আইন প্রণয়ন করে খালেদার জন্য এসএসএফ দাবি করেছে বিএনপি
সংসদের বিরোধী দলের নেতা বেগম খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার জন্য এসএসএফ নিযুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তাঁরা বলেন, বিরোধী দলের নেতার জন্য এসএসএফ মোতায়েনের বিধান না থাকলেও সংসদে নতুন আইন প্রণয়ন করে সে ব্যবস্থা করতে পারে বর্তমান সরকার।
একই সঙ্গে বিএনপি নেতা নজরম্নল ইসলাম খান জানান, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধানত্ম হয়েছে, আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে সকল বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করা হবে। ওই সমাবেশে ভাষণ দেবেন দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপিসহ সকল অঙ্গদল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের এসব কর্মসূচী সফল করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য বৈঠকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।শুক্রবার সকালে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরম্নল ইসলাম খান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এসএসএফ নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। তা ছাড়া বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে কিছু সময়ের জন্য হলেও বড় দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এসএসএফ নিরাপত্তা পেয়েছিলেন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা পাচ্ছেন। আইন করে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা বিধান করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিরোধীদলীয় নেতার জন্য এসএসএফ নিয়োগের বিধান না থাকলে প্রয়োজনে আইন করা হোক। কারণ বেগম খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে দেশের তিন তিনবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই বিবেচনা করে আইন না থাকলেও নতুন করে আইন প্রণয়ন করে বিশেষ নিরাপত্তার বিধান করতে পারে সরকার।
নজরম্নল ইসলাম খান আরও বলেন, গত কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জীবননাশের জন্য দুই বার বোমা হামলার ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে আমাদের দলের নেতাকর্মীরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ অবস্থায় বেগম জিয়ার নিরাপত্তার জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) দেয়ার দাবি করেছি। সরকার বিষয়টি অতীব গুরম্নত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেবে বলে বিএনপি আশা করছে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানের কার্যালয়ে বেগম জিয়ার সভাপতিত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। গভীর রাতে বৈঠক শেষ হলেও ব্রিফিং করা হয়নি। শুক্রবার সকালে দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধানত্ম জানান দলের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে নজরম্নল ইসলাম খানের সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করতে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ১৯টি টিম গঠন করা হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। বৈঠকের সিদ্ধানত্ম সম্পর্কে নজরম্নল ইসলাম খান বলেন, দেশের সকল বিভাগীয় জেলা সদরে জনসভা করার সিদ্ধানত্ম নেয়া হয়েছে। বিভাগীয় সমাবেশে ভাষণ দেবেন চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে জেলা সদরে জনসভা ও কর্মিসভা করবে দলের এই গঠিত টিমগুলো। ঢাকায় মহাসমাবেশের আগেই বিভাগীয় শহরগুলোতে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রম্নয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদর দফতরে সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং মদদদাতাদের দ্রম্নত বিচার ও শাসত্মির দাবিও জানিয়েছেন তিনি। নজরম্নল ইসলাম খান বলেন, স্থায়ী কমিটি ওই ঘটনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারে সরকারী ্তুঅপচেষ্টার্থ নিন্দা এবং এ সংক্রানত্ম তদনত্ম কমিটিগুলোর প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি বলছে, সেনা প্রত্যাহারের কারণেই সেখানে নিরাপত্তা ব্যাহত হচ্ছে। ২১ ফেব্রম্নয়ারীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিরোধী দলীয় নেতাকে প্রটোকল না দেয়ার সমালোচনাও করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। নজরম্নল ইসলাম আরও জানান, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধ, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন বন্ধ এবং দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যও সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি। সংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে নজরম্নল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সক্রিয় রাজনীতিতে আসার খবরকে আমরা স্বাগত জানাই। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, কারও বিরম্নদ্ধে দুনর্ীতির অভিযোগ উঠলেই সে দুর্নীতিবাজ না। আমরা জয়কে দুর্নীতিবাজ বলছি না। তবে তাঁর বিরম্নদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়েও তাঁকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। গাজীপুরে পোশাক কারখানায় অগি্নকা-ে হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ এবং নিহতদের পরিবারকে তিপূরণ দেয়ার দাবি করেছে বিএনপি।
No comments