শনির আখড়ার দায় কার? by মোশাররফ হোসেন

রাজধানী ঢাকার একেবারেই অদূরে শনির আখড়া-গোবিন্দপুর বাজার। দু'পাশে ঘরবাড়ি। মাঝখানে বাজার। এর দখলদারিত্ব কার, কার হুকুমে এখানে দোকানিরা বসে, তা বুঝে ওঠা কঠিন। তবে যখন যে দলের সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন তাদেরই কোনো প্রতিনিধি এখানকার দায়দায়িত্ব নিয়ে নেয়।


খালেদা-নিজামী জোট সরকারের সময় স্থানীয় এমপি পদাধিকারবলে এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান অথবা সভাপতি বনে গেলেন। সে অনুযায়ী তিনি বনে যান বাজার, খাল-বিলেরও মালিক। বাজারের প্রতিটি দোকান থেকে টাকা তোলা হয়ে গেল স্বাভাবিক নিয়মের অংশ।
সাবেক ডেমরা রোডের মৃধাবাড়ী থেকে সোজা দক্ষিণে শনির আখড়া ব্রিজ পর্যন্ত যে ড্রেনটি আছে তা ছিল সরকারি খাল। দু'পাশ থেকে চাপতে চাপতে সে খাল এখন ড্রেনে পরিণত হয়েছে। দু'পাশের দালানকোঠার মাঝে খাল বা ড্রেনের বুক ঘেঁষে রয়েছে সারি সারি আলগা দোকান। এর সামনে আবার রয়েছে কাঁচা তরকারির দোকান। এই ত্রিমুখী-চতুর্মুখী দোকানের জন্য জনচলাচল এবং যান চলাচলের অসুবিধা হয় প্রতিনিয়ত। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে নম্বরবিহীন অসংখ্য রিকশা। বাজারের দুই পাশ উঁচু এবং মাঝখানে খালের মতো নিচু হওয়ায় বৃষ্টির পর মনে হয় ছোটখাটো কোনো হ্রদ। বর্ষা এলেই মানুষের কাছে শনির আখড়া বা গোবিন্দপুর বাজারটি এলাকাবাসীর দুঃখের সাগর হয়ে দেখা দেয়। এভাবেই চলছে বছরের পর বছর। এ বাজার এবং এখানকার জনদুর্ভোগ নিয়ে পত্রপত্রিকায় লেখাও হয়েছে। এমনকি টিভিতেও দেখানো হয়েছে এলাকাবাসীর বক্তব্য। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি।
মূল কথা হলো, ড্রেনের পাশ দিয়ে যে আলগা দোকানগুলো রয়েছে সেগুলো কার কথায় চলে সেটি বোঝার বা শোনার কায়দা নেই সরকার কিংবা জনগণের। জনগণের জানাশোনার বিষয় না থাকলেও দুর্ভোগ সহ্য করার বিষয়টি এখন গা-সওয়া হয়ে গেছে। প্রতিবছর বর্ষার শুরুতে হঠাৎ এক রাতের মধ্যেই সব দোকান ভাংচুর হয়ে যায়। ঝাড়া হয়ে যায় বাজার, বাতাস লাগে জনতার শরীরে। কিন্তু কী এক অদৃশ্য শক্তিবলে পরের রাতেই আবার শুরু হয় দোকান তোলার পালা। অর্থাৎ গঙ্গার জল যেখানে ছিল সেখানেই জমা হলো যেন। ভেসে গেল দুঃখী বাবুর আধাভাঙা হাঁড়িগুলো। এমনই অবস্থা এখানকার বাজার বা রাস্তাটির। জোট সরকারের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছিল এখানকার মানুষ। কিন্তু সে মুক্তি কতটুকু? সরকার আসে, সরকার যায়। শনির আখড়ার কর-খাজনা কে খায়? মাতব্বরিটা কার খাতায়_ এলাকাবাসী জানতে চায়।
হ শনির আখড়া, ঢাকা
 

No comments

Powered by Blogger.