বইছে উৎসবের হাওয়া by সজীব মিয়া ও সাইফুল ইসলাম

আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ইন্টারনেট উৎসব। তারও আগে থেকে উৎসবের হাওয়া লেগেছে বন্ধুদের মনে। প্রস্তুতি চলছে আনন্দের। কারও অনুষ্ঠান উৎসব ক্যালেন্ডারের শুরুতে, কারও আবার শেষের দিকে। কিন্তু এই হিসাব কষে কেউ বসে নেই। তেমনি আগেভাগে ইন্টারনেট উৎসব হচ্ছে, এমন একটি জেলা কক্সবাজার।


তাদের উৎসব হবে ১৬ সেপ্টেম্বর। তাদের প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। কক্সবাজার বন্ধুসভার সাহিত্য সম্পাদক আহমদ শরীফ বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে তিনটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছি। প্রায় প্রতিদিন বন্ধুদের সঙ্গে বসছি। এ বিষয়ে কথা হচ্ছে। উৎসবের আগে সবার দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। আয়োজনে যে নতুনত্ব এসেছে, তাতে বন্ধুদের আগ্রহ আরও বেড়েছে। সবাই বেশ উৎসাহী। আর যেখানে উৎসাহ বেশি, সেখানে প্রতিটি কাজ সহজে হয়ে যাবে—এটাই স্বাভাবিক।’
ময়মনসিংহের বন্ধু মোমেনা আক্তার বলেন, ‘আমরা প্রস্তুতি বৈঠক করেছি। উৎসব উদ্যাপনের জন্য পাঁচ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করেছি। যাঁরা গত বছর ইন্টারনেট উৎসবে বন্ধু হয়েছেন, তাঁদের অনেকে এবার উৎসবে কাজ করছেন। এবার যেহেতু নতুন অনেক বিষয় যোগ হয়েছে, তাই বন্ধুরা উল্লসিত।’
এ বছর প্রথমবারের মতো ইন্টারনেট উৎসব আয়োজন করছেন লালপুরের বন্ধুরা। লালপুরের বন্ধু জালাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এখনো প্রতিষ্ঠানভিত্তিক কাজ শুরু করা হয়নি। তবে স্কুল নির্বাচন করছি। আমরা প্রায় ৪০ জনের দল রাজশাহীর বাঘায় ইন্টারনেট উৎসব দেখতে যাব। সেখান থেকে আমাদের অনুষ্ঠান সফল করতে সার্বিক বিষয় জেনে আসব। তা ছাড়া আমরা নিয়মিত উৎসব নিয়ে আলোচনা করছি।’
উৎসব ক্যালেন্ডারের প্রায় শেষের দিকে নোয়াখালী জেলার অনুষ্ঠান। শেষের দিকে হলেও তাদের প্রস্তুতি থেমে নেই। নোয়াখালীসভার সাধারণ সম্পাদক তাছলিম আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রতিষ্ঠান বেশি, তাই আমন্ত্রণ জানাতে গিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হচ্ছে।’
পাহাড়ের বন্ধু শ্যামল চাকমা একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করেছি, কোন স্কুলে যাব। গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে করছি। তাই এবার ভালো একটি উৎসব আয়োজন করতে পারব।’
পঞ্চগড়ের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইন্টারনেট উৎসবের বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে, তাঁরা বেশ আগ্রহী। এমনকি উৎসবে বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করতে তাঁদের ছাত্রছাত্রীদের যুক্ত করতে বলেছেন।’

‘আমরা দারুণ উচ্ছ্বসিত...’
সবচেয়ে কাছের মানুষটি কোনো কারণে হয়তো অনেক দূরে অবস্থান করছে; তাই বলে কি দূরত্বের কাছে হার মানতে হবে? না, তা হতে পারে না। কারণ, এই দূরত্বকে জয় করার সুযোগ দিয়েছে ইন্টারনেট। আর এর আলো দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস নিয়ে গত বছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ইন্টারনেট উৎসব।
‘ইন্টারনেটের আছে বিস্ময়কর এক শক্তি। একে কাজে লাগিয়ে দেশকে বদলে দেওয়া সম্ভব; সমৃদ্ধ করা সম্ভব নিজেদের অবস্থান। অন্যদিকে, এর অপব্যবহারই নষ্ট করতে পারে জীবনের অপার সম্ভাবনা। তাই নতুন প্রজন্মের কাছে ইন্টারনেটের প্রকৃত আলো পৌঁছে দিতে এবং স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার কাজে নিজেদের নিবেদিত করেছি। আমরা দারুণ উচ্ছ্বসিত!’ এভাবেই ইন্টারনেট উৎসবে কাজের ও সম্পৃক্ততার অনুভূতির কথা বললেন বন্ধু জুবায়ের কবির।
আয়োজনকে সফল করতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পাইলট উৎসবের পর তাঁদের কাজের ব্যাপকতা আরও বৃদ্ধি পায়। প্রতিদিন বিকেলে কাজের অগ্রগতি ও পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়। সারা দেশে উৎসব সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে ছয়টি অঞ্চলের জন্য ৩০ জন সদস্যের বিশেষ দল গঠন করা হয়। আজ তাঁদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন হবে। এ জন্য বন্ধুরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার প্রয়াস নিয়ে এমন আয়োজন। আমাদের সব কাজের পেছনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান।

No comments

Powered by Blogger.