যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকারোক্তি-বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ দেন পাকিস্তানি চিকিৎসক

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন, অ্যাবোটাবাদে ওসামা বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সিআইএকে সহায়তা করেছিলেন একজন পাকিস্তানি চিকিৎসক। ওই চিকিৎসকের সঙ্গে পাকিস্তান যে আচরণ করছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্যানেট্টা।


গত বছরের ২ মে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদের একটি কম্পাউন্ডে মার্কিন নৌবাহিনীর বিশেষ কমান্ডো বাহিনী সিলের অভিযানে নিহত হন আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেন। এ ঘটনার পর শাকিল আফ্রিদি নামের এক চিকিৎসককে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তান সরকার।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যানেট্টা সিবিএস টেলিভিশন চ্যানেলের জনপ্রিয় ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি আজ রোববার প্রচারিত হওয়ার কথা। সাক্ষাৎকারে প্যানেট্টা বলেন, বিশেষ ওই কম্পাউন্ডে বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ডিএনএ সংগ্রহ ও তা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সিআইএ গোয়েন্দাদের সহায়তা করতে একটি টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করেন ওই পাকিস্তানি চিকিৎসক।
প্যানেট্টা আরও বলেন, ‘পাকিস্তানিরা বিশেষ ওই ব্যক্তির (চিকিৎসক) সঙ্গে যে আচরণ করছে, তাতে আমি খুবই উদ্বিগ্ন...। ওই অভিযানে তাঁর দেওয়া তথ্য গোয়েন্দাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি সব সময়ই মনে করতাম যে ওই কম্পাউন্ডটির ভেতর কে আছে বা কী হচ্ছে, তা পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের কেউ না কেউ অবশ্যই জানতেন। ভুলে যাবেন না, কম্পাউন্ডটি ছিল ১৮ ফুট উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। এটা ছিল ওই এলাকার সবচেয়ে বড় কম্পাউন্ড।’ প্যানেট্টা বলেন, ‘আমাদের এমন আশঙ্কা ছিল যে যদি আমরা পাকিস্তানকে আমাদের অভিযানে সম্পৃক্ত করতাম, তবে তারা হয়তো বিন লাদেনকে পালানোর সুযোগ করে দিত। এ কারণেই অভিযান সম্পর্কে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের জানানো হয়নি।’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অ্যাবোটাবাদের বিশেষ ওই কম্পাউন্ডের ওপর দিয়ে একাধিক পাকিস্তানি সামরিক হেলিকপ্টার উড়ে গেছে। তবে তিনি স্বীকার করেন, বিন লাদেনের অবস্থান সম্পর্কে পাকিস্তান সরকার জানতই, এমন কোনো অকাট্য প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেই।
পাকিস্তান সরকারের দুজন কর্মকর্তার মতে, সরকার আগে থেকেই ভেবে রেখেছে, চিকিৎসক আফ্রিদির ব্যাপারে গণমাধ্যমের আগ্রহ কমে গেলে তাঁর বিষয়টি চুপিচুপি সমাধান করে নেওয়া হবে। সম্ভবত তাঁকে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেওয়া হবে। যেহেতু ওই চিকিৎসকের বিশ্বাসঘাতকতার বিষয়ে বর্তমানে তদন্ত চলছে, সেহেতু এ বিষয়ে খোলামেলা কিছু বলতে চাননি নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দুই কর্মকর্তা। এএফপি, এপি।

No comments

Powered by Blogger.