আদর্শ ইউপি নির্বাচন-গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি জবরদস্তি রোধ করে
ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরনিলক্ষিয়া ইউনিয়নের আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী সাত প্রার্থীর একসঙ্গে খোলা মাঠে জনতার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনাটি আগ্রহোদ্দীপক। সমকালের লোকালয় পাতায় শুক্রবার প্রকাশিত এ সংবাদটি দেখে গণতন্ত্রমনস্ক যে কেউই দেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশান্বিত হবেন।
একই ধরনের আশা জাগানিয়া সংবাদ দেখা যায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর ইউনিয়নেও। সেখানকার চার চেয়ারম্যান প্রার্থী একমঞ্চে শপথ নিলেন নির্বাচনী আচরণবিধি ও ফল মেনে নেওয়ার। এভাবে কিছু ইউনিয়নে অন্তত অনিয়ম, জবরদস্তি, অর্থের ছড়াছড়ির পরিবর্তে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চর্চায় যেসব প্রার্থী এগিয়ে এসেছেন তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে অধিকাংশ এলাকাতে এখনও নির্বাচনে অর্থের ছড়াছড়ি, অনিয়ম ও জবরদস্তির সংবাদ দেখা যায়। তবে অতীতের তুলনায় হাঙ্গামা-হুজ্জত বেশ কম এটা স্বীকার করতেই হবে। এ জন্য অবশ্য নির্বাচন কমিশনের অবিরাম সচেতনতামূলক ও বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টা এবং ভোটার জনগণের রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধির মূল্যকে স্বীকার না করে উপায় নেই। কিন্তু তৃণমূলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাকে আরও বৃদ্ধি করতে হলে প্রতিটি স্থানীয় নির্বাচনই অবাধ ও মুক্ত পরিবেশে, নির্বাচনী আচরণবিধি হুবহু মেনে নিষ্পন্ন হওয়া উচিত। সরকার, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের গণতন্ত্রের বিকাশমুখী কর্মকাণ্ড এবং সুশাসনের অব্যাহত উপস্থিতির যোগফল হিসেবেই গড়ে উঠতে পারে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিই চূড়ান্তভাবে রোধ করতে পারে নির্বাচনী অনিয়ম। দেশের বিভিন্ন স্থানে আদর্শ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একই মঞ্চে নিয়ে এসে জনতার মুখোমুখি করার যে পদ্ধতি প্রয়োগ করা হচ্ছে তা ধীরে ধীরে গণতন্ত্রমনস্কতাকে বিস্তৃত করবে। এগুলো দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানই শুধু নয়, রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডসহ সর্বত্র গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসরণকে স্বাভাবিক নিয়মে পরিণত করার পথে সহায়ক হবে। আমরা যত দ্রুত অন্যের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ঊধর্ে্ব স্থান দিতে শিখব, তত দ্রুতই একটি গণতান্ত্রিক সমাজের গর্বিত অংশীদার হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।
No comments