গোপালগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস-অনিয়মের ছাড়পত্র কে দিল?

গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে অনিয়ম নিয়ে মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি দেশের অধিকাংশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে মানুষ হয়রানির সাধারণ চিত্র। তবে পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে সুকৌশলে ঘুষবাণিজ্য চালুর যে বন্দোবস্ত গোপালগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক করেছেন, তার তুলনা হয় না।


অথচ মানুষের হাতে যাতে অতি সহজে পাসপোর্ট পেঁৗছায় সে লক্ষ্য নিয়েই নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। এখনও ঢাকায় কেন্দ্রীয় পাসপোর্ট অফিসে দালালদের দৌরাত্ম্য না সয়ে ও ঘুষ প্রদান না করেই পাসপোর্ট করানো যায়। কিন্তু অধিকাংশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এই সরলিকৃত নিয়মটিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির পথ সুগম করার জন্য আগের মতোই প্রায় কঠিন করে রেখেছে। গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এখানে ছবি তোলা, আবেদনপত্র জমা দেওয়া থেকে ডেলিভারি পর্যন্ত ঘাটে ঘাটে বাড়তি টাকা গুনেই একজন নাগরিক তার পাসপোর্ট পাওয়ার আশা করতে পারেন। অথচ সরকারের বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট আবেদনকারীর হাতে পেঁৗছার কথা। জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও অনেক সময় এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটতে দেখা যায়। কেন এমন হচ্ছে! কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসগুলোর কর্মকাণ্ডের ওপর পর্যাপ্ত নজর রাখা হয় না অথবা ওপরের কোনো কোনো কর্মকর্তা এসব অনৈতিক কাজকে দেখেও না দেখার ভান করেন বলেই এসব আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সাধারণ নাগরিক হয়রানি ও দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে। সমকালের প্রতিবেদনে একজন আবেদনকারীকে কীভাবে নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট ডেলিভারি না দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে তার বিবরণ রয়েছে। বাড়তি অর্থ দিয়ে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও পাসপোর্ট পাননি এমন অভিযোগকারীর সংখ্যাও কম নয়। আবেদনকারীদের অভিযোগের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ত্বরিত ব্যবস্থা নিলে গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আসতে পারে। এতে আবেদনকারীদের এখনকার মতো হয়রানির শিকার হয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগতে হবে না। পাসপোর্টের মতো একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক সার্ভিসে এ ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি কোনোক্রমেই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়। সোজা কথা, মানুষ ঝক্কি-ঝামেলামুক্তভাবে পাসপোর্ট পেতে চায়। সরকারের উচিত জনস্বার্থে এ ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
 

No comments

Powered by Blogger.