আর্থিক খাতে সাফল্য বেশি, ম্লান করছে মাত্র কয়েকটি ঘটনা- আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা প্রয়োজন : রেহমান সোবহান by শাহ আলম খান
মহাজোট সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরের ঘুষ-দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনোপার্জিত আয়, ঋণখেলাপী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালো টাকা ও পেশীশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতি দফতরে গণঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিক সনদ উপস্থাপন করা হবে। একইভাবে সরকারী কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতির পথও ব্যাপকভাবে বন্ধ করা হবে।
নির্বাচনী ইশতেহারে এমন দীপ্ত কঠোর অঙ্গীকারের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় এসে ইতোমধ্যেই ৪ বছর পার করে দিয়েছে বর্তমান মহাজোট সরকার। এই সময়ে দিন বদলের সনদ রূপকল্প (ভিশন) ২০২১ অনুযায়ী অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিটি স্তরেই অভাবনীয় বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।
এসব উন্নয়নের খতিয়ান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্বাধীনতা পরবর্তী যে কোন সরকারের তুলনায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বর্তমান সরকারের ভাণ্ডারে সাফল্যের ঝুড়ি সবচেয়ে বেশি। এত কিছুর পরও সরকারের সকল ভাল কাজকেই ম্লান করে দিচ্ছে আর্থিক খাতে সৃষ্ট দু’একটি মন্দ ঘটনা সাধারণের কাছে সর্বগ্রাসীরূপে আবির্ভূত হয়ে ওঠায়। যার দায় সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরের ঘুষ, দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনোপার্জিত আয়, ঋণখেলাপী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালোটাকা ও পেশীশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারার ব্যর্থতার কারণে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন প্রশাসন ও আর্থিক খাতের সর্বস্তরে সুশাসনের চরম অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। আর এর কারণেই হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেস্টিনির প্রতারণা এবং পুঁজিবাজার ধসের ন্যক্কারজনক ঘটনায় কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাটের মতো ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, একই কারণে পদ্মা সেতু ইস্যুতেও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীর্তির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে জোরেশোরেই। যার বলি হতে হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের ভিত্তি বলে স্বীকৃত পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রলম্বিত করার মাধ্যমে।
তবে আর্থিক খাতে সৃষ্ট এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে সরকারেরর অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টার কমতি নেই। তবে শতভাগ দুর্নীতি প্রতিরোধ কিংবা সুশাসন নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার মানসিকতার পরিবর্তন, সামাজিক আন্দোলন ও সর্বোতভাবে সরকারকে সহযোগিতা করা। এটি জোরালো না হওয়ায় দেশে আইন থাকলেও বাস্তবায়নে বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। নিরীক্ষা ব্যবস্থায়ও ফাঁক রয়ে গেছে। এসব কারণেই এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে।
ওদিকে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাব ও সরকারী কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, বেসরকারী খাতের ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যাংকিং খাতকে এর মূল্য দিতে হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বর্তমান সরকার এ খাতটির সংস্কারে অনেক সাফল্য দেখালেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ কাঠামো পদ্ধতির ব্যাপক ত্রুটি দূর করতে পারেনি। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে পুরোপুরি সমন্বয় সাধনেও ব্যর্থ হয়েছে। এখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কারণে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে হলমার্কের জালিয়াতি, শেয়ারবাজার ধস ও ডেস্টিনির বড় ধরনের প্রতারণার মতো ঘটনা ঘটে গেছে। এ বিষয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
একই কথা বলেছেন এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি মোঃ নুরুল আমিন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। অটোমেশন, ব্যবস্থাপনা ও নীতি প্রণয়নেও পিছিয়ে নেই। বেড়েছে তারল্যও। যে কারণে বেসরকারী খাতে ৭০ শতাংশ অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। তবে সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই কর্পোরেট গবর্নেন্সের চরম অভাব রয়েছে। এটি দূর করতে না পারলে দৃশ্যত উন্নয়ন থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব।
এ ব্যাপারে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান অবহিত করে বলেন, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। দ্রুত এর প্রতিকার করতে হবে। সৃষ্ট ঘটনারও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান করতে হবে। যাতে ব্যাংকও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আবার অপরাধীরাও যাতে শাস্তি পায়।
আর সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নীতিগত সংস্কারের পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সমুদয় কর্মকা- দ্রুতভিত্তিতে অটোমেশনের ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন ছাড়া সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে না।
নির্বাচনী ইশতেহারে এমন দীপ্ত কঠোর অঙ্গীকারের পর রাষ্ট্র পরিচালনায় এসে ইতোমধ্যেই ৪ বছর পার করে দিয়েছে বর্তমান মহাজোট সরকার। এই সময়ে দিন বদলের সনদ রূপকল্প (ভিশন) ২০২১ অনুযায়ী অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিটি স্তরেই অভাবনীয় বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়েছে।
এসব উন্নয়নের খতিয়ান পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্বাধীনতা পরবর্তী যে কোন সরকারের তুলনায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বর্তমান সরকারের ভাণ্ডারে সাফল্যের ঝুড়ি সবচেয়ে বেশি। এত কিছুর পরও সরকারের সকল ভাল কাজকেই ম্লান করে দিচ্ছে আর্থিক খাতে সৃষ্ট দু’একটি মন্দ ঘটনা সাধারণের কাছে সর্বগ্রাসীরূপে আবির্ভূত হয়ে ওঠায়। যার দায় সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরের ঘুষ, দুর্নীতি উচ্ছেদ, অনোপার্জিত আয়, ঋণখেলাপী, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, কালোটাকা ও পেশীশক্তি প্রতিরোধ ও নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারার ব্যর্থতার কারণে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন প্রশাসন ও আর্থিক খাতের সর্বস্তরে সুশাসনের চরম অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। আর এর কারণেই হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেস্টিনির প্রতারণা এবং পুঁজিবাজার ধসের ন্যক্কারজনক ঘটনায় কয়েক হাজার কোটি টাকা লোপাটের মতো ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, একই কারণে পদ্মা সেতু ইস্যুতেও সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীর্তির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠে জোরেশোরেই। যার বলি হতে হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের ভিত্তি বলে স্বীকৃত পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ প্রলম্বিত করার মাধ্যমে।
তবে আর্থিক খাতে সৃষ্ট এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে সরকারেরর অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টার কমতি নেই। তবে শতভাগ দুর্নীতি প্রতিরোধ কিংবা সুশাসন নিশ্চিত করা সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার মানসিকতার পরিবর্তন, সামাজিক আন্দোলন ও সর্বোতভাবে সরকারকে সহযোগিতা করা। এটি জোরালো না হওয়ায় দেশে আইন থাকলেও বাস্তবায়নে বড় ঘাটতি রয়ে গেছে। নিরীক্ষা ব্যবস্থায়ও ফাঁক রয়ে গেছে। এসব কারণেই এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে।
ওদিকে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাব ও সরকারী কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) মতে, বেসরকারী খাতের ৭০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণকারী ব্যাংকিং খাতকে এর মূল্য দিতে হয়েছে সবচেয়ে বেশি। বর্তমান সরকার এ খাতটির সংস্কারে অনেক সাফল্য দেখালেও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ কাঠামো পদ্ধতির ব্যাপক ত্রুটি দূর করতে পারেনি। এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে পুরোপুরি সমন্বয় সাধনেও ব্যর্থ হয়েছে। এখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়েছে। এ কারণে ব্যাংক ও আর্থিক খাতে হলমার্কের জালিয়াতি, শেয়ারবাজার ধস ও ডেস্টিনির বড় ধরনের প্রতারণার মতো ঘটনা ঘটে গেছে। এ বিষয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
একই কথা বলেছেন এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি মোঃ নুরুল আমিন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। অটোমেশন, ব্যবস্থাপনা ও নীতি প্রণয়নেও পিছিয়ে নেই। বেড়েছে তারল্যও। যে কারণে বেসরকারী খাতে ৭০ শতাংশ অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। তবে সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানেই কর্পোরেট গবর্নেন্সের চরম অভাব রয়েছে। এটি দূর করতে না পারলে দৃশ্যত উন্নয়ন থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব।
এ ব্যাপারে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান অবহিত করে বলেন, আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা না থাকলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। দ্রুত এর প্রতিকার করতে হবে। সৃষ্ট ঘটনারও বুদ্ধিবৃত্তিক সমাধান করতে হবে। যাতে ব্যাংকও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, আবার অপরাধীরাও যাতে শাস্তি পায়।
আর সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও নীতিগত সংস্কারের পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক খাতের সমুদয় কর্মকা- দ্রুতভিত্তিতে অটোমেশনের ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন ছাড়া সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে না।
No comments