পবিত্র কোরআনের আলো-বনি ইসরাইল সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠতে পারেনি
৮৯. ওয়ালাম্মা-জা-আ'হুম কিতা-বুম্ মিন ই'নদিল্লা-হি মুছ্বাদ্দিকুল্ লিমা-মাআ'হুম; ওয়াকা-নু-মিন কাবলু ইয়াছতাফতিহু-না আ'লা ল্লাযি-না কাফারু-; ফালাম্মা- জা-আহুম্ মা-আ'রাফু- কাফারু- বিহি; ফালা'নাতুল্লাহি আ'লাল কা-ফিরি-ন।
৯০. বি'ছামাশ্ তারাও বিহি-আনফুছাহুম আইঁয়্যাকফুরু-বিমা-আনযালাল্লা-হু বাগইয়ান আইঁয়্যিইউনায্যিলাল্লাহু মিন ফাদ্বলিহি আ'লা- মাইঁয়্যাশা-উ মিন ই'বাদিহি; ফাবা-উ-বিগাদাবিন আ'লা-গাদ্বাবিন; ওয়া লিলকা-ফিরি-না আ'যাবুম মুহি-নুন।
৯১. ওয়া ইযা-কিলা লাহুম আ-মিনু-বিমা-আনযালাল্লাহু কালু-নু'মিনু বিমা-উনযিলা আ'লাইনা- ওয়াইয়াকফুরু-না বিমা-ওয়ারা-আহু; ওয়াহুয়াল হাক্কু মুছাদ্দিকালি্লমা-মা'আহুম; কুল ফালিমা তাকতুলু-না আম্বিয়া-আল্লাহি মিন কাবলু ইন কুনতুম মু'মিনিন। (সুরা বাকারা, আয়াত ৮৯-৯১)
অনুবাদ : ৮৯. যখনই তাদের কাছে আল্লাহর কাছ থেকে কিতাব (কোরআন মাজিদ) নাজিল হলো, যা তাদের কিতাবগুলো অর্থাৎ তাওরাত-জবুরের সত্যতা স্বীকার করে; এর আগে তারা নিজেরাই অন্য কাফেরদের ওপর বিজয়ী হওয়ার জন্য [এ কোরআন ও মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন] কামনা করেছিল। কিন্তু আজ যখন তা তাদের কাছে এল এবং তা তারা চিনতেও পারল তখন তারা মানতে অস্বীকার করল। যারা আল্লাহর কিতাব অস্বীকার করে, তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ নাজিল হোক।
৯০. জঘন্য তাদের অবস্থান, যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রয় করে দিয়েছে, শুধু গোঁড়ামির বশবর্তী হয়েই তারা আল্লাহর নাজিল করা বিধান অস্বীকার করছে। (তাদের আকাঙ্ক্ষা মতো নয় বরং) আল্লাহর যাঁকে চান, তাঁকেই নবুওয়তের সৌভাগ্য দান করেন। তারা ক্রোধের ওপর ক্রোধে আক্রান্ত হয়; কাফেরদের জন্য অপমানজনক শাস্তি রয়েছে।
৯১. তাদের যখন বলা হয় আল্লাহ যা নাজিল করেছেন, তার ওপর ইমান আনো। তারা বলে, আমরা তো শুধু সেসব কিছুর ওপরই ইমান আনি, আমাদের অর্থাৎ বনি ইসরাইল জাতির ওপর নাজিল হয়; যা এর বাইরে, তা তারা অস্বীকার করে। অথচ তা সত্য, তাদের কিতাবেও তা সত্য বলে স্বীকার করা হয়েছে। আপনি বলুন হে নবী (সা.)! তোমরা যদি বিশ্বাসী বা মু'মিন হও, তবে আল্লাহর নবীদের কেন এর আগে হত্যা করেছিলে?
ব্যাখ্যা : এখানে বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করার মূল কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে তার প্রতি করুণ পরিণামের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। বনি ইসরাইল জাতি একসময় শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর কাছে প্রেরিত কিতাব কোরআনে কারিমের আগমন অপেক্ষায় উদ্গ্রীব ছিল। তারা পরস্পরে এ ব্যাপারে বলাবলিও করত। প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার জন্য তারা শক্তি-সমাবেশের অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করার জন্য তারা শেষ নবীর প্রতীক্ষা করত। কিন্তু তারা হতাশ হলো যখন দেখল যে শেষ নবীর জন্ম বনি ইসরাইলের মধ্যে হয়নি, বরং হয়েছে কোরাইশ বংশে। তাদের কিতাব তাওরাত যদিও নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং আল্লাহ প্রেরিত গ্রন্থ কোরআন মাজিদ সত্যায়িত করেছে, তবুও তারা তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা বলল, তারা শুধু বনি ইসরাইলের মধ্যে আল্লাহ যাদের নবী বানিয়ে পাঠান এবং যে কিতাব পাঠান তা-ই মানতে বাধ্য, এর বাইরের কিছু তারা মানতে রাজি নয়। বনি ইসরাইলরা এমন গোঁড়ামি ও আত্মঅহমিকার বশবর্তী।
তাদের এই মনোভাবের জবাবে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আল্লাহ যাঁকে পছন্দ করেন তাঁকেই নবুওয়তের সৌভাগ্য দান করেন। বনি ইসরাইলরা যে বিশ্বাস করে শুধু তাদের বংশেই নবীর জন্ম হবে, তা ভ্রান্ত। এই ভ্রান্ত ধারণার ভেতর দিয়েই তারা ক্রোধের ওপর ক্রোধের সৌধ নির্মাণ করেছে। বনি ইসরাইল জাতির এই আত্মঅহমিকা ও সাম্প্রদায়িক গোঁড়ামির জবাবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বলতে শিখিয়ে দিচ্ছেন যে তারা তাদের বংশের বহু নবীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল, কেন তারা এমন অন্যায় করেছিল? তা তাদের জিজ্ঞেস করুন। আসলে বনি ইসরাইল শুধু তাদের সাম্প্রদায়িক স্বার্থের ব্যাপারে সচেতন। এর বিরুদ্ধে ভেতর থেকে বা বাইরে থেকে যেই কথা বলুক, তারা তার বিরুদ্ধেই চলে যায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
৯১. ওয়া ইযা-কিলা লাহুম আ-মিনু-বিমা-আনযালাল্লাহু কালু-নু'মিনু বিমা-উনযিলা আ'লাইনা- ওয়াইয়াকফুরু-না বিমা-ওয়ারা-আহু; ওয়াহুয়াল হাক্কু মুছাদ্দিকালি্লমা-মা'আহুম; কুল ফালিমা তাকতুলু-না আম্বিয়া-আল্লাহি মিন কাবলু ইন কুনতুম মু'মিনিন। (সুরা বাকারা, আয়াত ৮৯-৯১)
অনুবাদ : ৮৯. যখনই তাদের কাছে আল্লাহর কাছ থেকে কিতাব (কোরআন মাজিদ) নাজিল হলো, যা তাদের কিতাবগুলো অর্থাৎ তাওরাত-জবুরের সত্যতা স্বীকার করে; এর আগে তারা নিজেরাই অন্য কাফেরদের ওপর বিজয়ী হওয়ার জন্য [এ কোরআন ও মুহাম্মদ (সা.)-এর আগমন] কামনা করেছিল। কিন্তু আজ যখন তা তাদের কাছে এল এবং তা তারা চিনতেও পারল তখন তারা মানতে অস্বীকার করল। যারা আল্লাহর কিতাব অস্বীকার করে, তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ নাজিল হোক।
৯০. জঘন্য তাদের অবস্থান, যার বিনিময়ে তারা নিজেদের বিক্রয় করে দিয়েছে, শুধু গোঁড়ামির বশবর্তী হয়েই তারা আল্লাহর নাজিল করা বিধান অস্বীকার করছে। (তাদের আকাঙ্ক্ষা মতো নয় বরং) আল্লাহর যাঁকে চান, তাঁকেই নবুওয়তের সৌভাগ্য দান করেন। তারা ক্রোধের ওপর ক্রোধে আক্রান্ত হয়; কাফেরদের জন্য অপমানজনক শাস্তি রয়েছে।
৯১. তাদের যখন বলা হয় আল্লাহ যা নাজিল করেছেন, তার ওপর ইমান আনো। তারা বলে, আমরা তো শুধু সেসব কিছুর ওপরই ইমান আনি, আমাদের অর্থাৎ বনি ইসরাইল জাতির ওপর নাজিল হয়; যা এর বাইরে, তা তারা অস্বীকার করে। অথচ তা সত্য, তাদের কিতাবেও তা সত্য বলে স্বীকার করা হয়েছে। আপনি বলুন হে নবী (সা.)! তোমরা যদি বিশ্বাসী বা মু'মিন হও, তবে আল্লাহর নবীদের কেন এর আগে হত্যা করেছিলে?
ব্যাখ্যা : এখানে বনি ইসরাইল সম্প্রদায়ের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করার মূল কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং সেই পরিপ্রেক্ষিতে তার প্রতি করুণ পরিণামের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। বনি ইসরাইল জাতি একসময় শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর কাছে প্রেরিত কিতাব কোরআনে কারিমের আগমন অপেক্ষায় উদ্গ্রীব ছিল। তারা পরস্পরে এ ব্যাপারে বলাবলিও করত। প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার জন্য তারা শক্তি-সমাবেশের অবলম্বন হিসেবে গ্রহণ করার জন্য তারা শেষ নবীর প্রতীক্ষা করত। কিন্তু তারা হতাশ হলো যখন দেখল যে শেষ নবীর জন্ম বনি ইসরাইলের মধ্যে হয়নি, বরং হয়েছে কোরাইশ বংশে। তাদের কিতাব তাওরাত যদিও নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এবং আল্লাহ প্রেরিত গ্রন্থ কোরআন মাজিদ সত্যায়িত করেছে, তবুও তারা তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা বলল, তারা শুধু বনি ইসরাইলের মধ্যে আল্লাহ যাদের নবী বানিয়ে পাঠান এবং যে কিতাব পাঠান তা-ই মানতে বাধ্য, এর বাইরের কিছু তারা মানতে রাজি নয়। বনি ইসরাইলরা এমন গোঁড়ামি ও আত্মঅহমিকার বশবর্তী।
তাদের এই মনোভাবের জবাবে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আল্লাহ যাঁকে পছন্দ করেন তাঁকেই নবুওয়তের সৌভাগ্য দান করেন। বনি ইসরাইলরা যে বিশ্বাস করে শুধু তাদের বংশেই নবীর জন্ম হবে, তা ভ্রান্ত। এই ভ্রান্ত ধারণার ভেতর দিয়েই তারা ক্রোধের ওপর ক্রোধের সৌধ নির্মাণ করেছে। বনি ইসরাইল জাতির এই আত্মঅহমিকা ও সাম্প্রদায়িক গোঁড়ামির জবাবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে বলতে শিখিয়ে দিচ্ছেন যে তারা তাদের বংশের বহু নবীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করেছিল, কেন তারা এমন অন্যায় করেছিল? তা তাদের জিজ্ঞেস করুন। আসলে বনি ইসরাইল শুধু তাদের সাম্প্রদায়িক স্বার্থের ব্যাপারে সচেতন। এর বিরুদ্ধে ভেতর থেকে বা বাইরে থেকে যেই কথা বলুক, তারা তার বিরুদ্ধেই চলে যায়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments