টিআরের গম আত্মসাৎ-দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে একশ' টন গম কালোবাজারে বিক্রি করে ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, সেখানকার মসজিদ ও মাদ্রাসার নামে যে ৩৭ প্রকল্প দেখিয়ে সরকারের কাছ থেকে গম বরাদ্দ নেওয়া হয়েছিল সেগুলোর মধ্যে ৩৫টির গম বিক্রি করে অর্থ পুরোপুরি আত্মসাৎ করা হয়েছে।
অস্তিত্ব রয়েছে এমন যেসব মাদ্রাসা ও মসজিদের নামে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছিল সেসব প্রতিষ্ঠান বরাদ্দের বিষয়ে অবগত নয়। কয়েকটি প্রকল্পে নির্দিষ্ট নামের মাদ্রাসা ও মসজিদের অস্তিত্বই নেই। রোববার সমকালের লোকালয় পাতায় ঝিনাইগাতীতে '৩৫ মসজিদ-মাদ্রাসার ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ' শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে। টিআরের গম নিয়ে দুর্নীতি নতুন নয়। কিন্তু ৩৭ প্রকল্পের ৩৫টিতেই গম বিক্রি করে দিয়ে অর্থ পুরোপুরি আত্মসাতের মতো ঘটনা কমই ঘটে। সাধারণত ধরে নেওয়া হয়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অর্থ কেউ আত্মসাৎ করতে যাবে না। কিন্তু এ ধারণাটি যে ভুল সেটা ঝিনাইগাতী উপজেলার মাদ্রাসা-মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত টাকা পুরোপুরি আত্মসাৎ করার ঘটনা দৃষ্টে অনুমান করা যায়। কারা কারা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত তাদের পরিচয়ও প্রশাসন পেয়ে গেছে। কালবিলম্ব না করে এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। শাস্তি হতে হবে দৃষ্টান্তমূলক। অভিযুক্তরা অবশ্য সুষ্ঠুভাবে গম বিতরণ হওয়ার দাবি করেছে। তাদের এসব দাবির যে কোনো ভিত্তি নেই তা তো যেসব মাদ্রাসা ও মসজিদের নামে গমগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাদের পরিচালকদের বক্তব্যেই স্পষ্ট। সই জাল করে প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে এবং বরাদ্দকৃত গম তোলা থেকে শুরু করে বিক্রি পর্যন্ত একই ধরনের জাল সই ব্যবহার করা হয়েছে। তাই অপরাধীদের বিরুদ্ধে টিআরের গম আত্মসাৎ ছাড়াও সই জাল করার অভিযোগও আনা উচিত।
No comments