সাক্ষাৎকার-রোহিঙ্গা একটি রাজনৈতিক রঙ লাগানো শব্দ by ড. জ্যাকস পি লেইডার
আরাকানের ইতিহাস বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড. জ্যাকস পি লেইডার দুই দশক ধরে ওই অঞ্চলের ওপর গবেষণা এবং নিবন্ধ লেখালেখি করে আসছেন। বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডের চিয়াংমাইভিত্তিক ফ্রেঞ্চ স্কুল অব এশিয়ান স্টাডিজের প্রধান। এর আগে তার কর্মস্থল ছিল রেঙ্গুনে অবস্থিত রিজিওনাল সেন্টার ফর হিস্ট্রি অ্যান্ড ট্রাডিশন। থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক ইরাবতী সম্প্রতি তার এই সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।
সংক্ষেপিত ভাষান্তর শেখ রোকন
রোহিঙ্গা বলতে আসলে কী বোঝায়?
রোহিঙ্গা শব্দটি প্রথম দেখা যায় আঠারো শতকের শেষভাগে এক ইংরেজ প্রণীত মেডিকেল রিপোর্টে। তিনি চট্টগ্রাম ও রাখাইন (আরাকান) এলাকা সফর করেছিলেন। তার নাম ফ্রান্সিস বুকানান-হ্যামিলটন, পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ফলে সেই শব্দের বৈজ্ঞানিক ও ব্যুৎপত্তিগত ব্যাখ্যা দিলে রাজনীতির কোনো বিষয় সেখানে পাওয়া যায় না। বিশ শতকে এসে দেখা যাচ্ছে, শব্দটি রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। পঞ্চাশের দশকে আসলে কীভাবে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল? এটা স্পষ্ট, যারা শব্দটি ব্যবহার করত, তারা আসলে ওই অঞ্চলে বসবাসরত একটি জনগোষ্ঠীকে নির্দেশ করতে চাইত।
তাহলে আরাকান স্টেটের মুসলিম সম্প্রদায়ের ইতিহাস কী?
দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের সর্বত্রই_ থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ায়_ আপনি মুসলিম সম্প্রদায়ের দেখা পাবেন। এশিয়ার অন্যান্য অংশে ইসলাম সম্প্রসারিত হলেও মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে কিন্তু ১৫ শতকের আগে ধর্মটি ছিল না। একই সময় মিয়ানমারেও মুসলিম সম্প্রদায় দেখতে পাওয়া বিস্ময়ের কিছু নেই। আমরা জানি, ১৫ শতাব্দীতে মিয়ানমারের মুসলমানরা ছিল বর্ধিষ্ণু জনগোষ্ঠী। মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় অংশটি মিয়ানমারে আগমন করে ঔপনিবেশিক আমলে।
আরাকানে এখন মুসলিম ও বৌদ্ধদের পরিস্থিতি কেমন?
একজন বিদেশির পক্ষে এর উত্তর দেওয়া কঠিন। কারণ রাখাইন স্টেটের সর্বত্র আমরা যেতে পারি না। আমি বলব না যে সেখানকার বৌদ্ধরা বর্ণবাদী। সেখানে সম্প্রতি যা দেখা গেছে তা বোধহয় আবেগতাড়িত প্রতিক্রিয়া।
এই প্রতিক্রিয়ার শিকড় কোথায়?
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আমি মনে করি, বার্মার অন্যান্য এলাকার সঙ্গে রাখাইন স্টেটের মুসলিমদের একটি বড় পার্থক্য হচ্ছে, তারা সবাই কৃষক। উপনিবেশ-পূর্ব যুগ থেকেই তারা কৃষক। কারণ রাখাইন রাজারা তাদের নিয়ে এসে বসতি স্থাপন করে দিয়েছিল। ১৭ শতকের তথ্যসূত্রে আমরা দেখতে পাই, সেখানে এমন কিছু গ্রাম ছিল যেগুলোতে মুসলমান ছাড়া আর কোনো সম্প্রদায় নেই। ঔপনিবেশিক আমলে এসে (বার্মায়) ভারতীয় অভিবাসন বন্ধ করে। তবে ওই সময় যেহেতু সীমান্ত ছিল না, ধারণা করা যায় বাংলা ও রাখাইন প্রদেশে লোকজনের যাতায়াত অবাধ ছিল। ১৯২০ সালের দিকে বৌদ্ধ রাখাইনরা ফিরে আসে এবং দেখতে পায় জনমিতির এক বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। তারা তখন বিপন্ন বোধ করতে থাকে।
আরাকান সংঘাতের নেপথ্যে কি বর্ণবাদ?
বাস্তবে নয়। একপক্ষ যদি 'বর্ণবাদী' বলে গালি দেয়, তাহলে হয়তো অন্যপক্ষ ওই শব্দ ব্যবহার করে পাল্টা গালি দেয়। এটা ঠিক, সেখানে সহিংসতা রয়েছে। সেজন্য বর্ণবাদের মতো শব্দ ব্যবহারের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। যেমন এখন অনেকে 'গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহার করছে। এটাও আসলে বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। দুই পক্ষের মধ্যে আসলে 'অপছন্দ' ব্যাপারটি রয়েছে। মানুষের মধ্যে জেনোফোবিয়া (বিদেশিভীতি) থাকে না? আসলে 'বর্ণবাদ' ছাড়াও আরও অনেক শব্দ আছে, যেগুলো দিয়ে সঠিকভাবে সেখানকার পরিস্থিতি বোঝানো যায়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কি ভুল চিত্র প্রকাশিত হচ্ছে?
হ্যাঁ, আকসার। সাংবাদিকদের উচিত তাদের নথি ও তথ্যের ব্যাপারে বৈচিত্র্যময় উৎস ব্যবহার করা। স্বীকার করি, সেটা সহজ না-ও হতে পারে। আমি মনে করি, মিয়ানমার যখন নিজেকে উদার করে তুলছে তখন সংবাদমাধ্যমের ওপর ব্যাপক দায়িত্ব বর্তায় সেটাকে সম্ভব করে তোলার জন্য। মিয়ানমারের লেখক, মিয়ানমারের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে এই সময় দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অবস্থান নিতে হবে। তারা যদি কোনো পক্ষ নেন, সেটা ভালো হবে না। এখন আসলে সবাইকে সতর্ক ও আত্মসমালোচক হতে হবে।
বর্তমান সংঘাত নিরসনের উপযুক্ততম উপায় কী?
আমি সম্ভবত বলব, জনসাধারণেরই উচিত একত্রে বসা এবং বলা যে তারা কী চায়, কোথায় কোথায় সমস্যা। বলা উচিত তারা শান্তিপূর্ণ জীবন চায়, তারা সুখী জীবন চায় এবং সন্তানদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ দেখতে চায় তারা। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে ভাবতে হবে তারা পছন্দ করুন বা না করুন, অন্য সম্প্রদায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে না। তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে না। একসঙ্গে বসবাসের জন্য তাদের কোনো না কোনো পথ খুঁজে বের করতেই হবে। ধর্ম ছাড়াও আরও অনেক ইস্যু রয়েছে যেগুলো তারা পরস্পর বিনিময় করতে পারে। তারা যদি সংঘাতের দিকে যায়, তাহলে আসলে নিজেদের স্বার্থ, নিজেদের ভবিষ্যৎ এবং রাখাইন স্টেটের উন্নয়নের সঙ্গেই সংঘাতে যাবে। তারা যদি একত্রে কাজ করতে পারে, তাহলে পারস্পরিক সংঘাতের বদলে তারা কর্মক্ষেত্রে আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
রোহিঙ্গারা কি বার্মার কোনো নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠী?
আমার উত্তর হচ্ছে 'রোহিঙ্গা' কোনো নৃতাত্তি্বক ধারণাই নয়। ঠিক আছে, তারা রুখে দাঁড়িয়ে বলতে পারে যে_ হ্যাঁ, আমরা মিয়ানমারের অভ্যন্তরের একটি নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠী। কিন্তু আমি মনে করি সেটা উত্তম পন্থা নয়। বরং আপনি যখন বলবেন আমরা মুসলিম এবং রাখাইন স্টেটে আমরা কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছি, সেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমার কথা হচ্ছে, রোহিঙ্গা একটি শব্দ মাত্র। এটা একটি পুরনো শব্দ এবং মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকে এটাকে রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এ মুহূর্তে আমার মনে হয় না ওই একটি শব্দকে নিজেদের পরিচয় হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি হবে। আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। মূলত রাখাইন স্টেটের বাসিন্দা_ এমন মুসলমানের সঙ্গে সেখানে দেখা হয়েছে আমরা। এখন তারা বাংলাদেশে থাকছে। তাদের যখন আমি জিজ্ঞেস করেছি যে, আপনারা কি রাখাইন স্টেট থেকে আসা মুসলমান? তারা বলেছে 'না, আমরা মুসলমান, রাখাইন স্টেটের বাসিন্দা। রোহিঙ্গা পরিচয় আমরা গ্রহণ করতে চাই না।'
রোহিঙ্গা বলতে আসলে কী বোঝায়?
রোহিঙ্গা শব্দটি প্রথম দেখা যায় আঠারো শতকের শেষভাগে এক ইংরেজ প্রণীত মেডিকেল রিপোর্টে। তিনি চট্টগ্রাম ও রাখাইন (আরাকান) এলাকা সফর করেছিলেন। তার নাম ফ্রান্সিস বুকানান-হ্যামিলটন, পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ফলে সেই শব্দের বৈজ্ঞানিক ও ব্যুৎপত্তিগত ব্যাখ্যা দিলে রাজনীতির কোনো বিষয় সেখানে পাওয়া যায় না। বিশ শতকে এসে দেখা যাচ্ছে, শব্দটি রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে ব্যবহৃত হচ্ছে। পঞ্চাশের দশকে আসলে কীভাবে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছিল? এটা স্পষ্ট, যারা শব্দটি ব্যবহার করত, তারা আসলে ওই অঞ্চলে বসবাসরত একটি জনগোষ্ঠীকে নির্দেশ করতে চাইত।
তাহলে আরাকান স্টেটের মুসলিম সম্প্রদায়ের ইতিহাস কী?
দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের সর্বত্রই_ থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়ায়_ আপনি মুসলিম সম্প্রদায়ের দেখা পাবেন। এশিয়ার অন্যান্য অংশে ইসলাম সম্প্রসারিত হলেও মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে কিন্তু ১৫ শতকের আগে ধর্মটি ছিল না। একই সময় মিয়ানমারেও মুসলিম সম্প্রদায় দেখতে পাওয়া বিস্ময়ের কিছু নেই। আমরা জানি, ১৫ শতাব্দীতে মিয়ানমারের মুসলমানরা ছিল বর্ধিষ্ণু জনগোষ্ঠী। মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় অংশটি মিয়ানমারে আগমন করে ঔপনিবেশিক আমলে।
আরাকানে এখন মুসলিম ও বৌদ্ধদের পরিস্থিতি কেমন?
একজন বিদেশির পক্ষে এর উত্তর দেওয়া কঠিন। কারণ রাখাইন স্টেটের সর্বত্র আমরা যেতে পারি না। আমি বলব না যে সেখানকার বৌদ্ধরা বর্ণবাদী। সেখানে সম্প্রতি যা দেখা গেছে তা বোধহয় আবেগতাড়িত প্রতিক্রিয়া।
এই প্রতিক্রিয়ার শিকড় কোথায়?
ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আমি মনে করি, বার্মার অন্যান্য এলাকার সঙ্গে রাখাইন স্টেটের মুসলিমদের একটি বড় পার্থক্য হচ্ছে, তারা সবাই কৃষক। উপনিবেশ-পূর্ব যুগ থেকেই তারা কৃষক। কারণ রাখাইন রাজারা তাদের নিয়ে এসে বসতি স্থাপন করে দিয়েছিল। ১৭ শতকের তথ্যসূত্রে আমরা দেখতে পাই, সেখানে এমন কিছু গ্রাম ছিল যেগুলোতে মুসলমান ছাড়া আর কোনো সম্প্রদায় নেই। ঔপনিবেশিক আমলে এসে (বার্মায়) ভারতীয় অভিবাসন বন্ধ করে। তবে ওই সময় যেহেতু সীমান্ত ছিল না, ধারণা করা যায় বাংলা ও রাখাইন প্রদেশে লোকজনের যাতায়াত অবাধ ছিল। ১৯২০ সালের দিকে বৌদ্ধ রাখাইনরা ফিরে আসে এবং দেখতে পায় জনমিতির এক বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। তারা তখন বিপন্ন বোধ করতে থাকে।
আরাকান সংঘাতের নেপথ্যে কি বর্ণবাদ?
বাস্তবে নয়। একপক্ষ যদি 'বর্ণবাদী' বলে গালি দেয়, তাহলে হয়তো অন্যপক্ষ ওই শব্দ ব্যবহার করে পাল্টা গালি দেয়। এটা ঠিক, সেখানে সহিংসতা রয়েছে। সেজন্য বর্ণবাদের মতো শব্দ ব্যবহারের ব্যাপারে আমাদের সতর্ক হওয়া উচিত। যেমন এখন অনেকে 'গণহত্যা' শব্দটি ব্যবহার করছে। এটাও আসলে বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। দুই পক্ষের মধ্যে আসলে 'অপছন্দ' ব্যাপারটি রয়েছে। মানুষের মধ্যে জেনোফোবিয়া (বিদেশিভীতি) থাকে না? আসলে 'বর্ণবাদ' ছাড়াও আরও অনেক শব্দ আছে, যেগুলো দিয়ে সঠিকভাবে সেখানকার পরিস্থিতি বোঝানো যায়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে কি ভুল চিত্র প্রকাশিত হচ্ছে?
হ্যাঁ, আকসার। সাংবাদিকদের উচিত তাদের নথি ও তথ্যের ব্যাপারে বৈচিত্র্যময় উৎস ব্যবহার করা। স্বীকার করি, সেটা সহজ না-ও হতে পারে। আমি মনে করি, মিয়ানমার যখন নিজেকে উদার করে তুলছে তখন সংবাদমাধ্যমের ওপর ব্যাপক দায়িত্ব বর্তায় সেটাকে সম্ভব করে তোলার জন্য। মিয়ানমারের লেখক, মিয়ানমারের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে এই সময় দায়িত্বশীলতার সঙ্গে অবস্থান নিতে হবে। তারা যদি কোনো পক্ষ নেন, সেটা ভালো হবে না। এখন আসলে সবাইকে সতর্ক ও আত্মসমালোচক হতে হবে।
বর্তমান সংঘাত নিরসনের উপযুক্ততম উপায় কী?
আমি সম্ভবত বলব, জনসাধারণেরই উচিত একত্রে বসা এবং বলা যে তারা কী চায়, কোথায় কোথায় সমস্যা। বলা উচিত তারা শান্তিপূর্ণ জীবন চায়, তারা সুখী জীবন চায় এবং সন্তানদের জন্য ভালো ভবিষ্যৎ দেখতে চায় তারা। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে ভাবতে হবে তারা পছন্দ করুন বা না করুন, অন্য সম্প্রদায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে না। তারা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে না। একসঙ্গে বসবাসের জন্য তাদের কোনো না কোনো পথ খুঁজে বের করতেই হবে। ধর্ম ছাড়াও আরও অনেক ইস্যু রয়েছে যেগুলো তারা পরস্পর বিনিময় করতে পারে। তারা যদি সংঘাতের দিকে যায়, তাহলে আসলে নিজেদের স্বার্থ, নিজেদের ভবিষ্যৎ এবং রাখাইন স্টেটের উন্নয়নের সঙ্গেই সংঘাতে যাবে। তারা যদি একত্রে কাজ করতে পারে, তাহলে পারস্পরিক সংঘাতের বদলে তারা কর্মক্ষেত্রে আরও বেশি দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
রোহিঙ্গারা কি বার্মার কোনো নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠী?
আমার উত্তর হচ্ছে 'রোহিঙ্গা' কোনো নৃতাত্তি্বক ধারণাই নয়। ঠিক আছে, তারা রুখে দাঁড়িয়ে বলতে পারে যে_ হ্যাঁ, আমরা মিয়ানমারের অভ্যন্তরের একটি নৃতাত্তি্বক গোষ্ঠী। কিন্তু আমি মনে করি সেটা উত্তম পন্থা নয়। বরং আপনি যখন বলবেন আমরা মুসলিম এবং রাখাইন স্টেটে আমরা কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করে আসছি, সেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। আমার কথা হচ্ছে, রোহিঙ্গা একটি শব্দ মাত্র। এটা একটি পুরনো শব্দ এবং মিয়ানমারের স্বাধীনতার পর থেকে এটাকে রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এ মুহূর্তে আমার মনে হয় না ওই একটি শব্দকে নিজেদের পরিচয় হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি হবে। আমি বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। মূলত রাখাইন স্টেটের বাসিন্দা_ এমন মুসলমানের সঙ্গে সেখানে দেখা হয়েছে আমরা। এখন তারা বাংলাদেশে থাকছে। তাদের যখন আমি জিজ্ঞেস করেছি যে, আপনারা কি রাখাইন স্টেট থেকে আসা মুসলমান? তারা বলেছে 'না, আমরা মুসলমান, রাখাইন স্টেটের বাসিন্দা। রোহিঙ্গা পরিচয় আমরা গ্রহণ করতে চাই না।'
No comments