প্রাণের গভীরে- কেমনে ভুলি তারে
পঞ্চম শ্রেণী থেকে শুরু করে এইচএসসি পর্যন্ত। পাশাপাশি পড়ার টেবিলে বসেছি। কত খেলেছি এক সঙ্গে গোল্লাছুট, ফুটবল, ক্রিকেট। পাশাপাশি ঘুমিয়েছি এমনই বন্ধু সে।
যার সঙ্গে আমার মত ও পথের পার্থক্য ছিল না। পাশাপাশি গ্রাম ছিল। স্কুল বন্ধ হলে কোথায়ও দু’জনে মিলে ঘুরতে যেতাম। ২০০৫ সালে দু’জনে এইচএসসি পাশ করে চাঁদপুর সরকারী কলেজে ভর্তি হয়েছি। আমি বাংলায় সম্মানে। আর ও স্নাতক পাস কোর্সে। ওর ভর্তির ফরম পূরণসহ যাবতীয় কাজ আমি করে দিয়েছি। আমার পছন্দ করা পোশাক কিনে ও পরত। আমিও ওর পছন্দ করা পোশাক পরতাম। কোনদিন যদি ও বলত আজ বিকেলে নদীর পাড়ে যাব আমি সায় দিতাম। আবার আমি যদি বলতাম আজ সন্ধ্যার জোড়পুকুর পাড়ে বসব ও সায় দিত। এই যে মত ও পথের মিল তা বন্ধুত্বের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করেছে। দীর্ঘায়িত করেছে। যে কোন সম্পর্ক সৃষ্টির ক্ষেত্রে আগে ভালো করে তার মত, পথ ও সংস্কৃতি জেনে নেয়া উচিত। মত, পথ ও সংস্কৃতির পূর্ণাঙ্গ মিল থাকলে যে কোন সম্পর্ক সুন্দর ও দীর্ঘায়িত হতে পারে। ছোটখাটো বিষয় নিয়ে যে ভুল বোঝাবুঝি একেবারে হতো না তা নয়। পরক্ষণে তা দু’জনে শুধরে নিতাম। অতিরিক্ত রাগ আর গরম মেজাজ যে কোন সম্পর্কে কাঁটা হিসেবে মনে হয়। তা থেকে দু’জনে অনেক দূরে ছিলাম। সুখী সংসারের ক্ষেত্রে চারটি উপাদানকে অধিক বিবেচনা করা ও গুরুত্ব দেয়া হয়। তাহলে বিশ্বাস, সমঝোতা, শ্রদ্ধাবোধ এবং ভালবাসা। আমি মনে করি বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও এসব উপাদান সহায়ক ভূমিকা পালন করে। স্মৃতির পাতায় আমার বন্ধুর সঙ্গে অনেক ঘটনাই লিপিবদ্ধ আছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখ করছি। ২০০৬ সালের অন্তিম লগ্নে। চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়ায় একটি মেসে থাকতাম। কোন এক কাজে রাতের লঞ্চে ঢাকায় যাবো। ভাড়ার পর্যাপ্ত টাকা আমার পকেটে আছে। বিকেলে ছোট একটা বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়েছিল। সন্ধ্যার পর তাকে বললাম রাতে ঢাকায় যাব। একটু লঞ্চঘাট পর্যন্ত যাওয়া যাবে? অভিমানী সুরে বলল জানি না। রাত বারোটায় লঞ্চে পা দিতেই দেখি ও ভেতরে কাউন্টারের সামনে পায়চারি করছে।আমি লঞ্চের ছাদে উঠে একটি চেয়ারে বসে রাতের নদী উপভোগ করছি, তখনও লঞ্চ ছাড়েনি। আমাকে লঞ্চের প্রথম শ্রেণীর চেয়ারের একটা টিকেট হাতে গুঁজে দিয়ে বলল, লঞ্চ ছেড়ে দিচ্ছে আমি নেমে যাচ্ছি। এ রকম আরও বহু ঘটনা আছে। পারিবারিকভাবে আমি এখন রাজবাড়ী জেলা শহরে বাস করি। পড়ালেখা এখানেই হচ্ছে। একাধিক বছর হলো আমার এমন বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তার মোবাইল নাম্বার আমি হারিয়ে ফেলেছি। তাকে কিভাবে খুঁজে পাব বা পাওয়ার কোন উপায় আছে কিনা ভাবতে ভাবতে ডি প্রজন্মের কথা মনে হলো। আশা করছি ডি প্রজন্মের মাধ্যমে আমার হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে খুঁজে পাব। এমনই বন্ধু সে, ‘কেমনে ভুলি তারে।’
হারুনুর রশিদ
০১৫৫৩৩৪৫৫২৪
উড়ো চিঠি
কেমন আছো আঁখি? নিশ্চয়ই ভালো, আমি ভালো নেই কি করে ভালো থাকি, তুমিই বল তুমিহীনা এই আমার ভালো থাকা কি মানায়? তুমিই তো বলেছিলে জীবনে যত ঝড়ই আসুক কখনো যেন তোমায় ভুলে না যাই। আমি তো আমার কথা ঠিকই রেখেছি। কিন্তু তুমি কথা রাখনি। খুব সহজেই আমাকে ভুলে গেছ , ছুড়ে ফেলেছো পথের ধুলোয় তোমার আমার মাঝে এখন আকাশ মাটির ব্যবধান। কি করে এত সহজে ভুলে গেলে আমায়?
ভালোবাসা কেন এমন হয়? একটি সুন্দর জীবনকে এলোমেলো করে দেয়ার জন্যই কি ভালোবাসা জীবনে আসে ? সে প্রশ্ন আজ তোমায় করব না। আমার মাঝে এমন কি নেই যার জন্য তুমি অন্য পথে পা বাড়ালে? এ আমার মনের সহজ জিজ্ঞাসা। সত্যিই বলছি, কোন প্রশ্ন তুলে আজ আর তোমায় বিব্রত করব না। শুধু এতটুকু বলি, আমার মনের পুরোটা জুড়ে যে তোমার অধিষ্ঠান, তা কোন দিন কেউ মুছতে পারব না, পারবে না সে জায়গা কেউ দখল করতে।
কারণ, আজো তোমাকেই ভালোবাসি! অনেক, অনেক, অনেক বেশি ভালোবাসি! জানি না এই বার্তাবহ উড়ো চিঠি পোঁছাবে কিনা তোমার হাতে! পোঁছলেও পড়বে কি তুমি আমার এই চিঠি?
টি এম মোস্তাসিম
০১৭২২৭২৫০৮৮
হে স্বপ্নচারিণী
কৈশোরের ঝরাপাতা গুনতে গুনতে এক সময় আবির্ভূত হতে দেখলাম আমি আমার তারুণ্যকে। তারুণ্য সবার চোখে খেলা করে বিক্ষিপ্ত রক্তিম কিছুস্বপ্ন। দৃষ্টি সীমায় স্বপ্নময় হয়ে ধরা দেয় সবকিছু। সাথী অথচ দেখ আমার ক্ষেত্রে সোনালী রং মেখে দৃষ্টি দেইনি দূর আকাশ পানে। সাথী কি করে দিব বলো। আমি বাস করি স্বপ্নঘেরা জগতে। এবং স্বপ্নের পরিধি হতে থাকে বিস্তৃত থেকে বিস্তৃততর। কিন্তু আমি যে স্বপ্ন সাজাতে পারি না। সাথী কে তুমি? তুমি কি আসবে আমার সোনালী স্বপ্নগুলো সাজাতে। হে স্বপ্নচারিণী। আমি তো তোমারি অপেক্ষায়। তোমার কথা ভাবতে গেলেই শিহরিত হই আমি প্রতি মুহূর্ত। সাথী স্পন্দন সৃষ্টি করে রক্তের প্রতিটি কণায়। যখন তোমাকে ভাবি এবং শেষ বিকেলের একাকী মুহূর্তগুলো। আর নীরব রাতের ঘুমকে তাড়া করে ফেরে আমার দেখা সোনালী স্বপ্নরা। আর পাশে কল্পনার বর্ণিল আমি আপন মনে এঁকে যাই হৃদয় ক্যানভাসে শুধুই তোমারই ছবি। সাথী আমার হৃদয়ের লাল কুঠুরিতে সঞ্চিত ভালবাসা শুধুই তোমার জন্য এবং এ হৃদয়ের নকশিকাঁথার মতো তুলির আঁচড়ে শুধু তোমারই ছবি। সাথী আমার সুখে-দুঃখে তুমি রবে আমার অবিচল বিশ্বস্ত নিবিড় সঙ্গী হয়ে। আজীবন তোমার চোখে লুক্কায়িত আশার পিদিম আমার হৃদয় উদান্তে ছড়াই ফুলের সুবাস। সাথী তুমি রবে ভাল সুন্দর আর গুণের সমন্বয়ে এক অপরূপ। যেখানেই থাক ভালো থাক। তোমার অপেক্ষায় আমি অনুক্ষণ।
মিজানুর রহমান
০১৮১৫৭৬৭৭৭৮
No comments