সোভিয়েত বাহিনীর গণহত্যার কথা গোপন রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাশিয়ান বাহিনীর হাতে পোল্যান্ডের বাহিনীর ২২ হাজারের বেশি সদস্যের গণহত্যার ঘটনা গোপন রাখতে রাশিয়াকে সাহায্য করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি প্রকাশিত কিছু দলিলের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি এ তথ্য জানিয়েছে। তারা জানায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে মিত্রকে না চটানোর যুক্তিতেই যুক্তরাষ্ট্র গণহত্যার ঘটনাটি চেপে
রেখেছিল। তবে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভ এ-সংক্রান্ত দলিলপত্র জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভ স্পর্শকাতর তথ্যসংবলিত প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার দলিলপত্র অনলাইনে প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্টালিনের নির্দেশে সোভিয়েত বাহিনী ২২ হাজারের বেশি পোলিশকে হত্যা করে। রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে স্মোলেনস্ক শহরের কাতিন বনসহ অন্যান্য স্থানে তাদের হত্যা করা হয়। ১৯৪৩ সালে আমেরিকান একদল যুদ্ধবন্দি সাংকেতিক বার্তায় ওয়াশিংটনকে এই গণহত্যা সম্পর্কে জানায়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, নাৎসি সেনারা আমেরিকান ও ব্রিটিশ যুদ্ধবন্দিদের জোর করে কাতিন বনে নিয়ে যায়। যুদ্ধবন্দিদের একটি গণকবরে পোলিশ মৃতদেহগুলো দেখতে বাধ্য করা হয়। নাৎসি বাহিনীই এই গণহত্যা চালিয়েছে বলে প্রথমে ধরে নেয় যুদ্ধবন্দিরা। তবে পরে তাদের ভুল ভাঙে।
কাতিন বনে গণকবর প্রত্যক্ষকারী মার্কিন যুদ্ধবন্দি ক্যাপ্টেন ডোনাল্ড বি স্টুয়ার্ট ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল জন এইচ ভ্যান ভি্লয়েট জুনিয়র ১৯৫০ সালে সাংকেতিক বার্তা পাঠানোর তথ্য নিশ্চিত করেন। তাদের তথ্যানুযায়ী, কাতিন বনের গণকবরে থাকা মৃতদেহগুলোর অবস্থা দেখে যুদ্ধবন্দিরা বুঝতে পারেন মানুষগুলো যুদ্ধের শুরুর দিকে নিহত হয়েছিল। মৃতদেহগুলোর আশপাশ থেকে যেসব চিঠি, ডায়েরি, পরিচয়পত্র, খবরের কাগজ ও অন্যান্য বস্তু উদ্ধার করা হয়েছিল এর কোনোটিই ১৯৪০ সালের বসন্তের পরের তারিখের ছিল না। অথচ ১৯৪১ সাল পর্যন্ত স্মোলেনস্ক এলাকাটি সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণে ছিল। গণহত্যার অনেক পরে জার্মান বাহিনী এলাকাটি দখল করে নেয়।
নিহতদের প্রায় প্রত্যেককেই পেছন থেকে গুলি করে মারা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য পোলিশ সামরিক ও বুদ্ধিজীবী এলিট একটি গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে সোভিয়েত গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড চালায়। নিহতদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা সামরিক বাহিনীতে ঢোকার আগে চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুকে পোলিশ জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বিবেচনা করা হয়।
কাতিন গণহত্যাবিষয়ক গবেষক অ্যালেন পল জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্ট গণহত্যার বিষয়ে স্টালিনকে প্রশ্ন করতে চাননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রতিপক্ষ জার্মান ও জাপানি বাহিনীকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ওয়াশিংটনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। ১৯৫১-৫২ সালে মার্কিন কংগ্রেস কাতিন হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত চালায়। কিন্তু হত্যাকাণ্ডসংক্রান্ত সব তথ্য তদন্তের দৃষ্টিগোচরে আনা হয়নি। সে সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবে তথ্য গোপন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন অ্যালেন। প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে কাতিন হত্যাকাণ্ডসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন এবং সেখানেও সোভিয়েত বাহিনীকেই দায়ী করা হয়েছিল বলে নতুন দলিলগুলোতে জানানো হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এপি।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভ স্পর্শকাতর তথ্যসংবলিত প্রায় এক হাজার পৃষ্ঠার দলিলপত্র অনলাইনে প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে প্রেসিডেন্ট জোসেফ স্টালিনের নির্দেশে সোভিয়েত বাহিনী ২২ হাজারের বেশি পোলিশকে হত্যা করে। রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে স্মোলেনস্ক শহরের কাতিন বনসহ অন্যান্য স্থানে তাদের হত্যা করা হয়। ১৯৪৩ সালে আমেরিকান একদল যুদ্ধবন্দি সাংকেতিক বার্তায় ওয়াশিংটনকে এই গণহত্যা সম্পর্কে জানায়। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, নাৎসি সেনারা আমেরিকান ও ব্রিটিশ যুদ্ধবন্দিদের জোর করে কাতিন বনে নিয়ে যায়। যুদ্ধবন্দিদের একটি গণকবরে পোলিশ মৃতদেহগুলো দেখতে বাধ্য করা হয়। নাৎসি বাহিনীই এই গণহত্যা চালিয়েছে বলে প্রথমে ধরে নেয় যুদ্ধবন্দিরা। তবে পরে তাদের ভুল ভাঙে।
কাতিন বনে গণকবর প্রত্যক্ষকারী মার্কিন যুদ্ধবন্দি ক্যাপ্টেন ডোনাল্ড বি স্টুয়ার্ট ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল জন এইচ ভ্যান ভি্লয়েট জুনিয়র ১৯৫০ সালে সাংকেতিক বার্তা পাঠানোর তথ্য নিশ্চিত করেন। তাদের তথ্যানুযায়ী, কাতিন বনের গণকবরে থাকা মৃতদেহগুলোর অবস্থা দেখে যুদ্ধবন্দিরা বুঝতে পারেন মানুষগুলো যুদ্ধের শুরুর দিকে নিহত হয়েছিল। মৃতদেহগুলোর আশপাশ থেকে যেসব চিঠি, ডায়েরি, পরিচয়পত্র, খবরের কাগজ ও অন্যান্য বস্তু উদ্ধার করা হয়েছিল এর কোনোটিই ১৯৪০ সালের বসন্তের পরের তারিখের ছিল না। অথচ ১৯৪১ সাল পর্যন্ত স্মোলেনস্ক এলাকাটি সোভিয়েত নিয়ন্ত্রণে ছিল। গণহত্যার অনেক পরে জার্মান বাহিনী এলাকাটি দখল করে নেয়।
নিহতদের প্রায় প্রত্যেককেই পেছন থেকে গুলি করে মারা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য পোলিশ সামরিক ও বুদ্ধিজীবী এলিট একটি গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে সোভিয়েত গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা এই হত্যাকাণ্ড চালায়। নিহতদের মধ্যে এমন অনেকেই ছিলেন যাঁরা সামরিক বাহিনীতে ঢোকার আগে চিকিৎসক, আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশায় ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুকে পোলিশ জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বিবেচনা করা হয়।
কাতিন গণহত্যাবিষয়ক গবেষক অ্যালেন পল জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডেলানো রুজভেল্ট গণহত্যার বিষয়ে স্টালিনকে প্রশ্ন করতে চাননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রতিপক্ষ জার্মান ও জাপানি বাহিনীকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে রাশিয়ার সঙ্গে মিত্রতা অক্ষুণ্ন রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। যদিও নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড ওয়াশিংটনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্তম্ভিত করে দিয়েছিল। ১৯৫১-৫২ সালে মার্কিন কংগ্রেস কাতিন হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত চালায়। কিন্তু হত্যাকাণ্ডসংক্রান্ত সব তথ্য তদন্তের দৃষ্টিগোচরে আনা হয়নি। সে সময় উদ্দেশ্যমূলকভাবে তথ্য গোপন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন অ্যালেন। প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকে কাতিন হত্যাকাণ্ডসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন এবং সেখানেও সোভিয়েত বাহিনীকেই দায়ী করা হয়েছিল বলে নতুন দলিলগুলোতে জানানো হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এপি।
No comments