যুদ্ধে শিশু সেনা নিয়োগ-কঙ্গোর যুদ্ধবাজ নেতা লুবাঙ্গার ১৪ বছরের জেল

যুদ্ধে শিশু সেনা নিয়োগের দায়ে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর যুদ্ধবাজ নেতা থমাস লুবাঙ্গার ১৪ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) তাঁকে এ সাজা দেন। এই প্রথম আইসিসি এ ধরনের কোনো রায় দিলেন। তবে লুবাঙ্গা তাঁর বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।


যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০০৬ সালে লুবাঙ্গাকে (৫১) আটক করা হয়। এরপর থেকেই তিনি আইসিসির কারাগারে আটক আছেন। গত মার্চে তাঁকে যুদ্ধাপরাধ, বিশেষ করে বিদ্রোহী বাহিনীতে শিশু সেনাদের অন্তর্ভুক্ত করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। গতকাল আদালত তাঁর সাজা ঘোষণা করলেন। তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত প্যানেলের অন্যতম বিচারক আদ্রিয়ান ফুলফোর্ড বলেন, 'সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আদালত লুবাঙ্গাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করছেন।' তিনি জানান, যেহেতু লুবাঙ্গা গত ছয় বছর কারাভোগ করেছেন এ জন্য তাঁকে আর আট বছর সাজা ভোগ করতে হবে।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে আদালত এক মাসের সময় দিয়েছেন। তবে লুবাঙ্গার ৩০ বছরের সাজা চেয়েছিলেন সাবেক প্রধান কেঁৗসুলি লুইস মরিনো ওকাম্পো।
বিচারক আদ্রিয়ান বলেন, '১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জোরপূর্বক যুদ্ধ করতে বাধ্য করা নিঃসন্দেহে গুরুতর অপরাধ। শিশুদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে বোঝা যায় অন্যদের চেয়ে তাদের বিশেষ সুরক্ষা প্রয়োজন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তিতেও এ কথা বলা হয়েছে।'
কঙ্গোর দ্বিতীয় গৃহযুদ্ধ শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। শেষ হয় ২০০৩ সালে। এ যুদ্ধে আফ্রিকার আটটি দেশ ও ২৫টি বিদ্রোহী গোষ্ঠী যুক্ত ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এ যুদ্ধকেই সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ যুদ্ধে কঙ্গোর ৬০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। যুদ্ধ চলাকালে ২০০২-০৩ পর্যন্ত কঙ্গোর ইতুরি এলাকার মেয়ে শিশুদের যৌনকাজে বাধ্য করা এবং ছেলে শিশুদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদ্রোহী বাহিনী 'প্যাট্রিয়টিক ফোর্স ফর দ্য লিবারেশন অব কঙ্গো'র হয়ে যুদ্ধ করতে বাধ্য করেন লুবাঙ্গা।
তবে ছেলে শিশুদের যুদ্ধে ব্যবহারের বিষয়টি প্রমাণ করা গেলেও মেয়ে শিশুদের অভিযোগের বিষয়টি প্রমাণ করতে পারেননি আইনজীবীরা। এ প্রসঙ্গে সাবেক প্রধান কেঁৗসুলি ওকাম্পোর কঠোর সমালোচনা করেছেন বিচারক আদ্রিয়ান।
উল্লেখ্য, একই ধরনের অভিযোগে কঙ্গোর মিলিশিয়া বাহিনীর নেতা জারমেইন কাতাঙ্গা ও ম্যাথিউ নুদজোলো চুই-এর বিচার চলছে। গৃহযুদ্ধের সময় এরা লুবাঙ্গার বিরুদ্ধে ছিলেন। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.