সঠিকভাবে তদারকি হচ্ছে না প্রকল্পের কাজ
উন্নয়ন
প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি
পরিবীক্ষণসহ পরিকল্পনা কমিশনের গাইডলাইন এবং পিপিআরের বিধিবিধান সঠিকভাবে
পরিপালনের বিষয়টি তদারকি হচ্ছে না। এমনকি দফতর ও সংস্থাপর্যায়ে প্রকল্পের
অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত সভাও হচ্ছে না। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ
মাসে (জুলাই-নভেম্বর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অগ্রগতি মাত্র ১১
দশমিক ৮২ শতাংশ। এমনকি জাতীয় গড় অপেক্ষাও কম বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
সুরক্ষা সেবা বিভাগের পর্যালোচনায় বেরিয়ে এসেছে। সম্প্রতি সুরক্ষা সেবা
বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে এডিপি বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে
পর্যালোচনা সভায় সভাপতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিধি অনুসরণ করে প্রকল্প
বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি না তা তদারকি করার জন্য গত অক্টোবরে অধীনস্থ দফতর
বা সংস্থার প্রধানদের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সেটি করা হয়নি। এই কাজ
সঠিকভাবে পালনের জন্য আবারো দফতর বা সংস্থার প্রধানদের নির্দেশনা দেয়া হয়।
পর্যালোচনা সভায় জানানো হয়, চলতি অর্থবছর এডিপিতে সুরক্ষা সেবা বিভাগের
১৮টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ৯৩৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এর মধ্যে
জিওবি খাতে ৮৮৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য খাতে ৫৪ কোটি ৪৩ লাখ
টাকা রয়েছে। ওই অর্থ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ২৮৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা অবমুক্ত
হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের প্রায় ৩০ দশমিক ২৭ শতাংশ। কিন্তু প্রকল্প
পরিচালকেরা ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ১১০ কোটি ৯১ লাখ টাকা বা ছাড়কৃত অর্থের
মাত্র ৩৯ দশমিক ৬ শতাংশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক কম।
গত
অর্থবছর অগ্রগতি ছিল বরাদ্দকৃত অর্থের ২৪ শতাংশ এবং ছাড়কৃত অর্থের ৬৬
শতাংশ। এখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি হলো ১৮ শতাংশ। সভায় এই অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ
প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন অগ্রগতি
ত্বরান্বিত করতে প্রকল্প পরিচালকদের নির্দেশনা দেয়া হয় বলে সভা সূত্রে জানা
গেছে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের
অগ্রগতি মাত্র ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। সংস্থাটির পাঁচটি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ
রয়েছে ৬১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। অর্থ ছাড় হয়েছে ১৫৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। কিন্তু
ব্যয় হয়েছে মাত্র ৫৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কারা অধিদফতরের অগ্রগতি ১৭ দশমিক ৩৩
শতাংশ। ৯টি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দ রয়েছে ২৬৭ কোটি ১০ লাখ টাকা। ছাড়
হয়েছে ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। তারা ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ৪৬ কোটি ২৯ লাখ
টাকা। পাসপোর্ট অধিদফতরের তিন প্রকল্পের অগ্রগতি ১৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এরা
ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ছয় কোটি ৩৬ লাখ টাকা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ
অধিদফতরের এক প্রকল্পের অগ্রগতি ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট বিভাগ বলছে,
১৮টি প্রকল্পের মধ্যে আটটি চলতি অর্থবছরে শেষ হয়ে যাবে। তাই এডিপিতে
অন্তর্ভুক্ত নতুন অননুমোদিত প্রকল্পগুলোর খসড়া প্রস্তাব অতি দ্রুত
অনুমোদনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি করা না হলে আগামী অর্থবছর এই বিভাগের
এডিপির আকার কমে যাবে।
No comments