যোগ্যতার প্রমাণ দিতে বিশ্বজিৎকে খুন করেছি- শাকিল, শাওন ও নাহিদের জবানবন্দি
বিশ্বজিৎ হত্যার পর ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের সহায়তায় দেশ ছাড়ার চেষ্টা করেছিলাম। কেবল আমরা তিন জনই নয় আরও কমপক্ষে ১৫ জন ছিল আমাদের সঙ্গে। ছাত্রলীগের ভাল পদ পেতে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য বেপরোয়া ছিলাম আমরা।
সে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে বিশ্বজিৎকে খুন করেছি। বিশ্বজিৎকে খুনের পরও নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।
আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে এমনভাবেই স্বীকারোক্তি দিয়েছে ৩ খুনি। স্বীকারোক্তিতে তারা বলে, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে আমরা নিজেরা সরাসরি অংশ নিয়েছি। অন্যদেরও অংশ নিতে দেখেছি। হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগের হাইকমান্ডের সহায়তায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। দরজি দোকানি বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় রিমান্ড শেষ হওয়া ৩ আসামি পৃথকভাবে গোয়েন্দা পুলিশ এবং আদালতকে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা উল্লেখ করেছে। গতকাল মহানগর মুখ্য হাকিমের আদালতে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন তারা হলো- ছাত্রলীগ কর্মী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ছাত্র রফিকুল ইসলাম শাকিল, জিএম রাশেদুজ্জামান শাওন ও মাহফুজুর রহমান নাহিদ। ৮ দিনের রিমান্ডে তারা গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, ছাত্রলীগের সামনের কমিটিতে ভাল পদ নেয়ার প্রত্যাশা ছিল তাদের। এ কারণে তাদের মধ্যে তাগিদ ছিল কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নিজেদের পারফরম্যান্স শো করার। এ ক্ষেত্রে হরতালকেই তারা বড় অস্ত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিল। তারা জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ক্ষমতাধর নেতাদের সঙ্গে তাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। ওই নেতারা তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সে অনুযায়ীই তারা কাজ করছিল। তারা বলেছে, ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতারা শাকিলকেই বেশি শেল্টার দিচ্ছিল। প্রত্যেকেই ভারত যাওয়ার চেষ্টা করছিল। শাকিল যে রাতে গ্রেপ্তার হয় সে রাতেই সে বরিশালের বেতাগী দিয়ে নৌপথে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। আদালতে জবানবন্দি দেয়া প্রত্যেকেই নিজেদের ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে বলেছে, আবেগপ্রবণ হয়েই বিশ্বজিতের ওপর হামলে পড়েছিলাম। হাইলাইটে আসতে এ ধরনের কাজ করেছি। বুঝতে পারিনি, বিশ্বজিৎ মারা যাবে। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে শাকিল বলেছে, জীবন বাঁচাতে বিশ্বজিৎ আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। ভিক্টোরিয়া পার্কের পাশে দোতলার একটি দোকানে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছিল। আমি চাপাতি হাতে নিয়ে দ্রুত দোতলায় উঠে তাকে কোপাতে থাকি। শাওন বলেছে, আমি রড দিয়ে পিটিয়েছি বিশ্বজিৎকে। নাহিদ তার স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করেছে, লাঠি দিয়ে আঘাত করে আমি বিশ্বজিতের মৃত্যু নিশ্চিত করেছি।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, জবানবন্দি আদায় করতে ৩ আসামিকে রোববার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় নিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় মহানগর হাকিম এরফান উল্লাহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বলেন, কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, জড়িতরা কিভাবে বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জবানবন্দি দিয়েছে আসামিরা। আদালতের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমানও নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় আসামিদের ৮ দিন করে রিমান্ডে নেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রিমান্ড শেষ হওয়ায় আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম জবানবন্দি নেয়ার জন্য আবেদন করেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ই ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে দরজি দোকানি বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। ওইদিনই সূত্রাপুর থানায় ২৫ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন থানার এসআই জালাল আহমেদ। একই থানার এসআই মাহবুবুল আলম মামলাটি তদন্ত করছেন। ১৩ই ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি মামলা করেন। আদালতে করা মামলায় ১০ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলো মাহফুজুর রহমান নাহিদ, রফিকুল ইসলাম শাকিল, এমদাদুল হক, ওবায়দুল কাদের, মীর মোহাম্মদ নুরে আলম লিমন, ইউনূছ, তাহসিন, জনি, শিপলু ও কিবরিয়া। এছাড়া মামলায় আরও অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়। আসামিরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কবি নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র। আদালতে মামলা দায়েরের পর ডিবি পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। ১২ই ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ হত্যায় জড়িত রফিকুল ইসলাম শাকিল, মীর মোহাম্মদ নুরে আলম লিমন ও ওবায়দুল হককে স্থায়ী বহিষ্কার এবং মাহফুজুর রহমান নাহিদ ও এমদাদুল হকের সনদ বাতিল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২১শে ডিসেম্বর কাইয়ুম মিয়া টিপু, রাজন তালুকদার, সাইফুল ইসলাম এবং জি এম রাশেদুজ্জামান শাওনকেও বহিষ্কার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম জানান, রিমান্ডে নেয়া ৬ আসামির মধ্যে ৫ জনের রিমান্ডের মেয়াদ শনিবার শেষ হয়। ৮ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার পরও কিবরিয়া এবং কাইয়ুম স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দি না দেয়ায় গতকাল আবারও ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত তাদের আরও ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। অপর আসামি সাইফুলে রিমান্ডের মেয়াদ আরও ২দিন বাকি আছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎ হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও প্রায় ১৫ জনকে তারা শনাক্ত করতে পেরেছে। তারাও একই সংগঠনের। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার সম্ভব বলে তারা জানান।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ছানোয়ার হোসেন মানবজমিনকে জানিয়েছেন, জবানবন্দি আদায় করতে ৩ আসামিকে রোববার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। প্রায় ৩ ঘণ্টা সময় নিয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় মহানগর হাকিম এরফান উল্লাহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বলেন, কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, জড়িতরা কিভাবে বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জবানবন্দি দিয়েছে আসামিরা। আদালতের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমানও নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় আসামিদের ৮ দিন করে রিমান্ডে নেয় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রিমান্ড শেষ হওয়ায় আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম জবানবন্দি নেয়ার জন্য আবেদন করেন।
উল্লেখ্য, গত ৯ই ডিসেম্বর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে দরজি দোকানি বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। ওইদিনই সূত্রাপুর থানায় ২৫ জন অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন থানার এসআই জালাল আহমেদ। একই থানার এসআই মাহবুবুল আলম মামলাটি তদন্ত করছেন। ১৩ই ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী ঢাকার সিএমএম আদালতে আরেকটি মামলা করেন। আদালতে করা মামলায় ১০ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলো মাহফুজুর রহমান নাহিদ, রফিকুল ইসলাম শাকিল, এমদাদুল হক, ওবায়দুল কাদের, মীর মোহাম্মদ নুরে আলম লিমন, ইউনূছ, তাহসিন, জনি, শিপলু ও কিবরিয়া। এছাড়া মামলায় আরও অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হয়। আসামিরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কবি নজরুল ইসলাম কলেজের ছাত্র। আদালতে মামলা দায়েরের পর ডিবি পুলিশ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। ১২ই ডিসেম্বর বিশ্বজিৎ হত্যায় জড়িত রফিকুল ইসলাম শাকিল, মীর মোহাম্মদ নুরে আলম লিমন ও ওবায়দুল হককে স্থায়ী বহিষ্কার এবং মাহফুজুর রহমান নাহিদ ও এমদাদুল হকের সনদ বাতিল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২১শে ডিসেম্বর কাইয়ুম মিয়া টিপু, রাজন তালুকদার, সাইফুল ইসলাম এবং জি এম রাশেদুজ্জামান শাওনকেও বহিষ্কার করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক তাজুল ইসলাম জানান, রিমান্ডে নেয়া ৬ আসামির মধ্যে ৫ জনের রিমান্ডের মেয়াদ শনিবার শেষ হয়। ৮ দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ার পরও কিবরিয়া এবং কাইয়ুম স্বীকারোক্তিমূলক জবানন্দি না দেয়ায় গতকাল আবারও ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত তাদের আরও ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। অপর আসামি সাইফুলে রিমান্ডের মেয়াদ আরও ২দিন বাকি আছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্বজিৎ হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও প্রায় ১৫ জনকে তারা শনাক্ত করতে পেরেছে। তারাও একই সংগঠনের। অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার সম্ভব বলে তারা জানান।
No comments