভাষা আন্দোলনের প্রথম প্রহরেই
ফুঁসে উঠেছিল রাজশাহীর মানুষ। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ সারাদেশের মতো
রাজশাহীতেও পালিত হয় হরতাল।
এ ঘটনার পর থেকে রাজশাহীতে
আন্দোলন অব্যাহত থাকে। এরপর থেকে ভাষার জন্য আন্দোলন, ভাষার জন্য রক্তপাত ও
ভাষা শহীদদের জন্য প্রথম শহীদ মিনার তৈরি করা হয় রাজশাহীতেই। রাজশাহীতে
এখনও যে কয়েকজন ভাষাসৈনিক রয়েছেন, তার মধ্যে একজন সাইদ উদ্দিন আহমদ।
রাজশাহীতে প্রথম শহীদ মিনার তৈরির কথা তিনি শুরু করেন এভাবে...। তিনি বলেন,
২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় খবরটি আসে টেলিফোনে। তখনও রাজশাহীর মানুষ কলকাতার
পত্রপত্রিকার ওপরেই নির্ভরশীল ছিল। পত্রিকায় খবর পাওয়া যেত আরও দু’একদিন
পর।
তবে ২১ ফেব্রুয়ারির টেলিফোন বার্তাটি বিদ্যুৎ বেগে রাজশাহী শহরে ছড়িয়ে পড়ল ‘ঢাকায় ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছেন’। ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালানো হয়েছে, ‘অনেক ছাত্র শহীদ হয়েছে।’ খবর শুনে শহরের ঘরে ঘরে কান্নার রোল পড়ে গেল।
ভাষাসৈনিক সাইদ উদ্দিন আহমদ বলেন, তখন প্রেসিডেন্সি কলেজের পরেই ছিল রাজশাহী কলেজের স্থান। পূর্ব পাকিস্তানের সব অঞ্চল থেকেই ছাত্ররা এই কলেজে পড়তে আসতেন। রাজশাহী কলেজে থেকে স্নাতক পাস করে সবাই ঢাকায় পড়তে যেত। এ সব ছাত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন হাবিবুর রহমান শেলী। পরে জানা গেছে, ঢাকায় প্রথম ১০ জনের মিছিলে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
রাজশাহী শহরের জনবসতি তখন পূর্ব দিকে বোসপাড়া পশ্চিম দিকে গীর্জা আর উত্তর দিকে অলকার মোড় ও বেলদার পাড়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। এই মহল্লাগুলো থেকে তখন অনেকেই ঢাকায় পড়াশোনা করতে গেছেন। জানা গেছে ছাত্র মারা গেছে। এতেই অজানা আতঙ্ক সব পরিবারেই। সেই খবরটি তখন রাজশাহীর ছাত্র সমাজকে খুবই আবেগতাড়িত করে। তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের ‘এ’ ব্লকের সামনে এক সভার মাধ্যমে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করার জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন ছাত্ররা। সে সভায় সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন রাজশাহী মেডিক্যাল স্কুলের ছাত্র ডা. এসএমএ গাফফার এবং যৌথভাবে সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজশাহী কলেজের ছাত্র গোলাম আরিফ টিপু ও হাবিবুর রহমান। এ পরিষদ গঠনের পর ঢাকায় নিহতদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের তাগিদ অনুভব করেন সবাই।
ওই পরিষদের সদস্য ছিলেন ভাষাসৈনিক সাইদ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তখনও তারা জানেন না ঢাকায় কতজন শহীদ হয়েছেন। যারা শহীদ হয়েছেন তারা রাজশাহীর না অন্য জেলার সে হিসেব করার অবকাশ তখন ছিল না, তেমনি জানা ছিল না স্মৃতিস্তম্ভ সম্পর্কে কোনো ধারণা। তবে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে শুরু হলো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির কাজ।
কি দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হবে? খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া গেল হোস্টেলের দেয়াল ভাঙ্গা ইট। সিদ্ধান্ত হলো ওই ইট দিয়েই বানানো হবে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। ছাত্রদের সঙ্গে হোস্টেলের কর্মচারীরা সবাই ইট ধুয়া মোছা শুরু করে দিলেন। ইট তো পাওয়া গেল। সিমেন্টের আর ব্যবস্থা করা গেল না। সিমেন্টের বদলে শেষ পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে পানি ঢেলে কাদা তৈরি করে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু করে দেয়া হলো। শহীদ মিনারের কোনো ডিজাইন সম্বন্ধে তখন কারও কোনো ধারণা নেই। অদক্ষ হাতে ‘চার থাক’ বিশিষ্ট স্তম্ভটি বানাতে রাত শেষ হয়ে এলো। এর গায়ে লেখা হলো ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’। সাইদ উদ্দিন বলেন, তার সঙ্গে কাগজ সেটে লেখা হলো রবি ঠাকুরের সেই অমর কবিতার ক’টি চরণ ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান...।’
সেদিন রাজশাহীর কেউ জানত না যে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কাদামাটি আর ইট দিয়ে তৈরি এই স্তম্ভটিই ছিল দেশের প্রথম শহীদ মিনার। তারও তিন বছর আগে ভাষা আন্দোলনের সূচনালগ্নেই রাজশাহীতে ভাষার জন্য ঘটেছিল প্রথম রক্তপাত। কাকতালীয়ভাবে প্রথম রক্তপাত এবং শহীদ মিনার তৈরির ঘটনাটি আবিষ্কার হয় অনেক পরে।
বদরুদ্দিন উমর লিখিত ‘ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গে কতিপয় দলিল’ গ্রন্থের সাক্ষাৎকার অংশে বলা হয়েছে, ‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাজশাহীতে হরতাল হয়েছিল। বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান বাংলা একাডেমীর একুশে সংকলন ’৮০ স্মৃতিচারণ গ্রন্থে বলেছেন, রাজশাহীর সেই ১১ মার্চের ধর্মঘটকে সাফল্য ম-িত করার জন্য বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সেদিন আমরা পিকেটিং করি। ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু বলেন, সেদিন মিছিল নিয়ে ফায়ার ব্রিগেড মোড়ে যাওয়ার সময় মুসলিম লীগের গু-ারা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের মিছিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। গাজীউল হক বাংলা একাডেমীর একুশে সংকলন ’৮০ স্মৃতিচারণ গ্রন্থে বলেছেন, রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনের মিছিলের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কারণ ভাষার দাবিতে যে, মিছিল বের হয় তার ওপর গু-ারা হামলা চালালে গোলাম তাওয়াব তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং এক পর্যায়ে মূল মিছিল থেকে বিছিন্ন হয়ে গেলে তিনি গু-াদের হাতে প্রহৃত হন। ভাষার জন্য সেই প্রথম রক্ত ঝরে দেশের মাটিতে।
ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীর এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ধরে রাখতে ১৯৯০ সালে রাজশাহীর কবি ও গবেষক তসিকুল ইসলাম রাজা একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি ভাষা আন্দোলন নিয়ে সারাদেশের আন্দোলন সংগ্রামের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে থাকেন। সেইসঙ্গে রাজশাহীতে যারা ৪৮ সাল থেকে ৫২ এবং পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন যে, ৪৮ সালে ভাষাসৈনিকদের মিছিলে হামলার ঘটনায় যে রক্তপাত হয়েছিল সেটিই দেশে ভাষার জন্য প্রথম রক্তপাত এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহীতে ভাষাসৈনিকরা যে, শহীদ মিনার গড়েছিলেন সেটিই দেশের প্রথম শহীদ মিনার। ‘রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন’ গ্রন্থে এ্যাডভোকেট মহসীন প্রামাণিক তার প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি দিনগত সারারাত রাত ধরে আমরা ইট ও কাদা দিয়ে রাজশাহী কলেজের নিউ মুসলিম হোস্টেলের মেইন গেটের সামনে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করি এবং সকাল ৭টার দিকে এটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মিনারটি ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে পুলিশ এসে গুঁড়িয়ে দেয়।
তবে ২১ ফেব্রুয়ারির টেলিফোন বার্তাটি বিদ্যুৎ বেগে রাজশাহী শহরে ছড়িয়ে পড়ল ‘ঢাকায় ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছেন’। ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালানো হয়েছে, ‘অনেক ছাত্র শহীদ হয়েছে।’ খবর শুনে শহরের ঘরে ঘরে কান্নার রোল পড়ে গেল।
ভাষাসৈনিক সাইদ উদ্দিন আহমদ বলেন, তখন প্রেসিডেন্সি কলেজের পরেই ছিল রাজশাহী কলেজের স্থান। পূর্ব পাকিস্তানের সব অঞ্চল থেকেই ছাত্ররা এই কলেজে পড়তে আসতেন। রাজশাহী কলেজে থেকে স্নাতক পাস করে সবাই ঢাকায় পড়তে যেত। এ সব ছাত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন হাবিবুর রহমান শেলী। পরে জানা গেছে, ঢাকায় প্রথম ১০ জনের মিছিলে তিনিই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
রাজশাহী শহরের জনবসতি তখন পূর্ব দিকে বোসপাড়া পশ্চিম দিকে গীর্জা আর উত্তর দিকে অলকার মোড় ও বেলদার পাড়া পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। এই মহল্লাগুলো থেকে তখন অনেকেই ঢাকায় পড়াশোনা করতে গেছেন। জানা গেছে ছাত্র মারা গেছে। এতেই অজানা আতঙ্ক সব পরিবারেই। সেই খবরটি তখন রাজশাহীর ছাত্র সমাজকে খুবই আবেগতাড়িত করে। তাৎক্ষণিকভাবে রাজশাহী কলেজ হোস্টেলের ‘এ’ ব্লকের সামনে এক সভার মাধ্যমে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করার জন্য সোচ্চার হয়ে ওঠেন ছাত্ররা। সে সভায় সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন তৎকালীন রাজশাহী মেডিক্যাল স্কুলের ছাত্র ডা. এসএমএ গাফফার এবং যৌথভাবে সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজশাহী কলেজের ছাত্র গোলাম আরিফ টিপু ও হাবিবুর রহমান। এ পরিষদ গঠনের পর ঢাকায় নিহতদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের তাগিদ অনুভব করেন সবাই।
ওই পরিষদের সদস্য ছিলেন ভাষাসৈনিক সাইদ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, তখনও তারা জানেন না ঢাকায় কতজন শহীদ হয়েছেন। যারা শহীদ হয়েছেন তারা রাজশাহীর না অন্য জেলার সে হিসেব করার অবকাশ তখন ছিল না, তেমনি জানা ছিল না স্মৃতিস্তম্ভ সম্পর্কে কোনো ধারণা। তবে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে শুরু হলো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির কাজ।
কি দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হবে? খুঁজতে খুঁজতে পাওয়া গেল হোস্টেলের দেয়াল ভাঙ্গা ইট। সিদ্ধান্ত হলো ওই ইট দিয়েই বানানো হবে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। ছাত্রদের সঙ্গে হোস্টেলের কর্মচারীরা সবাই ইট ধুয়া মোছা শুরু করে দিলেন। ইট তো পাওয়া গেল। সিমেন্টের আর ব্যবস্থা করা গেল না। সিমেন্টের বদলে শেষ পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে পানি ঢেলে কাদা তৈরি করে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু করে দেয়া হলো। শহীদ মিনারের কোনো ডিজাইন সম্বন্ধে তখন কারও কোনো ধারণা নেই। অদক্ষ হাতে ‘চার থাক’ বিশিষ্ট স্তম্ভটি বানাতে রাত শেষ হয়ে এলো। এর গায়ে লেখা হলো ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’। সাইদ উদ্দিন বলেন, তার সঙ্গে কাগজ সেটে লেখা হলো রবি ঠাকুরের সেই অমর কবিতার ক’টি চরণ ‘নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান...।’
সেদিন রাজশাহীর কেউ জানত না যে, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কাদামাটি আর ইট দিয়ে তৈরি এই স্তম্ভটিই ছিল দেশের প্রথম শহীদ মিনার। তারও তিন বছর আগে ভাষা আন্দোলনের সূচনালগ্নেই রাজশাহীতে ভাষার জন্য ঘটেছিল প্রথম রক্তপাত। কাকতালীয়ভাবে প্রথম রক্তপাত এবং শহীদ মিনার তৈরির ঘটনাটি আবিষ্কার হয় অনেক পরে।
বদরুদ্দিন উমর লিখিত ‘ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গে কতিপয় দলিল’ গ্রন্থের সাক্ষাৎকার অংশে বলা হয়েছে, ‘১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ রাজশাহীতে হরতাল হয়েছিল। বিচারপতি মুহম্মদ হাবিবুর রহমান বাংলা একাডেমীর একুশে সংকলন ’৮০ স্মৃতিচারণ গ্রন্থে বলেছেন, রাজশাহীর সেই ১১ মার্চের ধর্মঘটকে সাফল্য ম-িত করার জন্য বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সেদিন আমরা পিকেটিং করি। ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু বলেন, সেদিন মিছিল নিয়ে ফায়ার ব্রিগেড মোড়ে যাওয়ার সময় মুসলিম লীগের গু-ারা লাঠিসোটা নিয়ে তাদের মিছিলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। গাজীউল হক বাংলা একাডেমীর একুশে সংকলন ’৮০ স্মৃতিচারণ গ্রন্থে বলেছেন, রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলনের মিছিলের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে একটি উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কারণ ভাষার দাবিতে যে, মিছিল বের হয় তার ওপর গু-ারা হামলা চালালে গোলাম তাওয়াব তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান এবং এক পর্যায়ে মূল মিছিল থেকে বিছিন্ন হয়ে গেলে তিনি গু-াদের হাতে প্রহৃত হন। ভাষার জন্য সেই প্রথম রক্ত ঝরে দেশের মাটিতে।
ভাষা আন্দোলনে রাজশাহীর এই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে ধরে রাখতে ১৯৯০ সালে রাজশাহীর কবি ও গবেষক তসিকুল ইসলাম রাজা একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেন। এ কাজ করতে গিয়ে তিনি ভাষা আন্দোলন নিয়ে সারাদেশের আন্দোলন সংগ্রামের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে থাকেন। সেইসঙ্গে রাজশাহীতে যারা ৪৮ সাল থেকে ৫২ এবং পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন যে, ৪৮ সালে ভাষাসৈনিকদের মিছিলে হামলার ঘটনায় যে রক্তপাত হয়েছিল সেটিই দেশে ভাষার জন্য প্রথম রক্তপাত এবং ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহীতে ভাষাসৈনিকরা যে, শহীদ মিনার গড়েছিলেন সেটিই দেশের প্রথম শহীদ মিনার। ‘রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন’ গ্রন্থে এ্যাডভোকেট মহসীন প্রামাণিক তার প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘২১ ফেব্রুয়ারি দিনগত সারারাত রাত ধরে আমরা ইট ও কাদা দিয়ে রাজশাহী কলেজের নিউ মুসলিম হোস্টেলের মেইন গেটের সামনে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করি এবং সকাল ৭টার দিকে এটার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশের প্রথম শহীদ মিনারটি ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে পুলিশ এসে গুঁড়িয়ে দেয়।
No comments